Tarapith: গল্প হলেও সত্যি! সাধুর লাথি খেতে তারাপীঠে দলে-দলে ভিড় জমাচ্ছেন ভক্তেরা...
Tarapith: তারাপীঠ মন্দিরে এক সাধু লাথি মেরে ভক্তদের কোমরের ব্যথা সারাচ্ছেন! লাথি খেতেই তাঁর কাছে দলে-দলে হাজির হচ্ছেন একাধিক ভক্ত। তিনি কোমরে লাথি মেরে ব্যথা সারিয়ে দিচ্ছেন বলে দাবি করছেন অনেকেই।
প্রসেনজিৎ মালাকার: তারাপীঠ মন্দিরে এক সাধু লাথি মেরে ভক্তদের কোমরের ব্যথা সারাচ্ছেন! লাথি খেতেই তাঁর কাছে দলে-দলে হাজির হচ্ছেন একাধিক ভক্ত। তিনি কোমরে লাথি মেরে ব্যথা সারিয়ে দিচ্ছেন বলে দাবি করছেন অনেকেই। যদিও, এক শ্রেণির মানুষ এসব বুজরুকি বলে উড়িয়েও দিচ্ছেন। বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরা দাবি করছেন, এর কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই! এটিকে সঠিক পদ্ধতি বলে মেনে নেননি রামপুরহাট জেলা স্বাস্থ্য মুখ্য আধিকারিকও। মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ার পরেই মানুষ এসবের পাল্লায় পড়ছেন বলে বলছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞেরা।
আরও পড়ুন: Cyclone Remal Update: ভোটের দিনও ভিজবে বাংলা! আগামীকাল কেমন থাকবে আবহাওয়া? 'রিমাল' ১০০ কিমি দূরে...
আমজনতা এসে সেধে লাথি খাচ্ছেন! হ্যাঁ, শুনতে অবাক হলেও এটাই ঘটছে। তারাপীঠে এক অঘোরী সাধুর কাছে এসে প্রতিদিন বহু মানুষ সেধে লাথি খেয়ে যাচ্ছেন। কেন? সাধুর ঘনিষ্ঠেরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘদিনের কোমরের ব্যথা সেরে যাচ্ছে সাধুর ওই লাথিতে।
বীরভূমের তারাপীঠ মহাশ্মশানে সাধক বামাক্ষ্যাপার সমাধিস্থলের সামনেই জড়ো হচ্ছেন ভক্তরা। মন্দিরের দিকে মুখ করে প্রণাম করছেন। আর ঠিক সেই সময় কালো কাপড় আর কালো চাদর গায়ে এক অঘোরী সাধু সজোরে লাথি মারছেন ভক্তের কোমরে। লাথি খাওয়ার পরেই হুমড়ি খেয়ে সামনের দিকে পড়ে যাচ্ছেন অনেকেই। এরপর উঠে বাবাকে প্রণাম করছেন। অনেকের কথায়, বাবার লাথি খেলে কোমরের ব্যথা সেরে যাচ্ছে। ওষুধ ছাড়াই লাথি-র কৃপায় সারছে কোমরের ব্যথার রোগ! এমনই তাঁদের দাবি।
পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের তারাপীঠ মন্দির জগৎবিখ্যাত। তন্ত্রসাধনার প্রাচীন পীঠস্থান হিসাবে স্বীকৃত এটি। মন্দিরের পাশের শ্মশানে তন্ত্রসাধনার বহু পীঠ এবং বহু অঘোরীদের ঘর রয়েছে। সাধক বামাক্ষ্যাপার সময় থেকে এই শ্মশান তান্ত্রিক অভ্যাস এবং সাধনার ক্ষেত্র। তখন থেকেই অঘোরী সাধুরা এখানে আসেন।
তারাপীঠের ওই অঘোরী সাধুর নাম সমীরনাথ অঘোরী। তাঁর পূর্বাশ্রম কলকাতার শিয়ালদহে। চল্লিশের কাছাকাছি তাঁর বয়স। ২০০৯ সাল নাগাদ যোগীবাবা রবীন্দ্র কাছে তাঁর দীক্ষাগ্রহণ। এই সময়ে কলকাতার নিমতলা শ্মশানে তিনি ১২ টা থেকে ৩টে পর্যন্ত সাধনা করতেন। গত ১২ বছর হল তারাপীঠ মহাশ্মশানে পাকাপাকি ভাবে বসবাস করেন। সেখানে তাঁর একটি কুঠুরি আছে।
তবে বাবার নাকি তেমন কোনও চাহিদা নেই। বাবার কথায়, 'লাথি খেলেই ব্যথা কমে যাবে।' 'কাঞ্চন মূল্যেই' আমি সন্তুষ্ট। তাঁকে প্রশ্ন করা গেল, এটা কি অঘোরী বিদ্যার ফলে সম্ভব হচ্ছে? উত্তরে তিনি বলেন, '১২ বছর সাধনা করে মায়ের ইঙ্গিত পেয়েছি। তাতেই কাজ হচ্ছে।' তিনি জানান, যখন তিনি জন্মেছিলেন, তখন মাতৃগর্ভ থেকে পা আগে বেরিয়েছিল। সেই কারণে তাঁর পায়ের এত গুণ।
অন্য দিকে, বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্য হিমাদ্রি শুক্লা বলেন, লাথি মেরে কারও ব্যথা ঠিক করা যায় না। অসুখের জন্য চিকিৎসকের কাছে যেতে হয়। নির্দিষ্ট চিকিৎসার মাধ্যমেই রোগ নিরাময় হয়। যাঁরা অর্থাভাবে ভালো চিকিৎসকের কাছে যেতে পারেন না, তাঁদেরই সুবিধা হয় এইসব বুজরুকির মধ্যে ফেলার।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ জিষ্ণু ভট্টাচার্য বলেন, শুধু অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসাতেই সব রোগ সারে এমনটা নয়, হোমিওপ্যাথি, ইউনানি, আয়ুর্বেদিকের মতো অনেক ধরনের চিকিৎসা হয়। আসলে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়েই এসবের পাল্লায় পড়েন অনেকে। কিন্তু এভাবে কোমরে লাথি মারাটাকে চিকিৎসা বলা যায় না। এটা অপচিকিৎসা এবং ক্ষতিকর।
সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষয়টি ভাইরাল হতেই নেটপাড়ার লোকজন নড়েচড়ে বসেছেন। একাংশ বলছেন, 'এটা ভণ্ডামি', কেউ বলছেন 'পাপ', কেউ বলছেন,' সনাতন ধর্মকে ছোট করা হচ্ছে '!
আরও পড়ুন: Tornadoes: ভয়ংকর টর্নেডোয় বিধ্বস্ত শহর-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা! ভাঙল গাড়ি-বাড়ি, উড়ল গাছ, মৃত ১৮...
(Disclaimer: এটি মানা বা না মানার সুপারিশ করা হচ্ছে না। বিশ্বাস ব্যক্তিগত বিষয়। সচেতন পাঠক যা করবেন স্বদায়িত্বে। ঘটনাকে শুধু ঘটনার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে এটিকে নিছক 'খবর' হিসেবে পরিবেশন করা হয়েছে। এতে আমাদের সম্পাদকীয় দফতরের কোনও দায়বদ্ধতা নেই।)