কিরণ মান্না : মৃত্যুতে উত্সব! ঢাক বাজিয়ে, আবির ছড়িয়ে, আতসবাজি পুড়িয়ে চলল শবযাত্রা! ব্যান্ডপার্টি সহযোগে চলল উদ্দাম নৃত্যও! অবাক হচ্ছেন? ভাবছেন, কারোও মৃ্ত্যুতে এমন উত্সব! এও কী করে সম্ভব? কিন্তু এটাই বাস্তব। এমনই অভিনব দৃশ্যের সাক্ষী রইল দিঘার (Digha) মানুষ। পর্যটক থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা সবাই থমকে দাঁড়াল রাস্তায়। ১২০ বছরের বৃদ্ধার মৃত্যুতে শোভাযাত্রা করে সত্কারের আয়োজন করল ছেলে-আত্মীয় থেকে নাতি-পুতিরা।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

দিঘার দক্ষিণ শিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন মহেশ্বরী চন্দ (Maheswari Chanda)। বয়স হয়েছিল ১২০ বছর। দীর্ঘ এত বছরের জীবনে কালের নিয়মে ডালাপালা মেলে ছড়িয়েছে তাঁর পরিবারও। ছেলে, নাতি-পুতি মিলিয়ে ভরা সংসার। নাতি সুনীল চন্দ জানালেন, ১২০ বছরের বৃদ্ধার নাতির সংখ্যা-ই ৫৬ জন। আর সবমিলিয়ে পরিবারের সদস্যসংখ্যাও ১০০-র উপরে। দীর্ঘ এক শতক জীবনে সবাইকে আগলে রেখেছিলেন মহেশ্বরী। নিজের জীবনে সাক্ষী থেকে বহু অভিজ্ঞতারও। সময়ের হিসেব বলছে, স্বাধীনতার বহু আগেই তাঁর জন্ম। দেখেছেন দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম। দেখেছেন দেশ স্বাধীন হতে। দেখেছেন সময়ের বিবর্তন। দেখেছেন, তাঁর ছোটদের নিজের চোখের সামনে ধীরে ধীরে বেড়ে উঠতে। তাঁর অনেক অনুজ ইতিমধ্যেই ইহলোকের মায়াও ত্যাগ করেছেন। কিন্তু তিনি মহেশ্বরী চন্দ বেঁচেছিলেন।


আরও পড়ুন, বিশ্বে বেঁচে মাত্র ১০০০ King Vulture! সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে রাজাভাতখাওয়ায় হবে প্রজনন


তবে নশ্বর জীবনে একদিন না একদিন মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী। অবশেষে ১২০ বছর বয়সে মহেশ্বরী চন্দের (Maheswari Chanda) জীবনে এসেছে ওপারের ডাক। নেমে এসেছে পর্দা। আজ চিরঘুমে শায়িত মহেশ্বরী। নাতি সুনীল চন্দ জানালেন, "মৃত্যু দুঃখের হলেও, এই মৃত্যু আনন্দের। কারণ দিঘার বুকে এত বেশি বয়স পর্যন্ত আজ অবধি কেউ বাঁচেনি। আর এত বড় পরিবারও এই প্রথম! তাই আমরা সবাই মিলে দিদার মৃত্যুতে শোভাযাত্রার আয়োজন করেছি।" অভিনব উপায়ে এই শেষযাত্রায় রাস্তায় ফুল ছড়ানোর পাশাপাশি চলল আবির মাখানোর পালাও। ফাটানো হল আসতবাজি। মাইক লাগিয়ে ব্যান্ড বাজিয়ে উদ্দাম নৃত্য করতে দেখা গেল আট থেকে আশিকে। 



আরও পড়ুন, 'বহিরাগত' নিয়ে সতর্ক TMC, ড্যামেজ কন্ট্রোলে 'লিট্টি-চাটনি-চোখা' পিকনিক!


মৃত্যুতে যেন জীবনের উদযাপন! গাঁদা-গোলাপে সাজিয়ে এমনভাবেই শ্মশানঘাটে নিয়ে যাওয়া হল মহেশ্বরী চন্দকে। বলাই বাহুল্য যে, অভিনব এই শবযাত্রা দেখে হতবাক দিঘায় (Digha) আগত পর্যটক থেকে স্থানীয় বাসিন্দারাও। কে কবে কোথায় এভাবে মৃত্যুতে উত্সব করতে দেখেছেন, মৃত্যুতেও জীবনের উদযাপন করতে দেখেছেন, মনে করতে পারলেন না!