Purulia: এই নব্য `নীলে`র মধ্যে দিয়ে লাল মাটির দেশ কি ব্রিটিশযুগে ফিরছে? জানুন তাঁতঘরের আঁতের কথা...
Indigo Cultivation in Purulia: পুরুলিয়ার মাটি নীল চাষের জন্য অত্যন্ত ভালো। তাই যথেষ্ট ভালো মানের নীল উৎপাদিতও হচ্ছে পুরুলিয়ায়। সেই নীল রং তাঁতের কাপড়ে ব্যবহার করছেন তাঁতিরা। বাড়ছে সেই তাঁতের কাপড়ের চাহিদাও।
মনোরঞ্জন মিশ্র: একটা সময় ব্রিটিশ নীলকর সাহেবরা অতিরিক্ত লাভের আশায় বাংলার চাষিদের দিয়ে জোর করে নীল চাষ করাতেন। নীলকরদের অত্যাচার আর নিপীড়নের কারণে বাংলায় নীল বিদ্রোহ হয়েছিল। তারপর বাংলা থেকে নীল চাষ প্রায় বিলুপ্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু ইতিহাস বোধ হয় এভাবেই ফিরে আসে। শতাধিক বছর পরে জঙ্গলমহলের প্রান্তিক জেলা পুরুলিয়ায় ফের শুরু হল নীল চাষ।
কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরুলিয়ার মাটি নীল চাষের জন্য অত্যন্ত ভালো। তাই যথেষ্ট ভালো মানের নীল উৎপাদিত হচ্ছে পুরুলিয়ায়। সেই নীল রং তাঁতের কাপড়ে ব্যবহার করছেন তারা। বাড়ছে তাঁতের কাপড়ের চাহিদাও। আর এতে লাভের মুখ দেখছেন নীল চাষি থেকে তাঁতশিল্পীরা। পুরুলিয়ার আদিবাসী-অধ্যুষিত এলাকা টুইকা গ্রামে বিলুপ্তপ্রায় নীল চাষ শুরু করেছেন আদিবাসীরা।
কোনরকম রাসায়নিক ব্যবহার না করে সম্পূর্ণ অর্গানিক পদ্ধতিতে এই নীল চাষ করছেন আদিবাসীরা। সেই নীল রং তাঁরা ব্যবহার করছেন নিজেদের তৈরি তাঁতের কাপড়ে। জৈব পদ্ধতিতে প্রস্তুত এই প্রাকৃতিক নীল রঙ তাঁতের কাপড়ে ব্যবহার করায় বাজারে সেই কাপড়ের চাহিদাও বাড়ছে বিপুল। এতে রোজগারের নতুন দিশা দেখছেন স্থানীয় মানুষ। অনেকেই ভিন রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ ছেড়ে নিজেদের চাষের জমিতে শুরু করেছেন নীল চাষ। অন্যান্য চাষের ক্ষেত্রে একবার চাষ করলে ফসল একবারই হয়, কিন্তু নীল চাষের ক্ষেত্রে একবার চাষ করে তিন বার নীল উৎপাদন হয়। এর ফলে, অনেকে ধান, গম বা অন্যান্য চাষ ছেড়ে নীল চাষের উপর জোর দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: Bangladesh Protest: প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা ক্ষতির মুখে ট্রাক-শিল্প! থমকে সীমান্ত পণ্য পরিবহণ...
আর নীল উৎপাদন হওয়ায় তাঁত শিল্পও পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে পুরুলিয়ায়। প্রথমে তাঁতের কাপড়ের সুতোর রঙের জন্য পলাশ-শিমুলের পাতা বা কেমিক্যাল-মিশ্রিত রং ব্যবহার করা হত। এবার সেই তাঁতের কাপড়ে নিজেদের চাষ করা নীল রং-ই ব্যবহার করছেন তাঁত শিল্পীরা। জেলা ছাড়িয়ে ভিন জেলা বা ভিন রাজ্যে তাঁতের তৈরি কাপড়ের চাহিদাও বাড়ছে। রোজগারের নতুন দিশা দেখে খুশি নীল চাষি এবং তাঁত শিল্পীরা। তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরাও।