Purba Bardhaman: `বড়র পিরীতি বালির বাঁধ`? অজয়ের বাঁধনির্মাণ প্রসঙ্গে কেন এ কথা বললেন গ্রামবাসীরা?
Purba Bardhaman: ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা রসিকতা করেই বলছেন, কথায় আছে, `বড়র পিরীতি বালির বাঁধ`! তো, বালির বাঁধ তো টেকে না, তাই আমরা চাই, মাটির মজবুত বাঁধ হোক। বাঁধের জন্য আমরা জমি দিয়েছি। তা ছাড়া বাঁধের কাজের জন্য বর্ষার সময়কে বেছে নেওয়াতেও আমাদের আপত্তি। মোট কথা, আমাদের একটিই দাবি, গ্রাম বাঁচাতে মজবুত বাঁধ তৈরি করা হোক!
সন্দীপ ঘোষ চৌধুরী: বালি দিয়ে নদীবাঁধ মেরামতের অভিযোগে কাজ আটকে দিলেন গ্রামবাসীরা। নদীবাঁধ মেরামতির কাজ গ্রামবাসীরা বন্ধ করে দিয়েছেন এই খবর পেয়ে সেচ দফতরের ময়ূরাক্ষী সাউথ ক্যানাল ডিভিশনের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে গ্রামবাসীদের সঙ্গে তড়িঘড়ি আলোচনায় বসেন। বালি দিয়ে কোনও ভাবেই বাঁধের কাজ করা হবে না, এই মর্মে প্রতিশ্রুতি দিয়ে গ্রামবাসীদের আশ্বস্ত করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক।
কেতুগ্রাম-২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির বিল্বেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের চরখি গ্রামের ঘটনা। ফি-বছর অজয় নদের বন্যায় প্লাবিত হয় চরখি গ্রাম-সহ এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রাম। বাঁধ ভেঙে গেলে এলাকার বাড়ি-ঘর, কৃষিজমি সব অজয় নদের জলের তলায় চলে যায়। বর্ষার সময় নদীপাড় এলাকার চরখি গ্রামের বাসিন্দারা তাই আতঙ্কে থাকেন। চরখি গ্রাম বাঁচাতে রাজ্যের সেচ দফতরের উদ্যোগে ১ কোটি ৩১ লক্ষ ৪১ হাজার ২০০ টাকা ব্যয়ে ময়ূরাক্ষী সাউথ ক্যানাল ডিভিশনের তত্ত্বাবধানে প্রায় পাঁচশো মিটার নদীবাঁধের মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। নদীবাঁধ মাটি ও বোল্ডার দিয়ে কাজ করার নির্দেশ থাকলেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার বালি দিয়ে বাঁধ সংস্কারে কাজ শুরু করে বলে অভিযোগ।
আজ, বৃহস্পতিবার সকালে নদীবাঁধে বালি ফেলতে শুরু করলেই গ্রামবাসীরা বাঁধের কাজ আটকে দিয়ে প্রশাসনে অভিযোগ জানান। বাঁধ মেরামতের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে এই খবরে বীরভূম থেকে ময়ূরাক্ষী সাউথ ক্যানাল ডিভিশনের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে এসে গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা করেন। ভগ্নপ্রায় নদীবাঁধ এলাকা পরিদর্শন করে ময়ূরাক্ষী সাউথ ক্যানাল ডিভিশনের আধিকারিক সিরাজ হোসেন বলেন, পুরনো বাঁধে বালি ছিল সেটাই ভাঙার ফলে এখন দেখা যাচ্ছে। মাটি দিয়ে বাঁধের কাজ করা হবে। গ্রাম বাঁচাতে বাঁধের কাজে কোনও গাফিলতি করা হবে না। গ্রামবাসীদের অভিযোগ পেয়ে নদীবাঁধ এলাকা পরিদর্শন করেন সিরাজ হোসেন।
এদিকে, আবু বক্কর খান নামে এক গ্রামবাসীর অভিযোগ, ফি-বছর অজয় নদের বন্যায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। বালি দিয়ে বাঁধের কাজ শুরু করায় আমরা কাজ আটকে দিয়েছি। সরকার যখন গ্রাম বাঁচাতে টাকা খরচ করছে তখন ভালো করে শক্ত বাঁধ তৈরি হোক। বালি দিয়ে বাঁধ করার থেকে তা না করা ভালো। আর এক গ্রামবাসী আব্দুল মান্নাত খান বলেন, কথায় আছে, 'বড়র পিরীতি বালির বাঁধ', বালির বাঁধ তো টেকে না। মাটির মজবুত বাঁধ হোক। বাঁধের জন্য আমরা জমি দিয়েছি। বাঁধের কাজের জন্য বর্ষার সময়কে বেছে নেওয়ায় গ্রামের বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ। বাসিন্দাদের একটাই দাবি, গ্রাম বাঁচাতে মজবুত বাঁধ তৈরি করা হোক।