নিজস্ব প্রতিবেদন : পড়াশোনায় ভালো। নেশা বলতে ছিল শুধু ছবি আঁকা। সেই মেয়েই জন্মদিনের দিন নিল চরম সিদ্ধান্ত। বেশ বড় করে জন্মদিন পালন করতে হবে। ১৫০ জন বন্ধুকে জমিয়ে খাওয়াতে হবে। মায়ের কাছে এমনই দাবি জানিয়েছিল দশম শ্রেণির ছাত্রী মেয়ে। কিন্তু, মেয়ের সেই দাবি রাখতে পারেননি মা। মাত্র দেড় হাজার টাকা সম্বল নিয়ে মা জানিয়েছিলেন, বন্ধুদের সবাইকে লুচি-পায়েস খাওয়াবেন। তাতে খুশি হতে পারেনি মেয়ে। শেষে মন মতো জন্মদিন করতে না পারার জন্য আত্মঘাতী হল দশম শ্রেণির ছাত্রী। অত্যন্ত বেদনাদায়ক এই ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের বোলপুরে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

বোলপুরের মোতিপুকুর পাড় এলাকায় বাসিন্দা ছিল ওই কিশোরী। স্থানীয় স্কুলেই দশম শ্রেণিতে পড়ত সে। বুধবার, ৩ অক্টোবর, ছিল ওই ছাত্রীর জন্মদিন। বাড়িতে মাকে সে জানায়, এবার সে অনেক বড় করে ঘটা করে জন্মদিন পালন করতে চায়।  জন্মদিনে ১৫০ জন বন্ধুকে নিমন্ত্রণ করেছে সে। তাদের জন্য ভালোমন্দ রান্না করে দেওয়ার জন্য মায়ের কাছে বায়না করে ওই ছাত্রী।


আরও পড়ুন, জামাইবাবুর বন্ধুর সঙ্গে প্রেম, বিয়েতে আপত্তি জানাতেই অষ্টাদশী প্রেমিকাকে খুন প্রেমিকের


কিন্তু বাবা সবজি বিক্রেতা। আর মা বাড়ি বাড়ি পরিচারিকার কাজ করেন। অভাবের সংসারে কোনও রকমে দিন গুজরান হয়।  তাই মেয়ের বায়না কী করে রাখবেন, বুঝে উঠতে পারছিলেন না মা। অথচ জন্মদিনে মেয়ে একটা আবদার করেছে, তা না রাখলেও নয়। মেয়েকে জানান, হাতে দেড় হাজার টাকা রয়েছে। সম্বল বলতে ওইটুকই। তা দিয়ে দুধ, গোবিন্দভোগ চাল, ময়দা কিনে আনবেন। পায়েস আর লুচি বানাবেন। জন্মদিনে বন্ধুদের লুচি-পায়েস খাওয়াবেন। কিন্তু মায়ের প্রস্তাব পছন্দ হয়নি মেয়ের। বার বার মাকে অন্যকিছু রান্না করার কথা বলতে থাকে সে। অভিমান জমে ওঠে মনের কোণে।


আরও পড়ুন, পড়শির সঙ্গে পরকীয়ায় বাধ সেধেছিলেন শ্বশুর, ফাঁকা বাড়িতে খুন করল বৌমা-নাতি


শেষে জন্মদিনের দিন বিকালেই গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয় ওই ছাত্রী। গুরুতর জখম হয় সে। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় ওই কিশোরীকে প্রথমে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। শেষপর্যন্ত এদিন সকালে হাসপাতালে মৃত্যু হয় ওই কিশোরীর। মন মতো জন্মদিন করতে না পারার জন্য মেয়ে যে এমন কিছু করতে পারে, ভাবতেই পারছেন না বাবা-মা।