Tiger in Purulia: ঝাড়গ্রামের পরে এবার আতঙ্কের পুরুলিয়া! বাঘ ঘুরে বেড়াচ্ছে বান্দোয়ানের জঙ্গলে, যে কোনও মুহূর্তেই...
Royal Bengal Tiger in Bandoan: ঝাড়গ্রামের পরে এবার পুরুলিয়া। এবার সেখানেও বাঘের আতঙ্ক। শনিবার গভীর রাতে কাঁকড়াঝোড় জঙ্গল থেকে বাঘটি ঢুকে পড়ে পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের জঙ্গলে।
মনোরঞ্জন মিশ্র: ঝাড়গ্রামের পর এবার পুরুলিয়ায় বাঘের আতঙ্ক। জানা গিয়েছে, শনিবার গভীর রাত্রে ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ির কাঁকড়াঝোড় জঙ্গল থেকে বাঘটি ঢুকে পড়ে পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের জঙ্গলে। সকালের শেষ পাওয়া খবর, যমুনা নামের ওই বাঘিনীটি বান্দোয়ান থানার রাইকা জঙ্গলে অবস্থান করছে!
উল্লেখ্য, গত ১৫ ডিসেম্বর ওড়িশার সিমলিপাল রির্জাভ ফরেস্ট থেকে চলে আসে একটি বাঘ। ঝাড়খণ্ডের গোটাশিলা পাহাড় ও সংলগ্ন জঙ্গল অতিক্রম করে সেটি পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলে ঢুকে পড়ে। শুরু হয় জঙ্গলঘেরা গ্রামে সাধারণ মানুষের আতঙ্কের দিন।
এদিকে বাঘ ধরতে নাজেহাল অবস্থা বন দফতরের। ওড়িশার সিমলিপাল রিজার্ভ ফরেস্টের একটি বিশেষ দল বাঘটির খোঁজে এক জঙ্গল থেকে আরেক জঙ্গলে অভিযান শুরু করে। পুরুলিয়ায় বাঘ ঢুকে পড়ার খবর শোনার পরেও তা হয়েছে। চলছে বাঘের সন্ধান-অভিযান। এদিন তাদের সঙ্গে রয়েছে পুরুলিয়া বন দফতরের টিম, সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে আসা দুটি বিশেষ টিমও। তবে বাঘ খোঁজার পাশাপাশি বন দফতর ও পুলিস প্রশাসনের পক্ষ থেকে জঙ্গলঘেরা গ্রামের মানুষকে সতর্ক করা হচ্ছে।
গতকাল, শনিবার দুপুর নাগাদ জানা গিয়েছিল, জিনাতের পর সিমলিপাল টাইগার রিজার্ভ ফরেস্ট থেকে নতুন জায়গার সন্ধানে বেরিয়ে পড়ে যমুনা নামের একটি বাঘও। সে তখন বেলপাহাড়িতে। ওড়িশা ছেড়ে আগে চলে-আসা বাঘ জিনাত এবং পরে-আসা যমুনা উভয়কেই আনা হয়েছিল মহারাষ্ট্রের তাডোবা অন্ধেরি টাইগার রিজার্ভ ফরেস্ট থেকে। আড়াই বছর বয়সী যমুনা সিমলিপাল থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে কুলডিহা ওয়াইল্ড স্যাংচুয়ারি দিকে ১৫ ডিসেম্বর নাগাদ বেরিয়ে যায়। যমুনাকে আনা হয়েছিল ৯ নভেম্বর। ছাড়া হয়েছিল জনাবিলের কোর এরিয়ায়। সিমলিপাল ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্রের ডিরেক্টর ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে যমুনা বেরোনোর কথা স্বীকার করলেও তার গতিবিধি বলতে প্রাথমিক ভাবে নারাজ ছিলেন।
ওড়িশার সিমলিপালের টাইগার রিজার্ভ ফরেস্ট থেকে বেরিয়ে যমুনা ঢুকে পড়েছিল বাংলার বেলপাহাড়ি থানার শিমুলপাল এলাকায়। বেলপাহাড়ি থানার বাংলা-ঝাড়খন্ড সীমান্তবর্তী গোটাশিলা পাহাড়-লাগোয়া কোটাচুয়া জঙ্গলে প্রাথমিক ভাবে অবস্থান করছিল এটি। বেলপাহাড়ি থানার শিমুলপাল অঞ্চলের জোড়মা, বিরমাদল, শাখাভাঙা, জাম্বনী এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়েছিল। বন দফতর এবং পুলিসের তরফ থেকে সতর্ক করে মাইকিংও করা হচ্ছিল। ঝাড়খণ্ডের ঘাঘরা, পাকুড়িয়া এলাকার বাসিন্দাদেরও সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। উভয় রাজ্যের সীমান্ত-লাগোয়া গ্রামবাসীদের জঙ্গলে কাঠপাতা কুড়োতে যেতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
কদিন আগেই জানা গিয়েছিল ফের বাঘের আতঙ্ক ঝাড়গ্রামে। কয়েকদিন ধরেই ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন জায়গায় একটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের গতিবিধি নজরে আসে। তার আক্রমণে বেশ কিছু গবাদি পশুর মৃত্যু এবং আহত হওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়। ঝাড়খণ্ড সীমান্ত-লাগোয়া হওয়ায় ঝাড়গ্রামেও বাঘের আতঙ্ক ছড়ায়। এ বিষয়ে ঝাড়গ্রাম বন দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা ঝাড়খণ্ডে তিন বছর বয়সী বাঘিনী (রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার)-র অস্তিত্বের কথা স্বীকার করে নিয়েছিলেন। ঝাড়গ্রামের ডিএফও বলেছিলেন, বাঘটি বর্তমানে বেলপাহাড়ি সীমান্ত-লাগোয়া চাকুলিয়া এলাকায় আছে। জামবনি এবং বেলপাহাড়ি-- এই দুটি ব্লকের সীমান্ত এলাকায় জঙ্গলে নজরদারিও বাড়ানো হয়েছিল। তারপর এবার আসরে আর একটি বাঘ। এবার জোড়া বাঘের মোকাবিলায় নামতে হবে বন দফতরকে।