ভেন্টিলেটর থেকে বেরোলেন সলমান রুশদি, `দোষী নন` দাবি হামলাকারীর
২০০০ সালে নিউ ইয়র্কে চলে যান রুশদি। এরপরে ২০১৬ সালে আমেরিকার নাগরিকত্ব পান তিনি। সম্প্রতি জার্মানির স্টারন ম্যাগাজিনের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে রুশদি জানিয়েছিলেন এত বছর মৃত্যুভয়ের সঙ্গে জীবন কাটানোর পরে ধীরে ধীরে তাঁর জীবন স্বাভাবিক হচ্ছিল।
জি২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: নিউইয়র্কে একটি সাহিত্য অনুষ্ঠানে ছুরিকাঘাতের পরে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন লেখক সলমান রুশদি। গতকাল রাতে তাঁকে ভেন্টিলেটর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় বলে জানানো হয়েছে। চৌতাকুয়া ইনস্টিটিউশনে লেখককে ছুরিকাঘাত করা হয়। চৌতাকুয়া ইন্সটিটিউশনের সভাপতি একটি টুইটে বলেছেন যে সলমান রুশদিকে ভেন্টিলেটর থেকে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। রুশদির এজেন্ট, অ্যান্ড্রু ওয়াইলিও এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বলে জানা গিয়েছে। সলমান রুশদিকে আক্রমণ করার জন্য অভিযুক্ত ২৪ বছর বয়সী হাদি মাতার রুশদিকে হত্যার চেষ্টা এবং হামলার অভিযোগে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। যদিওএকজন প্রসিকিউটর এই ঘটনাকে ‘পূর্বপরিকল্পিত’ অপরাধ বলে অভিহিত করেছেন।
লেখকের ঘাড়ে এবং পেটে প্রায় ১০ বার ছুরিকাঘাত করা হয়। প্রসিকিউটররা নিউইয়র্কের একটি আদালতে হাদি মাতারের শুনানির সময় এই কথা বলেছিলেন। মাতারের সোশ্যাল মিডিয়ার একটি প্রাথমিক পর্যালোচনায় দেখা গিয়েছে তিনি "শিয়া চরমপন্থা" এবং ইরানের ইসলামিক বিপ্লবী গার্ড (IRGC) এর প্রতি সহানুভূতিশীল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন যে রুশদি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে যাচ্ছিলেন যখন সন্দেহভাজন ব্যক্তি মঞ্চে এসে তাকে ছুরিকাঘাত করেন। হলে থাকা স্টাফ এবং দর্শকরা তাঁকে ধরে ফেলে মাটিতে চেপে ধরেন। যদিও তাঁর আগেই ওই ব্যক্তি রুশদিকে আক্রমণ করেন। রাল্ফ হেনরি রিস, যিনি রুশদির সাক্ষাৎকার নেবেন বলে ঠিক ছিল, তিনিও এই ঘটনায় আহত হন।যদিও তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে পুলিস জানিয়েছে।
সলমান রুশদিকে বিমানে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার জরুরি অস্ত্রোপচার করা হয়। তিনি একটি চোখের দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারেন বলে জানা গিয়েছে। তার এজেন্টের মতে তার একটি বাহুর স্নায়ু বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং তার লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: Salman Rushdie, JK Rowling: 'এরপর তুমি', এবার 'হ্যারি পটার'-এর লেখিকা রাওলিংকে প্রাণনাশের হুমকি
সলমান রুশদির ওপর হামলার ঘটনায় বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই ঘটনার নিন্দা করেছেন এবং বলেছেন যে লেখক অপরিহার্য এবং সর্বজনীন আদর্শের পক্ষে। তিনি সত্য, সাহস এবং স্থিতিস্থাপকতার পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, ‘প্রথম রেসপনডার এবং সাহসী ব্যক্তিদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ যারা রুশদিকে সাহায্য করতে এবং হামলাকারীকে দমন করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন।’ এর পাসাহাপাশি নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ব্রিটেনের এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী।
২০০০ সালে নিউ ইয়র্কে চলে যান রুশদি। এরপরে ২০১৬ সালে আমেরিকার নাগরিকত্ব পান তিনি। সম্প্রতি জার্মানির স্টারন ম্যাগাজিনের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে রুশদি জানিয়েছিলেন এত বছর মৃত্যুভয়ের সঙ্গে জীবন কাটানোর পরে ধীরে ধীরে তাঁর জীবন স্বাভাবিক হচ্ছিল।