#উৎসব: `মেজ মা`! রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সূত্রেই শুরু হয়েছিল এই জগদ্ধাত্রী আরাধনা
ভক্তদের আগ্রহে সারা বছরই এখানে মায়ের পুজো হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদন: রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের হাত ধরেই চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা হয়েছিল বলে ইতিহাস মারফত জানা গিয়েছে। সেই পুজো এখানে নানা বর্ণে ও রূপে ক্রমে ক্রমে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বেশ কিছু পুজো বিখ্যাত হয়ে উঠেছে। এমনই অন্যতম বিখ্যাত এক পুজো তেঁতুলতলার পুজো।
লক্ষ্মীগঞ্জ চাউলপট্টি বাজারে যেমন তিনশো বছর আগে 'বড় মা' প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন কৃষ্ণচন্দ্রের দেওয়ান ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরীর হাতে, তেমনই ভদ্রেশ্বরের তেঁতুলতলায় কৃষ্ণচন্দ্রেরই আর এক দেওয়ান দাতারাম শূরের হাতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তেঁতুলতলার এই 'মেজ মা'।
আরও পড়ুন: #উৎসব: বাগবাজারের জগদ্ধাত্রী পুজো এবার রুফটপ গার্ডেনে
মেজ মা'র ইতিহাস ২২৯ বছরের। কথিত, রাজা কৃষ্ণচন্দ্র দেনার দায়ে নবাব মুর্শিদকুলি খাঁয়ের কাছে বন্দি ছিলেন। সেই সময়ে তাঁর দেওয়ান দাতারাম রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের প্রতিষ্ঠিত মাতৃমূর্তি নিয়ে নদীপথে ভদ্রেশ্বর পালিয়ে এসেছিলেন। এবং এখানেই মাকে নতুন করে প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেছিলেন। সেই পুজোই আজও হয়ে চলেছে।
লোকবিশ্বাসে 'মেজ মা' খুবই জাগ্রত। এই পুজো চাঁদা ব্যতীত পুজো। অগণিত ভক্তের দানে পুজো হয়। আগে অসংখ্য ভক্ত মানত করতেন। অসংখ্য বলির প্রচলনও ছিল। পরবর্তীকালে তা বন্ধ হয়ে যায়। তবে মায়ের মহিমা এতটুকু ক্ষুণ্ণ হয়নি। আজও প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ দণ্ডী কেটে এখানে পুজো দেন। নবমীর পুজোয় এখানে সব থেকে বেশি ভিড় হয়। কারণ সকলেই নবমীর ভোগের আশায় হাজির হন।
তেঁতুলতলা জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি এখানে সারা বছর পুজো পরিচালনা করে। মায়ের কাঠামো ও পট রেখে পুজো করা হয় এখানে। সারা বছরই এখানে ভক্তের আনাগোনা থাকে। এখানে স্থায়ী মন্দিরও নির্মিত হয়েছে।
জগদ্ধাত্রী পুজোর দিনকয়েক এখানে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়। প্রশাসনের তরফ থেকে ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রচুর পুলিস মোতায়েন হয়। এখানকার পুজো দেখতে গেলে দীর্ঘ লাইন দিতে হয় ভক্তদের। এখানে পুজো দেখতে এতই ভিড় হয় যে, আগের রাত থেকে ভক্ত-দর্শনার্থী লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন।
বিগত বছর করোনার জন্য পুজোমণ্ডপে ভক্তের প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়েছিল। এবারে অবশ্য কোভিডবিধি মেনেই মণ্ডপ ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: #উৎসব: রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের নায়েব ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরীর হাতে সূচনা হয়েছিল এই পুজোর