জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: অনেক কষ্ট করে মেয়ের পড়াশোনা চালিয়ে তাঁকে ডাক্তার বানিয়েছিলেন বাবা-মা। আরজি করে (R.G.Kar Incident) মেয়ের এই মর্মান্তিক মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন নির্যাতিতা ডাক্তারের বাবা-মা। ভেঙে পড়েছেন তাঁর ডাক্তার প্রেমিকও। নভেম্বর মাসেই বিয়ের পিঁড়িতে বসার কথা ছিল। বিয়ের চূড়ান্ত দিন নির্ধারণ করার কথাবার্তা চলছিল দুই পরিবারের মধ্যে। তবে পরিণতি পেল না ১৩ বছরের প্রেম। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন- R G Kar Incident: 'বাবা হিসাবে লজ্জিত', শুধু অধ্যক্ষ পদ নয়, চাকরি থেকেও ইস্তফা আরজি করের প্রিন্সিপালের...


পরিবার সূত্রে জানা যায়, আরজি করের নির্যাতিতা ডাক্তারি পড়ুয়ার বিয়ের কথা ছিল নভেম্বরেই। যাঁকে বউয়ের সাজে দেখার জন্য দিন গুনছিলেন, তাঁকে শববাহী গাড়িতে দেখে সেই মুখ এখনও ভুলতে পারছেন না, বয়সে কয়েক বছরের বড় সিনিয়র ডাক্তার প্রেমিক। মানসিকভাবে অনেকটাই ভেঙে পড়েছেন তিনি। প্রায় ১৩ বছর আগে দমদমের একটি প্রাইভেট কোচিং সেন্টারে তাঁদের প্রথম দেখা। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে মেডিক্যাল জয়েন্টে বসেছিলেন দুজনে, সেই সূত্রেই এই কোচিং সেন্টারে যাওয়া। সেখান থেকেই প্রেম পাণিহাটির মেয়ে ও ব্যারাকপুর পলতার বাসিন্দা ওই যুবকের। 


যে রাতে এই নৃশংস ঘটনা ঘটে গেল সেই রাতে তাঁর প্রেমিক ডাক্তারও নাইট ডিউটিতে ছিলেন। নদিয়ার একটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন রাত সাডে় ১১টা নাগাদ তরুণীর সঙ্গে তাঁর প্রেমিকার শেষ কথা হয়। ডিউটিতে ছিলেন তাই বেশিক্ষণ কথা বলতে পারেননি ওই মহিলা চিকিৎসক৷ কিন্তু পরে অনেকটা সময় চলে গেলেও, ডাক্তার প্রেমিকার ফোন না পাওয়ায় কল করতে থাকেন ওই প্রেমিক চিকিৎসক। মেসেজেও বেশ কয়েকবার খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু মেলেনি কোন উত্তর। ওই ব্যক্তি ভেবেছিলেন, ডিউটিতে ব্যস্ত আছে বলেই হয়তো রিপ্লাই দিতে পারছে না তাঁর প্রেমিকা৷ কিন্তু সেই রাত যে দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে, তা ভাবতেও পারেননি। 


এখনও খড়দহ থানা এলাকায় মৃত ডাক্তারি তরুণীর বাড়ির সামনে এখনও সোনালী রঙের জ্বলজ্বল করছে রেসপিরেটরি মেডিসিনের নেমপ্লেট। যে বাড়িতে বিয়ের সানাই বাজার তোরজোর চলছিল, সেই বাড়িতে এখন শোকের ছায়া। এরপর কি করবেন! কীভাবে ভালবাসার সেই মানুষকে ছাড়া কাটাবেন বাকি জীবন! বুঝে উঠতে পারছেন না আর জি কর কাণ্ডে খুন হওয়া ওই চিকিত্‍সকের হবু স্বামী। যারা এই কাণ্ড ঘটাল তাদের নজিরবিহীন শাস্তি হোক, দাবি মৃতার শোকাহত প্রেমিকের। সোমবার মৃত ডাক্তারের বাড়ি যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 


আরও পড়ুন- Aparna Sen on R.G.Kar Incident: 'আরজি করের দায় সরকারকেই নিতে হবে...' দাবি অপর্ণা সেনের...


সোমবার দুপুর পৌনে ১টা নাগাদ নাটাগড় অম্বিকা মুখার্জি রোডের বাড়িতে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। তার সাথে ছিলেন পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষ, কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েল। প্রায় ৪৫ মিনিট পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যরা।  মুখ্যমন্ত্রী বলেন 'আমি প্রথম যেদিন এই খবরটি পাই সেদিন আমি জানিয়েছিলাম, খুবই নক্কারজনক এবং বেদনাদায়ক ঘটনা। যেই জড়িত থাক অবিলম্বে তাদের শাস্তি দিতে হবে। আমি চেয়েছিলাম এটা যেন ফাস্ট ট্র্যাক জুডিশিয়াল কোর্টে হয় যাতে তদন্তের অগ্রগতি হয়। এবং সে ক্ষেত্রে আমরা ফাঁসির দাবি জানাব। কারণ কিছু লোক এখনও সামাজিক অবক্ষয়ের মধ্যে আছে, সামাজিক মূল্যবোধ ভুলে গেছে মেয়েদের গায়ে হাত দেওয়া যে কত বড় অপরাধ। ওখানে নার্স ছিল সিকিউরিটি ছিল তারপরেও এত বড় ঘটনা কিভাবে ঘটল আমি বুঝতে পারছি না। ওর পরিবারের লোক বলছে ভিতরে কেউ জড়িত ছিল যদি তাই হয় তাহলে তার বন্ধু-বান্ধবসহ সকলকে দেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ইতোমধ্যে হাসপাতালে প্রিন্সিপাল, চেস্ট ডিপার্টমেন্টের হেড, পুলিশ পোস্টার দায়িত্বে থাকা এসি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফরেনসিক, ডগ স্কোয়াড, দিয়ে তদন্ত হয়েছে যাতে  দোষীরা শাস্তি পায়। আমি চাই পুলিশ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দোষীদের গ্রেফতার করুক আর যদি রবিবার পর্যন্ত তারা যদি কূলকিনারা না করতে পারেন, তবে আমরা নিজেদের হাতে রাখব না। রবিবার পর্যন্ত অপেক্ষা করব সে ক্ষেত্রে সিবিআই এর হাতে হস্তান্তর করব'। 


 



(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)