নিজস্ব প্রতিবেদন: ২০১১ সালে সিঙ্গুর নন্দীগ্রাম যদি তৃণমূল সরকার গঠনের পথ প্রশস্ত করে তাহলে বলতে হয় তত্কালীন সিপিএমের কফিনে শেষ পেরেকটি পুঁতেছিল জঙ্গলমহল। কার্যত নিঃশব্দে বিপ্লব ঘটিয়ে তৃণমূল জঙ্গলমহলে তাঁদের সংগঠনিক শক্তিকে বাড়িয়ে শক্ত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল তত্কালীন বাম সরকারকে। দশ বছর শাসকদল হিসেবে রাজ্যে ক্ষমতা চালানোর নেপথ্যে জঙ্গলমহলের ভূমিকা অনস্বীকার্য। সেই জঙ্গলমহলের একদা নায়ক ছত্রধর মাহাতো কারাবাস কাটিয়ে ফের সক্রিয়ে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। এবার সরাসরি তৃণমূলের রাজ্য কমিটিতে জায়গা করে নিলেন ছত্রধর মাহাতো। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের থেকে মুখ সরিয়ে নিয়েছিল জঙ্গলমহলের একাংশ মানুষ। মূলত ঝাড়গ্রাম এবং পুরুলিয়া দুটি লোকসভা কেন্দ্র তৃণমূলের হাতছাড়া হয়। কেন হাতছাড়া হয়েছে তা নিয়ে গত একবছরে অনেক চুলচেরা বিশ্লেষণ হলেও তৃণমূল সুপ্রিমো মনে করেছেন জঙ্গলমহলের ক্ষত এখনও সারেনি। তাই সেই ক্ষততে প্রলেপ দিয়ে ২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে দলীয় সংগঠনে বড়সড় রদবদল করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাতে যথেষ্ট গুরুত্ব পেল জঙ্গলমহল। সেই নমুনা পাওয়া সাংগঠনিক পদ বন্টনে। 


যেমন-
রাজ্য কমিটিতে- ছত্রধর মাহাতো , চূড়ামণি মাহাতো এবং সুকুমার হাঁসদা।
ঝাড়গ্রাম জেলার নতুন সভাপতি বিধায়ক দুলাল মুর্মু 
পুরুলিয়া জেলার তৃণমূলের নতুন সভাপতি গুরুপদ টুডু 


ছত্রধর মাহাতো । জঙ্গলমহলের একটা নাম। একটা আবেগ। ছত্রধর মাহাতোকে রাজ্য কমিটিকে এনে দলছুট কুর্মি সম্প্রদায়কে আবার নিজের দিকে টানার চেষ্টা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঝাড়গ্রামে প্রায় ৩৪ শতাংশ কুর্মি সম্প্রদায়ের মানুষ। পরিসংখ্যান বলছে এরা লোকসভা ভোটে তৃণমূলের থেকে মুখ সরিয়ে নিয়েছিল। দলীয় কোন্দলে ইতি টানতে রবীন টুডুর স্ত্রী বিরবাহা সোরেনকে  জেলা সভাপতির পদ সরিয়ে দেওয়া হল। সেই সঙ্গে দুলাল মুর্মুকে ঝাড়গ্রামের জেলা সভপতি করে আদিবাসীদের ভোটব্যাঙ্ককে আরও শক্ত করার চেষ্টা করা হল। কারণ রবীন টুডুর গ্রহনযোগ্যতা জঙ্গলমহলে দিনদিন কমছিল। 


আরও পড়ুন- তৃণমূলে ব্যাপক রদবদল, পর্যবেক্ষকদের বিলোপ, ২১ জনের কোর ও ৭ জনের স্টিয়ারিং কমিটি


সেইসঙ্গে দলের আভ্যন্তরীণ কলহ বেড়ে যাচ্ছিল বলে দলীয় সূত্রের খবর। সেই সমীকরণে ছত্রধর মাহাতোর জঙ্গলমহলের আবেগকে সামনে রেখে এক ছাতার আনার চেষ্টা উমা সোরেন, দুলাল মুর্মু-সহ জেলার সব নেতাদের। পাশাপাশি পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি শান্তিরাম মাহাতোকে সরিয়ে দেওয়া হল।  নতুন সভাপতি গুরুপদ টুডু। এই সিদ্ধান্তে পিছনে যে কারণ উঠে আসছে তা হল জেলার আভ্যন্তরীণ গন্ডগোল প্রতিরোধে ব্যর্থ। সাংগঠনিক কাজে সেইভাবে নজর ফেলতে পারেননি শান্তিরাম মাহাতো বলে সূত্রে খবর।