নিজস্ব প্রতিবেদন: মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের চিকিৎসার করানোর জন্য চেষ্টায় কোনও খামতি ছিল না বৃদ্ধ বাবার। কিন্তু সরকারি প্রকল্পে কোনও সাহায্যই মেলেনি! পায়ে লোহার বেড়ি পরেছে বছর তিরিশের যুবকের। সেই অবস্থায় কোনওমতে পা ঘষটে ঘষটে রাস্তায় হাঁটছেন তিনি। এমনই 'অমানবিক' দৃশ্য দেখা গেল মালদহে (Malda) জেলা প্রশাসনিক ভবন চত্বরের মতো জনবহুল এলাকায়।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ওই যুবকের নাম শেখ কাশেদ। বাড়ি, মালদহের (Malda) মানিকচকের (Manikchak) চৌকি মিরদাতপুরের সালাবাদগঞ্জে। ছেলেকে নিয়ে সঙ্গে নিয়ে মালদহে প্রশাসনিক ভবনে 'দুয়ারে সরকার'-র ক্যাম্পে এসেছিলেন শেখ বুদ্দিন। কাশেদ তাঁর ছোট ছেলে। পায়ে শিকল কেন?  জানা গেল, বছর দশেক ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছেন কাশেদ। প্রথম দিকে সমস্যাটা তেমনভাবে বুঝতে পারেননি পরিবারের লোকেরা। কিন্তু সময় যত গড়াতে থাকে, পরিস্থিতিও ততই ঘোরালো হয়ে ওঠে। শেখ বুদ্দিন জানালেন, 'শুধু আমাদেরই নয়, আত্মীয় থেকে গ্রামবাসী যাকে হাতের সামনে পাচ্ছে তাকেই মারছে কাশেদ। তাই পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছি।’



আরও পড়ুন: রাস্তা ফেরতের দাবিতে Visva Bharati-তে অনশনে উপাচার্য, পাল্টা বিক্ষোভে পড়ুয়ারা


তৃণমূল জমানায় তো সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে পরিষেবা পাওয়া যায়। সকলেই জন্য 'স্বাস্থ্যসাথী' ব্যবস্থা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। কেউ কেউ জানতে চাইলেন, চিকিৎসা করাননি কেন? এবার আর ধৈর্য্যে ধরে রাখতে পারলেন না কাশেদের মা কাফিরুন বিবির। ক্ষোভে ফেটে পড়লেন তিনি। বললেন, ‘ছেলের চিকিৎসার জন্য গত এক বছর ধরে সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে পঞ্চায়েতের নেতা সকলের কাছেই গিয়েছি। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা হয়নি।’ শেখ বুদ্দিনের দাবি, 'স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পেও ছেলের চিকিৎসার জন্য় আবেদন করেছিলাম। কিন্তু সেই আবেদন মঞ্জুর হয়নি!'


আরও পড়ুন: হাওড়ায় উদ্ধার বিস্ফোরক, কার্তুজসহ প্রচুর পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র, গ্রেফতার ২


শেখ বুদ্দিন পেশা দিনমজুর। কাশেদও আগে সেই কাজই করত। কিন্তু মানসিক অসুস্থতার কারণে এখন কাজ করতে পারেন না তিনি। একজনের রোজগারে কোনওমতে সংসারটা চলে যায়, কিন্তু অভাব ঘোচে না! কাশেদের বাবার আক্ষেপ, 'যতটা সম্ভব চিকিৎসা করিয়েছি। এখন খাবার টাকাও জুটছে না, চিকিৎসা করাব কীভাবে?' সংবাদমাধ্যম থেকে ঘটনাটি জেনেছেন মালদহের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। গাফিলতির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বও।