নারায়ণ সিংহ রায়: শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের অন্তর্গত ফাঁসিদেওয়া অঞ্চলের লিম্বুটারী এলাকায় এক মহিলার বিষপান করে আত্মহত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষোভ  ছড়ায় গ্রামবাসীদের মধ্যে। ঘটনার সুত্রপাত কয়েকমাস আগে। আদিবাসী বিধবা মহিলা রেশমিতা লাকরা তীর্কের স্বামীর এক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়। তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। কখনও চাষ আবাদে সাহায্য আবার কখনও দিন মজুরি করে ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের নিয়ে দিন যাপন করছিলেন তিনি। পরিবারের অভিযোগ এলাকার এক ব্যাক্তি নির্মল গোপ তাঁকে বিভিন্ন সময় রাস্তাঘাটে ও গভীর রাতে মদ্যপ অবস্থায় বাড়িতে এসে মানসিক ও শারীরিকভাবে অত্যাচার চালাত। বেশ কয়েকদিন ধরে এমন ঘটনা ঘটার পর অবশেষে ফাঁসিদেওয়া থানার পুলিশের দ্বারস্থ হয়েও লাভ হয়নি কোনও, এমনটাই অভিযোগ পরিবারের।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন: Anubrata Mondal: পুরসভার ড্রাইভার, কেষ্টঘনিষ্ঠ বিদ্যুতের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির হদিশ...


অগষ্ট মাসের ২০ তারিখ আদিবাসী বিধবা মহিলাকে কেন্দ্র করে বসে সালিশি সভা। শুধুমাত্র আদিবাসী বিধবা মহিলাকে ডাকা হয় গ্রামের মাতব্বরদের সভায়। সভায় উপস্থিত ছিলেন  এলাকার কেপিপি নেতা প্রাইমারি শিক্ষক রবিন গোপ ,  ফাঁসি দেওয়া তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি ভারতী সিংহ , এলাকার বেশ কয়েকজন ব্যক্তি। কেপিপি নেতা রবিন গোপের বাড়িতে বসে সভা। পরিবারের বক্তব্য,  সেই সভায় অশ্লীল নোংরা ভাষায় তাঁকে আক্রমণ করা হয়। এরপর তাঁকে বিভিন্ন জায়গায় স্বাক্ষর করানো হয়। সেই রাতেই মহিলা বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। মেডিকেল কলেজে তাঁর চিকিৎসা চলে প্রায় মাস খানেক ধরে। চলতি সপ্তাহের শুক্রবার তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশ ও সালিশি সভার তিন মাতব্বরের উপর ক্ষোভে ফেটে পড়ে গ্রামবাসীরা।


আরও পড়ুন:Cow Smuggling Case: গোরুপাচার-কাণ্ডে গ্রেফতার এনামুল ঘনিষ্ঠ জেনারুল শেখ


গ্রামবাসীদের চাপে মূল অভিযুক্তদের মধ্যে নির্মল গোপকে পুলিস গ্রেফতার করলেও বাকি দুজনের মধ্যে ফাঁসিদেওয়া তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি ভারতী ঘোষ ও কেপিপি নেতা রবিন গোপ এখনও অধরা। তাদের গ্রেফতারের দাবিতে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে ফাঁসিদেওয়া থানায় উপস্থিত হয় গ্রামবাসীরা। সেখানেই চলে অবস্থান বিক্ষোভ। মৃতের বোন সবিতা তীর্কে জানান ,  "আমার দিদি মারা যাওয়ার পরও ফাঁসিদেওয়া থানার পুলিশস আমাদের কোনও প্রকার সাহায্য করছে না। শুধুমাত্র একজনকে গ্রেফতার করেছে। বাকি সালিশি সভার মূল দুই অভিযুক্তকে এখনও গ্রেফতার করেনি। কী এমন হয়েছিল সালিশি সভায় যে আমার দিদিকে আত্মহত্যা করতে হল? কোথায় কোথায় তাকে স্বাক্ষর করানো হয়েছিল তা আমরা জানিনা। বাকিদেরও গ্রেফতার করতে হবে,  ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের নিয়ে আমরা বসে থাকব গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত।’


আরও পড়ুন: Halisahar, CBI: এবার সিবিআই নজরে বীজপুরের বিধায়ক এবং কাঁচড়াপাড়ার চেয়ারম্যান, বাড়িতে তল্লাশি


অন্যদিকে ঘটনাকে কেন্দ্র করে রুরাল ডিএসপি অচিন্ত্য গুপ্তকে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি ফোন কেটে দেন। তবে মহিলা  তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি ভারতী ঘোষের নাম উঠে আসায় দার্জিলিং জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি (সমতল) পাপিয়া ঘোষকে ফোন করা হলে তিনি জানান ,  ‘যদি কেউ দোষী থাকে তাহলে আইন রয়েছে ,  আইনের উপরে আমরা কেউ না। আমি ঘটনা শুনেছি। খোঁজ খবরও নিয়েছি। কারও নামে অভিযোগ আনা মানেই সে দোষী নয়। বিচার ব্যবস্থা রয়েছে।’অবশেষে ফাঁসি দেওয়ার রুরাল ডিএসপির অচিন্ত্য গুপ্তের হস্তক্ষেপে প্রায় ৩ ঘন্টা ধরে চলা ফাঁসিদেওয়া থানায় অবস্থান বিক্ষোভ উঠে গেল। মৃতের পরিবারকে ডিএসপির বলেন ৩ দিনের মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে। সেই প্রতিশ্রুতি পেয়ে থানাঘেরাও বিক্ষোভ কর্মসূচি উঠিয়ে নিলেন মৃতের পরিবার ও পরিজনেরা।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)