মমতার কাজে `মুগ্ধ` মজিদ মাস্টার ভোটের সময় হাওয়া খাচ্ছেন আমবাগানে বসে!
মজিদ মাস্টারের দাবি, তিনি নাকি নেতিবাচক কোনও কাজ করেননি! মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন।
শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্যায় : শাসনের ত্রাস ছিলেন তিনি। একসময় তাঁর নামে বাঘে-গরুতে এক ঘাটে জল খেত। তিনি মজিদ মাস্টার। কিন্তু সেই মজিদ মাস্টার এবার নিজের ভোটটা-ই দিতে পারবেন না। গ্রাম ছাড়া, এলাকাছাড়া। ভোটের আগের দিন তাই আমগাছের তলায় হাতপাখা দিয়ে হাওয়া খেতে দেখা গেল মজিদ মাস্টার।
কয়েক বছর আগে একবার গ্রামে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেই সময় বাড়িঘর ভাঙচুর হয়ে যায়। তাই ভোট দেওয়ার জন্য আর সাহস করে গ্রামে ঢুকতে চাইছেন না মজিদ। গ্রামের বাড়িতে স্ত্রী আর মেয়ে থাকেন। মেয়ের বয়স এখন ৪৩। তাঁর অনুতাপ একটাই, মজিদ মাস্টার তাঁর বাবা। আর তাই নিজের ছোট মেয়ের বিয়ে দিতে পারেননি মজিদ মাস্টারের মেয়ে।
যে মজিদ মাস্টার একসময় দাপুটে নেতা ছিলেন, তাঁর এখন এরকম অবস্থা কেন? মজিদ মাস্টারের উত্তর, "রাজনীতিতে উত্থানও আছে, পতনও আছে।" তবে নিজেকে দাপুটে বলতে রাজি নন তিনি। কারণ তাঁর মতে, 'দাপুটে' কথাটা সঙ্গে একটা নেতিবাচক যোগ রয়েছে। কিন্তু তিনি নাকি নেতিবাচক কোনও কাজ করেননি!
মজিদ মাস্টারের দাবি, তিনি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন। তাই যদি হয়, তাহলে যাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, তাঁরা এখন কেন তাঁর পাশে দাঁড়াচ্ছেন না? নীরব মজিদ মাস্টারের বক্তব্য, তাঁর পাশে দাড়াতে গেলে ওইসব মানুষগুলোকে কারও না কারও বিপক্ষে দাঁড়াতে হবে। আর সেটা তিনি মোটেই চান না। তবে একসময়ের বামেদের এই প্রভাবশালী নেতা কিন্তু মনে করেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেশকিছু কাজ করছেন যা গরীব মানুষের কাজে লাগছে, যেমন কন্যাশ্রী প্রকল্প। যেমন বন্যার সময় মানুষের পাশে দাঁড়ানো।
আরও পড়ুন,'দশটি পয়েন্ট দিয়ে বহিরাগত ঢোকাচ্ছে বিজেপি', কাকলির অভিযোগের পাল্টা জবাব মুকুলের
একসময় যে দাপট তাঁর ছিল, এখন তার কিছুই নেই। সেই জন্য কী অনুতাপ হয়? উত্তরে সামান্য হেসে দার্শনিকের ঢঙে পাল্টা প্রশ্ন ফিরিয়ে দেন মাস্টারমশাই। পাল্টা প্রশ্ন করেন, "আলেকজান্ডার এখন কোথায়? ব্রিটিশ শাসন এখন কোথায়? কিংবা মোগল শাসন-ই বা এখন কোথায়?" আমগাছের তলায় বসে হাতপাখা দোলাতে দোলাতে মজিদ মাস্টারের সহজ সরল স্বগতোক্তি, "সব কিছু মেনে নিতে হয়।"