নিজস্ব প্রতিবেদন:  রোগা ছিপছিপে চেহারা। চোখে চশমা। করুণ মুখ। দেখে মনে হবে অত্যন্ত মেধাবী কোনও ছাত্রী, কোনও কলেজপড়ুয়া।পাশের বাড়ির 'জেঠিমা'ও তাই বুঝতে পারেননি তার আসল চেহারা। অথচ বাংলাদেশি ডাকাতদের সঙ্গে রীতিমতো রেইকি করে ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতি করে ফেলল সেই তরুণীই। নরেন্দ্রপুরে পুলিস সেজে ডাকাতির ঘটনায় উঠে এল আরও চাঞ্ল্যকর তথ্য। এবার বাইশ বছরের এক তরুণী গ্রেফতার করল পুলিস। ধৃতের নাম দীপা মজুমদার। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৪ জনকে গ্রেফতার করে পুলিস। তাদের মধ্যে তিন জন বাংলাদেশি। তাদের জেরা করেই জানা যায় দীপার নাম। এই ঘটনার মূলচক্রী সে-ই। দীপার ছকেই সেদিন রাতে ডাকাতি হয়েছিল ব্যবসায়ীর বাড়িতে। ঘটনায় জড়িত দীপার প্রেমিকও। ঘটনার পর থেকেই বেপাত্তা ওই যুবক।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

 



প্রসঙ্গত, গত ১৮ অগাস্ট নরেন্দ্রপুরের নেতাজিনগরের ব্যবসায়ী অরূপ দত্তের বাড়িতে পুলিস সেজে ডাকাতি করে কয়েকজন দুষ্কৃতী। মাঝরাতে ডাকাতি হয়। সেসময় বাড়িতে ছিলেন তিনি ও তাঁর বৃদ্ধা মা। অভিযোগ, রাত ২টো নাগাদ দরজায় এসে কয়েকজন আওয়াজ করে। না পেয়ে জানলায় ধাক্কা মারে তারা। পুলিশকর্মী বলে পরিচয় দেয়। ৬জনের দলে ৩জন ছিল সাধারণ পোশাকে আর বাকি তিন জন পুলিসের উর্দি পরে ছিল। তাদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্রও ছিল। আলমারি ভেঙে ৭০ হাজার টাকা ও ১৩ ভরি সোনার গয়না লুঠ করে পালায় তারা। যাওয়ার সময়ে বাড়ির সামনে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায় বলেও অভিযোগ। 


এই ঘটনায় সেদিনই স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে ধরা পড়ে যায় এক জন। বেধড়ক মারধরের পর তাকে তুলে দেওয়া হয় পুলিসের হাতে। পরে গ্রেফতার করা হয় আরও চারজনকে। 



ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিসের হাতে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে, অরূপের বাড়িতে অবাধ যাতায়াত ছিল দীপার। অরূপের মা মায়া দত্তকে সে জেঠিমা বলে ডাকত। জেঠিমাও দীপাকে খুব স্নেহ করতেন। ছিলেন।


পুলিশ জানিয়েছে, অরূপের বাড়ির প্রত্যেকটি বিষয় খুব ভালোভাবে জানত দীপা। মায়াদেবীর যে  প্রচুর গয়না আছে, তাও সে জানত। মাস কয়েক আগে বিয়েবাড়ি যাবে বলে মায়াদেবীর কাছে গয়না চায় সে। সরল মনে সেই গয়না দেন মায়াদেবী।


‘বান্ধবী’র বাড়ি থেকে দেহ উদ্ধার, বেহালা সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরের প্রধান পুরোহিতের রহস্যমৃত্যু


বিয়ে বাড়িতেই দীপার বর্তমান প্রেমিকের সঙ্গে সেই গয়না নিয়ে কথাবার্তা হয়। তখনই তারা ডাকাতির ছক করে। দীপার প্রেমিকই বাংলাদেশের কুখ্যাত ডাকাত রেজাউলের সঙ্গে যোগাযোগ করে।


এরপর রেজাউল, দীপা ও প্রেমিক মিলে ডাকাতির ছক করে। ‘অপারেশন’ এর আগে অরূপ দত্তের বাড়িতে একটি পুজোর অনুষ্ঠানে যোগ দেয় তারা। সেখানে আরও ভালোভাবে সব ছানবিন করে নেয় তারা। ঘরের জিনিসপত্র, ঠাকুরের গায়ে বিপুল গয়না দেখে আসে তারা। এরপর ছক মারফত নির্দিষ্ট দিনে ডাকাতি হয় নেতাজিপল্লীতে।  দীপাকে জেরা করে এবার তার প্রেমিকের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিস।