নিজস্ব প্রতিবেদন: বীরভূমের মহম্মদবাজার ব্লকের ডেউচা এবং পাচামি দুটি পাশাপাশি এলাকা। আদিবাসী অধ্যুষিত পাশাপাশি দুটি এলাকার মোট আয়তন সাড়ে ৩ হাজার একর। পরিকল্পনা মতো  ঠিকঠাক থাকলে আগামী দিনে এই দুটি এলাকায় ভারতের সর্ববৃহত কয়লা খনি প্রকল্প হতে চলেছে । বৃহস্পতিবার সেই কয়লাখনি প্রকল্পের কাজে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেল রাজ্য সরকার।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

এ দিন এখানে এসে কয়লা খনি প্রকল্প নিয়ে প্রাথমিক বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা। সেই বৈঠকে আদিবাসীদের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ২০জন আদিবাসী আর জেলা প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। দীর্ঘক্ষণ ধরে চলে এই বৈঠক। বৈঠকে আদিবাসীদের তরফ থেকে তাঁদের বক্তব্য শোনা হয়। সরকারের প্রতিনিধি রাজীব সিনহাও সেই বৈঠকে কয়লা খনি প্রকল্পের ভবিষ্যত নিয়ে অবগত করেন।




এ দিন বৈঠক শেষে রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা বলেন, “প্রাথমিক পর্যায়ে ৬০০ থেকে ৭০০ একর জমিতে এই কাজ শুরু করা হবে। পরে সাড়ে ৩ হাজার একর জমিতে এই কাজ হবে৷  আদিবাসী বা জমি মালিরদের ১০০ শতাংশ পুনর্বাসন দেওয়ার পরই শুরু করা হবে এই প্রকল্পের কাজ। এই প্রকল্পে কোন বেসরকারি সংস্থা কাজ করবে না। এটা সরকার করবে।  আর সরকার করবে মানুষের জন্য তাই মানুষের সমস্ত দিক দেখে তবেই কাজ করা হবে।কমপক্ষে ৪ ধাপে এই প্রকল্পের কাজ হবে ।“


আরও পড়ুন: সরকারি জমিতে শৌচালয় তৈরিকে কেন্দ্র করে বিবাদ, পঞ্চায়েত প্রধানের ওপর 'হামলা'


মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠক সরকারি আশ্বাস মিলছে। কিন্তু এই কয়লা খনি প্রকল্প করার প্রস্তাব পাশ হতে জমি দেওয়া নিয়ে ডেউচা এবং পাচামি গ্রামের আদিবাসীদের একটা বড় অংশ নিমরাজি বলে খবর। জমি দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁরা একেবারে অনিচ্ছুক তা নয় । সরকারের কতগুলো বিষয় পরিষ্কার হতে চান আপাতত অনিচ্ছুক আদিবাসীরা ।


** সেই বিষয়টি কী ?
ডেউচা এবং পাচামি দুটি পাশাপাশি এলাকা জুড়ে বর্তমানে চলছে পাথরশিল্পের কাজ । এই পাথর শিল্পের সাথে জড়িয়ে আছে দুটি এলাকার বহু মানুষের রুজি রোজগার । সরকারের কাছে ডেউচা এবং পাচামি এলাকার একটা বড় অংশ আদিবাসীদের প্রশ্ন এই পাথর শিল্পের ভবিষ্যত কি হবে?   
কারণ বর্তমানে পুরো সাড়ে ৩ হাজার এলাকা জুড়েই পাথর শিল্পের কাজ চলছে। যদি পুরো এলাকায় কয়লাখনি প্রকল্পের জন্য সরকার নিয়ে নেয় তাহলে পাথর শিল্পের ভবিষ্যত কি ?  


এছাড়া কয়লা থাকে আরও নীচে। সুতরাং সরকারি রূপরেখাতে যে চিত্র উঠে এসেছে তাতে কয়লা খনি প্রকল্প করতে গেলে পাথর শিল্পকে বন্ধ করে দিতে হবে। এটাতেই আপত্তি এই দুই এলাকার একটা বড় অংশের আদিবাসীদের। তাঁদের দাবি দুটো শিল্পই চালাতে হবে । অর্থাত কয়লাশিল্পের পাশাপাশি পাথরশিল্পের ভবিষ্যত সুনিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া তাঁরা জানাচ্ছেন, সঠিক জমির মূল্য দিতে হবে। সঙ্গে চাকরি দিতে হবে ।


এদিন মুখ্যসচিবের বৈঠকে অনিচ্ছুক আদিবাসীরা  দাবি-দাওয়া নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের এই বৈঠকে আসতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ৷ সেই কারণে আদিবাসীদের হুমকি, দাবি না মানা হলে আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাবেন তাঁরা।  জমি দিতে অনিচ্ছুক আদিবাসীরা বৃহস্পতিবার বীরভূমের অতিরিক্ত পুলিস সুপারের কাছেও স্মারকলিপি জমা দেন। যদিও এই বিষয়ে মুখ্যসচিবকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “এই বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।”