সৌমিত্র সেন


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

স্বচ্ছ সুনীল আকাশ, ঝকঝকে আবহাওয়া, শুকনো উতল হাওয়া আর ঝাউ-ইউক্যালিপটাসের অনিঃশেষ শব্দমালা; সবই যেন সারাদিন ধরে মিশে যাচ্ছে সমুদ্রকল্লোলের অসীম সঙ্গীতে। এই হল এককথায় তাজপুর।



বর্ষার ভ্রুকুটি অতীত, এখন বাতাসে শীতের আমেজ। এই খুশির আবহাওয়ায় শহরের ধুলো ও ধ্বনি, ভিড় ও ভ্রম থেকে সাময়িক মুক্তি নিতে তাজপুর সৈকতের সঙ্গ যেন বিকল্পহীন। দিঘার মতো ভিড় নেই, শঙ্করপুরের মতো ভগ্নদশা নয়, মন্দারমণির মতো কৃত্রিমতা নেই; তাজপুর যেন সজীবতায় নির্জনতায় সৌন্দর্যে গাম্ভীর্যে দলছুট সৃষ্টিছাড়া এক সমুদ্রসৈকত। যেখানে শুধু বসে বসে আকাশ ও জলের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে অনায়াসে সময় কেটে যায়।


আরও পড়ুন: #ভ্রমণ: কখনও পথ হারিয়েছেন শ্রীরামপুরের মুররাবুরুর শালজঙ্গলে?


মন্দারমণি ও শঙ্করপুরের মাঝখানে নিরিবিলি সৈকত ও বালিয়াড়ি নিয়ে অপূর্ব ডেস্টিনেশন তাজপুর। শহরের কোলাহল ও দূষণ সরিয়ে এই তাজপুর-ভ্রমণ পর্যটকদের কাছে আসলে হতে পারে এক অপার বিশ্রাম-পর্ব। সূর্যোদর এবং সূর্যাস্তের রংখেলা, ঢেউয়ের আসা-যাওয়ার মৃদু গান মনকে উদাস করে, স্নায়ুকে স্নিগ্ধ করে। ঋতুতে ঋতুতে তাজপুরের নব নব রূপ। গ্রীষ্মে একটু কষ্টদায়ক; তবে বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত, বসন্তে তাজপুর বর্ণে গন্ধে উজ্জ্বল।



যাঁরা ততটা কাব্যিক নন, বরং একটু অ্যাডভেঞ্চারাস, তাঁদের জন্য তাজপুরে ওয়াটার স্পোর্টস, প্যারাগ্লাইডিংয়ের সুবিধাও রয়েছে।


এখানে অদূর ভবিষ্যতে সমুদ্রবন্দর গড়ে ওঠার কথা রয়েছে। এটি হলে তাজপুর হয়তো গুরুত্বপূর্ণ একটা জায়গায় পরিণত হবে। হয়তো সুযোগ-সুবিধাও কিছু বাড়বে। পর্যটনেও লাগবে নতুন রঙের ছোঁয়া।



কী ভাবে যাবেন


হাওড়া থেকে ট্রেনে কাঁথি বা রামনগর স্টেশনে পৌঁছতে হবে। রামনগরই সুবিধাজনক। রামনগর থেকে গাড়িতে মিনিট চল্লিশেক। রামনগর স্টেশনের বাইরেই গাড়ির স্ট্যান্ড। তাজপুর যেতে হলে গাড়ি 'বুক' করতে হবে। শেয়ারে গেলে কাছাকাছি একটি মোড় পর্যন্ত পৌঁছনো যাবে। এর পর কিলোমিটারদেড়েক হেঁটে নেওয়া চলে। টোটো অটোও মিলবে।


আর যাঁরা কলকাতা থেকে সরাসরি গাড়ি নিয়ে যাবেন তাঁরা এনএইচসিক্স ধরে গিয়ে কোলাঘাট। তারপর নন্দকুমার হয়ে কাঁথি বা রামনগরের দিকে ঢুকবেন। এ পথে চাউলখোলা। তার পর তাজপুর। কলকাতা থেকে বাসে এলে নামতে হবে চাউলখোলাতেই। নেমে ভ্যান বা অটো ধরে তাজপুর।


তাজপুরে থাকার জায়গার তেমন অভাব নেই। ডিলাক্স, এসি, নন-এসি-- সব রকমই আছে। আছে একেবারে সাধারণ কিছু হোটেলও। ২৫০০-৩০০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা-- বিভিন্ন রেঞ্জের থাকার জায়গা মেলে। যেখানে উঠবেন, সেখানেই খাওয়া-দাওয়া সারা যায়। আর একটু হঠকে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে হলে সমুদ্রতীরবর্তী ঝুপড়িগুলিতেও ট্রাই করতে পারেন। এখানে রান্নার একটা অন্যরকম আস্বাদ। 



এখনও পর্যন্ত না গিয়ে থাকলে ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে পড়ুন তা হলে। তাজপুরের সৈকত, সমুদ্র, ঝাউবন, আকাশ-বাতাস আপনারই জন্য পসরা সাজিয়ে বসে।


(Zee 24 Ghanta App: দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)


আরও পড়ুন: #ভ্রমণ: পাহাড়ের নতুন ঠিকানা; পাহাড়, গাছ, ঝর্না, কুয়াশায় মাখা এক টুকরো ছবি যেন 'কাফের'