লকডাউনের আতঙ্ক! তাই রুজির অনিশ্চয়তা নিয়েই ঘরমুখো রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকেরা
গতবারের তিক্ত স্মৃতি তাঁদের তাড়া করে ফিরছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: গোটা দেশে ইতিমধ্যেই কোভিড-এর দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে। দেশে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে। দৈনিক মৃত্যু রেকর্ড সংখ্যা ১৫০০ ছাড়িয়েছে। উদ্বেগ ও সঙ্কটজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব, কর্ণাটক, দিল্লি, রাজস্থান-সহ বেশ কিছু রাজ্যে। সংক্রমণের তীব্রতা এতই বেশি যে, মহারাষ্ট্রের বেশ কিছু জায়গায় ইতিমধ্যেই চালু হয়েছে রাত্রিকালীন কারফিউ, ঘোষিত হয়েছে লকডাউন। এই জটিল পরিস্থিতিতে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন এই রাজ্য থেকে রুটিরুজির সন্ধানে মুম্বই পাড়ি দেওয়া পরিযায়ী শ্রমিকের দল। গত বছর লকডাউন চলাকালীন তাঁরা সেখানে আটকে পড়েন। ওইসব শ্রমিকরা অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাতে বাধ্য হন। সেই তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার আর কোনও ঝুঁকি না নিয়ে নিজেদের ব্যবস্থায় আগেভাগেই রাজ্যে ফিরছেন তাঁরা।
দ্বিতীয়বার লকডাউনের (lockdown) মতো পরিস্থিতি হওয়ায় টান পড়েছে তাঁদের রুটিরুজিতে। কাজের জায়গা ছেড়ে চলে এসে তাঁরা বুঝতে পারছেন না, কী ভাবে সংসার চালাবেন। এই রাজ্যে তাঁদের কর্মসংস্থান কী ভাবে হবে এ নিয়ে তাঁদের কপালে চিন্তার ভাঁজ।
আরও পড়ুন: Covid আবহে সব বন্ধ অথচ পরীক্ষা চলছে! উপাচার্যের দ্বারস্থ মেডিক্যালের পড়ুয়ারা
রাজ্যে ৮ দফা নির্বাচন (assembly election) চলাকালীনই আছড়ে পড়ল কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ। প্রতিদিন হু হু করে বেড়ে চলেছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। ব্যতিক্রম নয় হাওড়া শহর ও গ্রামীণ এলাকাও। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গোটা রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা সাত হাজার ছুঁইছুঁই। হাওড়া জেলাতেও মোট সংক্রমিতের সংখ্যা প্রায় ২৬০০।
এখন মহারাষ্ট্র থেকে হাওড়া স্টেশন এবং সাঁতরাগাছি স্টেশনে ট্রেনে করে ফিরতে শুরু করেছেন আতঙ্কিত পরিযায়ী শ্রমিকেরা (migrant workers)। সাঁতরাগাছি স্টেশনে মুম্বই থেকে আসা সোনা মণ্ডল জানান, তিনি মুম্বইয়ে হোটেলে কাজ করতেন। কিন্তু সেখানে যা পরিস্থিতি তাতে আর সেখানে থাকা নিরাপদ নয়। হাওড়া স্টেশনে নেমে সুজন দাস জানান, কাজের জন্য মুম্বই গিয়েছিলেন কিন্তু সেখানে লকডাউনে আটকে পড়ার আশঙ্কা আছে। তাই ফিরে এলেন। গ্রামে চাষের কাজ করে রোজগার করবেন বলে জানান তিনি।
পরিস্থিতি আরও জটিল হলে অন্যান্য রাজ্য থেকেও আসতে পারেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা। গতবার লকডাউন মিটলে কয়েক লক্ষ মানুষ রাজ্য ছেড়ে অন্য রাজ্যে পাড়ি দেন কাজের জন্য। বলাই বাহুল্য, তাঁরা ফিরলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।
ভিন রাজ্য থেকে এলেও হাওড়া (howrah) স্টেশন বা সাঁতরাগাছি স্টেশনে পরিযায়ী শ্রমিকদের থার্মাল চেকিংয়ের কোনও ব্যবস্থা ছিল না। ইতিমধ্যেই সংক্রমণ হু হু করে বাড়ছে। তাই এর দায় কে নেবে তাই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। পূর্ব রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, খুব শীঘ্রই থার্মাল গান চেকিং শুরু হবে হাওড়া স্টেশনে। আগামীকাল রাজ্য সরকারের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর বাকি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: হু হু করে বাড়ছে বাংলার সংক্রমণ, হাল ধরতে ১১ দফার নির্দেশিকা জারি রাজ্যের