বাধ্য হয়েই পাক মাটিতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, চিনকে জানালেন সুষমা স্বরাজ
ভারতের বিদেশমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, পাক মাটিতে ভারতের হামলা ছিল সম্পূর্ণ অসামরিক। তাঁর দাবি, পাক নাগরিক বা সেনার উপর হামলা চালানো হয়নি
নিজস্ব প্রতিবেদন: যুদ্ধের আবহ। পাক মাটিতে গিয়ে ভারতীয় বায়ুসেনার হামলার ২৪ ঘণ্টা না কাটতেই দফায় দফায় সীমান্তরেখা লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান। পাল্টা জবাব দিচ্ছে ভারতও। এ দিকে দেশের অভ্যন্তরে সোপিয়ানে জঙ্গি নিকেষ অভিযান চালাচ্ছে সেনা। এমন রণক্ষেত্র পরিবেশে আজ চিন সফরে ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। উহেনে অনুষ্ঠিত ১৬ তম ত্রিদেশীয় রাশিয়া-ভারত-চিন বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকে (আরআইসি) প্রথমেই চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক সারলেন সুষমা স্বরাজ। এ দিন তাঁর বক্তব্যের আদ্যপ্রান্তে উঠে এল পাক মদতে সন্ত্রাসের কথা। চিনকে অবগত করলেন কীভাবে সিআরপিএফ জওয়ানের উপর আত্মঘাতী জঙ্গিহামলা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- মুখ লুকানোর জায়গা নেই, ভারতের বিরুদ্ধে তাই আন্তর্জাতিক মঞ্চে যাওয়ার হুমকি পাকের
আরআইসি (রাশিয়া-ভারত-চিন) বৈঠকের ফাঁকে চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে বৈঠক করেন সুষমা। তিনি বলেন, “আমি যে সময় চিন সফর করছি, সে সময় সন্ত্রাসে জর্জরিত ভারত দুঃখে, ক্ষোভে ফুঁসছে। জম্মু-কাশ্মীরে ন্যাক্কারজনকভাবে জঙ্গি হামলা চালানো হয়।” সুষমা স্বরাজ গতকালের বায়ুসেনা হামলার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, জঙ্গি দমনে পাকিস্তানকে বারংবার সতর্ক করা হয়। কিন্তু পাক মাটিতে জইশের অস্তিত্ব অস্বীকার করে ইসলামাবাদ। বাধ্য হয়েই সন্ত্রাস দমনে পদক্ষেপ করেছে ভারত।
তবে, ভারতের বিদেশমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, পাক মাটিতে ভারতের হামলা ছিল সম্পূর্ণ অসামরিক। তাঁর দাবি, পাক নাগরিক বা সেনার উপর হামলা চালানো হয়নি। বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য এবং নিঁখুত লক্ষ্যে জঙ্গি নিধন করা হয়। উল্লেখ্য, গতকাল নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে খাইবার পাখতুনখোয়া বালাকোটে জইশের সবচেয়ে বড় জঙ্গি ঘাঁটি উড়িয়ে দেয় বায়ুসেনার ১২ টি মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমান। প্রায় এক হাজার কেজি বোমা ফেলা হয়। পাশাপাশি পাক অধিকৃত কাশ্মীরের দু’জায়গায় হামালা চালানো হয়। ভারতের দাবি, বায়ুসেনার এই অভিযান সফল হয়েছে। কমপক্ষে ৩০০ জইশ জঙ্গি-সহ মাসুদ ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েক জন কম্যান্ডারের মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন- ভিডিয়ো: ভারতের প্রত্যাঘাতে বাচ্চা ছেলের মতো আচরণ আতঙ্কিত পাক প্রধানমন্ত্রীর
চিনা বিদেশমন্ত্রীর কাছে পুলওয়ামার ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন সুষমা স্বরাজ। পাশাপাশি এ-ও বলেন, আন্তর্জাতিক মঞ্চে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে আরআইসি (রাশিয়া-ভারত-চিন) বৈঠকে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের অংশগ্রহণকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা। পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদকে কালো তালিকাভুক্ত করতে ভেটোপ্রদানকারী দেশ আমেরিকা, রাশিয়া, ফ্রান্স ও ব্রিটেন সমর্থন জানালেও বরাবরই বাধা দিয়ে এসেছে চিন। সম্প্রতি পুলওয়ামা ঘটনার পরও চিনের অবস্থান বদল হয়নি। আজহার মাসুদ-সহ তার সংগঠন জইশের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপাতে পাক ‘বন্ধু’ চিনকে সুষমা স্বরাজ কতটা বোঝাতে পারেন, সেটাই এখন দেখার।