Bangladesh Flood: ভয়াবহ বন্যায় প্লাবিত গোটা বাংলাদেশ, ক্ষতিগ্রস্ত ১৮ লাখ মানুষ...
Bangladesh Flood: বন্যায় ৬টি জেলার প্রায় ১৮ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। তাঁদের মধ্যে বন্যার জলে ডুবে ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলায় একজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানানো হয়। অন্যত্র মৃত্যু হয়েছে আরও ছ`জনের। নিখোঁজ দুই। বন্যার জলের সঙ্গে মিশে গিয়েছে চোখের জল।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বন্যা ভারতের দোষে, না প্রকৃতির রোষে-- তা নিয়ে ঘোর বিতর্ক বাংলাদেশে। ভারত অবশ্য নীরব থাকেনি। বন্যার প্রকৃত কারণ ব্যাখ্যা করেছে তারা। তাতে তারা জানিয়ে দিয়েছে, বাংলাদেশের এই ভয়ংকর বন্যা মোটেই তাদের (ভারতের) কোনও কারণে ঘটেনি। কথা হল, যে-ই দায়ী হোক, তাতে তো বন্যার দুর্গতি কমে না। বলা হচ্ছে, স্মরণকালের মধ্যে বাংলাদেশে এরকম বন্যা হয়নি!
গত ২০ অগাস্ট থেকে বন্যা পরিস্থিতির তৈরি হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির ছবি তুলে ধরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত বন্যা আক্রান্ত জেলার সংখ্যা ৬টি-- কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালি ও মৌলভিবাজার। এইসব জেলার ৪৩টি উপজেলা বন্যাপ্লাবিত। এই অঞ্চলে মোট ১ লাখ ৮৯ হাজার ৬৬৩টি পরিবার জলবন্দি হয়ে পড়েছে। সব মিলিয়ে ১৭ লাখ ৯৬ হাজার ২৪৮ জন ক্ষতিগ্রস্ত!
আজ, বৃহস্পতিবার সকালে এক বিবরণীতে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বন্যায় ৬টি জেলার প্রায় ১৮ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বন্যার জলে ডুবে ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলায় একজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানানো হয়। অন্যত্র মৃত্যু হয়েছে আরও ছ'জনের। নিখোঁজ দুই।
ওই স্টেটমেন্টেই বলা হয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও এর সংলগ্ন উজানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এতে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীগুলির জলতল বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং আর পাবে বলেও এতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বন্যা আক্রান্ত জেলাগুলিতে ত্রাণ বিতরণের কাজ চলছে। জলবন্দি বা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজনদের আশ্রয় দিতে মোট ১৩৫৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলিতে মোট ১৭৮৮২ জন লোক এবং ৩৪৮৬টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য মোট ৩০৯টি মেডিক্যাল টিম চালু রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
ভারতের ছাড়া জলে ভেসে গিয়েছে বাংলাদেশ! এই মর্মে একটি খবর প্রকাশিত হতেই তা নিয়ে দুই বাংলায় প্রচুর সমালোচনা হয়েছে। এমনকী, বাংলাদেশে এই বন্যার প্রতিবাদে সেখানে ভারতবিরোধী মিছিলও করেছেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু দেরিতে হলেও বাংলাদেশের এই বন্যা নিয়ে 'ক্লারিফিকেশন' মিলল। জানা গেল, গুমতি নদী থেকে জল ছাড়ার জন্য বাংলাদেশের এই বন্যা হয়নি। এর অর্থ, ভারত এজন্য কোনও ভাবেই দায়ী নয়। জানিয়ে দিল ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের পূর্ব সীমান্ত অঞ্চলের এই বৃষ্টির জন্য ত্রিপুরার গুমতি নদীর ক্যাচমেন্ট-অঞ্চলকেই দায়ী করা হয়েছে। গুমতি নদী ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে বয়। এই নদীর বিস্তৃত ক্যাচমেন্ট অঞ্চলে কয়েকদিন ধরে বিপুল বৃষ্টি হয়েছে। তারই জেরে প্লাবিত হয়েছে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ভারত ডুম্বুর বাঁধের জল ছাড়ায় বাংলাদেশে বন্যা হয়েছে-- এই তথ্য অসত্য বলেই বলছে সংশ্লিষ্ট মহল।
ডুম্বুর বাঁধ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে যথেষ্ট দূরে-- ১২০ কিলোমিটার। এই বাঁধটি লো হাইট ড্যাম-- প্রায় ৩০ মিটার উচ্চতার। দুই দেশই এখান থেকে শক্তি উৎপন্ন করে। এই বাঁধে তিনটি 'ওয়াটার লেভেল অবজার্ভেশন সাইট' আছে-- আমারপর, সোনামুড়া ও সোনামুড়া-২। এই অঞ্চলে কদিন ধরেই বিপুল বৃষ্টি হয়েছে। সব চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে ২১ অগাস্ট। অল্পসময়ে নদীতে ও নদীর ক্যাচমেন্ট অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় জল বেড়ে যায়। এবং বাঁধ থেকে আলাদা করে জল ছাড়ার কোনও ঘটনা না ঘটা সত্ত্বেও যেন মনে হয় ডুম্বুর বাঁধ থেকে জল ছাড়া হয়েছে!