জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আশ্রয় খুঁজছেন পরিবার-হারিয়ে রাতারাতি একা হয়ে যাওয়া বহু মানুষ। প্রবল ঠান্ডা। রয়েছে তুষারঝড়ের আশঙ্কা। তারই মধ্যে রাতের অন্ধকারেও বহু শোকার্ত ভগ্নহদয় মানুষ ভগ্নস্তূপে এখনও হাতড়ে বেড়াচ্ছেন প্রিয়জনকে। তুরস্ক ও সিরিয়ার  ভূমিকম্পে প্রাথমিক ভাবে যা মনে করা হয়েছিল, তার আট গুণ বাড়তে পারে প্রাণহানি বলে জানা গিয়েছে। আপাতত, মত্যুর যে খতিয়ান জানা গিয়েছে, তাতেই চোখ কপালে। মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৮০০০! আহতের সংখ্যার কোনও হিসেব নেই। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন: Turkey-Syria Earthquake: মৃত্যুর মাঝেই নতুন প্রাণের স্পন্দন, ধ্বংসস্তুপের নিচ থেকে উদ্ধার নবজাতক


ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আমেরিকা, ভারত-সহ প্রায় সমস্ত দেশ তুরস্ক-সিরিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে। তুরস্কের আদানা শহরে পৌঁছেছে ভারতের পাঠানো প্রথম দফার ত্রাণ। সঙ্গে পৌঁছেছে ভারতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর উদ্ধারকারী দল, বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর, চিকিৎসা সামগ্রী, ড্রিলিং মেশিন ইত্যাদি। সিরিয়াতেও গিয়েছে ভারতের ত্রাণসাহায্য। তুরস্কের দক্ষিণ প্রান্তে সিরিয়া সীমান্তের কাছে ঘটা পরপর তিনটি ভূমিকম্প কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে এই অঞ্চলকে। ৭.৮, ৭.৬ এবং ৬.০-- রিখটারে স্কেলে কম্পনের তীব্রতা ছিল এই রকমই। আজ, বুধবার সকালেও ফের কেঁপেছিল মাটি। রিখটার স্কেলে তার তীব্রতা ছিল ৫.৬। এ ছাড়াও আরও বেশ কিছু ছোটবড় ভূমিকম্প পরবর্তী কম্পন অনুভূত হয়েছে এই অঞ্চলে। 


আরও পড়ুন: Russia Ukraine War: রাশিয়া কি ফেব্রুয়ারির শেষেই নতুন কোনও আক্রমণ হানবে ইউক্রেনে?


ভূ-বিশেষজ্ঞদের ধারণা, গত কালের ভূমিকম্পটির কারণ ছিল পূর্ব আনাতোলিয়া চ্যুতি। ১৯৯৯ সালে উত্তর আনাতোলিয়া চ্যুতিতে এমনই এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রায় ১৮ হাজার মানুষের প্রাণ গিয়েছিল। এ ধরনের চ্যুতিতে চ্যুতিতল বরাবর শিলাস্তূপ অনুভূমিক ভাবে পরস্পরের থেকে সরে যায়। এর ফলে পৃথিবীর অভ্যন্তরের স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়, আর তারই জেরে ঘটে ভূমিকম্প।


এমনিতেই তুরস্ক বিশ্বের অন্যতম সক্রিয় ভূমিকম্প অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে। ১৯৯৯ সালে ৭.৪ মাত্রার ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ছিল এই এলাকা। এই ভূমিকম্প কয়েক দশকের মধ্যে তুরস্কে সব চেয়ে মারাত্মক আঘাত হানা এক ভূমিকম্প হিসেবে স্বীকৃত। সেই ভূমিকম্পে ইস্তাম্বুলে প্রায় ১,০০০-সহ ১৭,০০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছিলেন। 


বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘকাল ধরে সতর্ক করেছেন, মাত্র একটি বড় ভূমিকম্পই ইস্তাম্বুলকে চিরতরে ধ্বংস করে দিতে পারে। অথচ যথোচিত নিরাপত্তা-সতর্কতা ছাড়াই এখানে নির্মাণকাজের অনুমতি দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে এলাজিগে একটি ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। এই ঘটনায় ৪০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। সেই বছরই অক্টোবরে, এজিয়ান সাগরে ৭.০ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। এতে ১১৪ জন নিহত এবং ১,০০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছিলেন।


তুরস্কে এখন শীতের মাঝামাঝি। হাড়কাঁপানো ঠান্ডায় খোলা আকাশের নীচে রাস্তায় ভগ্নস্তূপে অসংখ্য মানুষ। আবহাওয়া দফতর সতর্কতা জারি করেছে, তাপমাত্রা আরও নামতে পারে! এর মধ্যে তুষারঝড়ের আশঙ্কাও রয়েছে! কী হবে এরপর? আর কত দুর্গতি অপেক্ষা করে আছে অসহায় বিপর্যস্ত মানুষগুলির জন্য? আর কত যন্ত্রণা সহ্য করতে হবে তাঁদের? 


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)