নিজস্ব প্রতিবেদন: পরিসংখ্যানের পাল্টা পরিসংখ্যান। অমিতের শাহের (Amit Shah) চ্যালেঞ্জের জবাব দিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে একের পর এক তথ্য তুলে ধরে মমতা বোঝালেন, তাঁর জমানায় বাংলায় কতটা উন্নয়ন হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়,'জেনে নিয়ে কথা বলা উচিত। বাংলাকে দুঃস্বপ্নের নগরী হিসেবে দেখিয়ে গিয়েছেন। বাংলা মানেই কাজ নেই। কোথায় ছিলেন সিপিএমের ৩৪ বছরে? এখন বাংলা ঝকঝক-চকচক করছে। ঈর্ষাকাতর হয়ে পড়ছেন। ভারতে দারিদ্র-দূরীকরণে বাংলা এক নম্বরে। একশো দিনের কাজে বাংলা শীর্ষে। গ্রামীণ আবাস ও রাস্তা নির্মাণে আমরা একনম্বর। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে শীর্ষে বাংলা।' চ্যালেঞ্জের জবাব দেওয়ার জন্য অমিত শাহের কাছে ধোকলা খেতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।    


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

রবিবার বোলপুরে আঙুল তুলেছিলেন অমিত শাহ (Amit Shah)। পরিসংখ্যান দিয়ে দাবি করেছিলেন, শিল্প, শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য- সবক্ষেত্রেই বাংলা দেশের অন্যান্য রাজ্যের চেয়ে নীচে নেমে গিয়েছে। মঙ্গলবার নবান্নে তার জবাব দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিযোগ, জিডিপি বৃদ্ধির হারে ৩২ রাজ্যের মধ্যে বাংলা ১৬ নম্বরে। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, গত অর্থবর্ষে এই মাপকাঠিতে ২ নম্বরে বাংলা। শিল্পের বিকাশে ৩২ রাজ্যের মধ্যে ২০ নম্বরে। এই অভিযোগে মমতার মন্তব্য, কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্যই বলছে ৪ নম্বরে বাংলা। শাহের অভিযোগ, দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির মাত্র ১% হয়েছে বাংলায়। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, তৃণমূল জমানায় এফডিআই বেড়েছে ৭৩৬%। রাজ্যে প্রতিটি শিশুর মাথায় ৫০ হাজার টাকা ধারের বোঝা নিয়ে জন্মাচ্ছে। অমিতের এই অভিযোগের উত্তরে মমতার বক্তব্য, তাঁর আমলে রাজ্যের ধারের পরিমাণ  কমেছে ৭.৩৫%। শাহের অভিযোগ, সরকারি হাসপাতালে বেডের সংখ্যায় ৩২টি রাজ্যের মধ্যে ২৩ নম্বরে বাংলা। মমতা জানান, তাঁর জমানায় বেড বেড়েছে প্রায় ২৭ হাজার। প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডাক্তারের সংখ্যা ৩৯% কম। এই অভিযোগও খারিজ করে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, গত ১০ বছরে সাড়ে ১০ হাজার ডাক্তার নিয়োগ হয়েছে। মমতার কথায়,'বাংলার অর্থনীতি নিয়ে বড় বড় কথা বলেছেন। রাজকোষ ঘাটতি ৪.২৪ থেকে কমে হয়েছে ২.৯৪ শতাংশ। ভারতের জিডিপি ৪.১৮%। বাংলায় ৭.২৬ শতাংশ। ২২ হাজার কোটি বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছে বাংলায়। ১ কোটির বেশি কাজ হয়েছে শিল্পে।' 


আরও পড়ুন- ভোটের আগে একমঞ্চে বাম-কংগ্রেস-তৃণমূল? মেলাবেন Netaji?


কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলে যান ৯০% প্রাথমিক স্কুলে ডেস্ক নেই, ৩০% স্কুলে ভাল ক্লাসঘর নেই। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ৯৩% স্কুলেই আসবাব আছে। শাহের অভিযোগ, ১০% প্রাথমিক স্কুলে বিদ্যুত্‍ নেই। ৫৬% স্কুলে শৌচাগার নেই। মমতা বলছেন, ৯৯% স্কুলেই বিদ্যুত্‍ আছে। ১০০% স্কুলেই শৌচাগার আছে।  প্রতি ১ লক্ষ জনসংখ্যায় ১৩টি কলেজ, ৩২ রাজ্যের মধ্যে বাংলা ২৮ নম্বরে, অভিযোগ করেছিলেন শাহ। মুখ্যমন্ত্রী দাবি করলেন,'রাজ্যে কলেজ বেড়েছে ৫৭৭টি। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় ৩০টি। পরিশেষে খানিকটা মজার ছলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,'সব উত্তর দিয়ে দিয়েছি। এর জন্য অমিত শাহকে ধোকলা খাওয়াতে হবে। আর একটা গুজরাটি পদ খুব ভালবাসি নামটা মনে পড়ছে না।' 


আরও পড়ুন- বাজারে অমিল ট্যাব, দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার: Mamata


উন্নয়নের ১০ বছর নামে রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করেছে তৃণমূল। পাল্টা টিএমসি ফেল কার্ড বের করেছে বিজেপি। এই তরজাতেই, নতুন ইন্ধন জোগালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন মমতাকে পাল্টা দিয়েছে বিজেপি। দলের রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত বলেন,'মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ তৃতীয়স্থানে। এনিয়ে উনি কিছুই বললেন না। চিড়িয়াখানার কী অবস্থা, উনি উত্তর দিলেন তাজমহলটা কী রকম সুন্দর! এই ধরনের প্রশাসন উনি চালাচ্ছেন। একদম শিবঠাকুরের আপন দেশে।' বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যের কথায়,'যদি তুলনা করতে হয় মহারাষ্ট্র ও বেঙ্গালুরুর সঙ্গে করুন। উচ্চশিক্ষিতরা ওখানে চলে যাচ্ছেন। ৪৫ হাজার ইঞ্জিনিয়ারিং আসন বাংলায়। অধিকাংশই খালি পড়ে থাকছে। বাংলায় কোনও চাকরি নেই। সবাই চলে যাচ্ছেন বেঙ্গালুরু। এ রাজ্যের মানুষকে কর্মসংস্থান দিতে পারেনি সরকার।'


আরও পড়ুন- বুধবার ১৬,৫০০ শূন্যপদে নিয়োগ-বিজ্ঞপ্তি, ৩১ জানুয়ারি তৃতীয় টেট: Mamata