জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আসছে নতুন বছর। ২০২৩ সাল। বিদায় নিচ্ছে এই ২০২২। এই সময়টায় সারা পৃথিবী মেতে ওঠে ইংরেজি নববর্ষকে বরণ করে নেওয়ার উদযাপনে। চলছে ক্রিসমাসের আবহ। ক্রিসমাসের উৎসবের গা ঘেঁষাঘেঁষি করেই আসে নববর্ষ উদযাপন। বিদায়ী বছরটির চলে-যাওয়ার লগ্নে সাধারণ মানুষ সাধারণত কবির মতো  বলে ওঠে না, 'কী পাই নি , তারি হিসাব মিলাতে মন মোর নহে রাজি'! বরং সে হিসেবের খাতাটা আরও নিবিড় করে কোলে টেনে নেয়। দেখে-- কী রইল, কী গেল! দেখে-- কতটা অর্জন, কতটা ক্ষতি। সেটা দেখতে গিয়েই একবার সে ফিরে তাকায় বছরটির দিকে। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

'জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো'ও বিদায়ী বছরটির দিকে একবার তাকিয়ে দেখতে চায়। দেখতে চায় দেশে-বিদেশে, ঘরে-বাইরে কী কী বিশেষ ঘটনা গত ১২ মাসে ঘটল, যার অভিঘাত এখনও টাটকা, যার রেশ দীর্ঘদিন ধরে অনুভূত হবে জনজীবনে-যাপনে-মননে। আর সেটা দেখতে গিয়ে বিশ্বজুড়ে ঘটা অতি বিশেষ কিছু ঘটনার ছোট্ট একটা তালিকাও তৈরি করে ফেলা গিয়েছে। নতুন বছরে পা দেওয়ার আগে তাই একবার দেখে নেওয়া যাক, কী কী আছে সেই তালিকায়:


আরও পড়ুন: Rohingya Drowned: আন্দামান সাগরে ভয়ংকর নৌকাডুবি! প্রায় ২০০ রোহিঙ্গা শরণার্থীর মৃত্যু, নিখোঁজ অসংখ্য...


রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণ


অনেক ধানাইপানাই করে ভ্লাদিমির পুতিন শেষ পর্যন্ত মেনে নিয়েছেন, ইউক্রেনে রাশিয়া যা করেছে তা মোটেই  'স্পেশাল মিলিটারি অপারেশন' নয়, তা যুদ্ধই! ২০২২-এর ফেব্রুয়ারিতে সহসাই ইউক্রেনে হামলা করল রাশিয়া। ইউক্রেন তো অপ্রস্তুত ছিলই, গোটা বিশ্বও হকচকিয়ে গেল। প্রাথমিক বিস্ময় কেটে গেলে সকলেই বুঝল কাজটা রাশিয়ার পক্ষে ঠিক হয়নি, ইউক্রেনের প্রতি তাই সরব কিংবা নীরব সমর্থন জানিয়ে প্রায় গোটা বিশ্বই রাশিয়ার এই আচরণের নিন্দা করল, সমালোচনা করল, পুতিনকে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত পাকা করার আগে আর একবার ভাবতে অনুরোধ করল। রাশিয়া শোনেনি। তারপর জল অনেকদূর গড়িয়েছে। দু'দেশেরই অসংখ্য সেনা মারা গিয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ঘোষিত ভাবে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে। যুদ্ধকে ঘিরে বিশ্বে দেশগুলির মধ্যে নতুন করে সম্পর্কের সমীকরণ তৈরি হয়ে গিয়েছে। এখন, এই প্রায় ১ বছর যুদ্ধ চলার পরে শোনা যাচ্ছে, পুতিন নাকি যুদ্ধ দ্রুত শেষ করার কথা ভাবছেন। তিনি যা-ই ভাবুন, এই যুদ্ধের প্রেক্ষিতে বীরের সম্মান পাচ্ছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি। ছোট্ট একটা দেশ হিসেবে যে ভাবে তাঁরা এত বড় শক্তি রাশিয়ার সঙ্গে চোখে চোখ রেখে যুদ্ধ চালিয়ে গিয়েছে তাতে কোনও প্রশংসাই তাদের পক্ষে যথেষ্ট নয়। 


আরও পড়ুন: Winter Storm: ১০ ফুট বরফের তলায় মানুষ-ঘরবাড়ি-গাড়ি, হিমাঙ্কের ৪৫ ডিগ্রি নীচে তাপমাত্রা! তুষারযুগ ফিরল?


করোনার অস্তিত্ব-অনস্তিত্ব


যদিও ২০২২ সালের শেষের দিকে ফের চোখ রাঙাচ্ছে করোনা, তথাপি এটা বলতেই হয়, এই ২০২২-এর সব চেয়ে মনে রাখার মতো ঘটনা সম্ভবত করোনা-কবল থেকে মুক্তি পাওয়া। নিউ নর্মালের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সংস্করণের মধ্যে দিয়ে এই বছরেই মানুষ যেন একটু শ্বাস নেওয়ার অবকাশ পেল। কোনও নির্জনবাস নয়, মাস্ক নয়, সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংয়ের বাড়াবাড়ি নয়। টিকাকরণ মোটামুটি সম্পন্ন, সংক্রমণের হারও নিম্নমুখী, লকডাউন তো নয়ই, এমনকি কোয়ারেন্টাইনের ছায়াও নেই! দু'বছরের শ্বাসরোধী কড়াকড়ির পরে মুক্তির স্নিগ্ধ আবেশের স্পর্শ।  


জলবায়ুর জ্বালাযন্ত্রণা


জলবায়ু যে পরিবর্তিত হচ্ছে, তা অনেকদিন আগেই জানা গিয়েছে। কিন্তু ২০২২ সালটা এ বিষয়ে খুব স্পর্শকাতর একটা সময় হয়ে থেকে গেল। এবারের সর্বশেষ জলবায়ু সম্মেলনে ঠিক করা হয়েছে, যেসব দরিদ্রদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের কুফলের জেরে ভুগছে, সেই সব দেশকে নানা ভাবে সাহায্য় করবে ধনী দেশগুলি, আসলে যাদের অবিমৃশ্যকারিতাতেই ভুগছে গরিব দেশগুলি। কিন্তু তাতে পরিবেশের ঠিক কতটা উন্নতি হবে? জলবায়ুর ঠিক কতটা মেরামতি হবে? সময়ই বলবে।  


প্রখর দারুণ অতি...


ভয়াবহ তাপপ্রবাহের জন্য এ বছরটিকে সম্ভবত কোনওদিনই পুরোপুরি ভোলা যাবে না। ক্ষত রয়ে যাবে। জলবায়ু পরিবর্তনের জেরেই বিশ্ব জুড়ে এই তাপপ্রবাহ। ইউরোপ আমেরিকা যার জেরে পুড়েছে তীব্র দাবদাহে। মারা গিয়েছেন বহু মানুষ, ক্ষতি হয়েছে পরিবেশ ও গবাদিপশুরও। প্রযুক্তি ও আধুনিকতাই কি দায়ী?   



খরার খরদৃষ্টি


অল্পবিস্তর খরা পৃথিবীর সব দেশেই কোনও না কোনও সময়ে হয়েছে। কিন্তু ২০২২ সালটা যেন খরার বছর হয়েই রয়ে গেল। এমন সর্বব্যাপী সর্বগ্রাসী খরা আগে কখনও হয়েছে কি? তবে ইউরোপে খরাটা সব চেয়ে তীব্র আকার ধারণ করেছিল।  ৫০০ বছরে সেখানে এরকম খরা হয়নি। চিনেও খরার রূপ যথেষ্ট ভয়ংকর ছিল। সেখানে এর জেরে বড় বড় নদীগুলির জলস্তর ক্রমশ কমছিল। দুঃসহ একটা অবস্থা! 


জনসমুদ্রে নেমেছে জোয়ার 


২০২২-এর দারুণ তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা বিশ্বের জনসংখ্যা। এ বছর পৃথিবীর জনসংখ্যা ৮ বিলিয়ন পেরিয়ে গেল! মানে, এখন পৃথিবীতে ৮০০ কোটির বেশি মানুষ বসবাস করছেন! হিউম্যান রিসোর্সের দিক থেকে এটা খুব বড় একটা ধাপ। এই মাইলস্টোন ২০২২-কে চিরস্থায়ী করে রাখবে। 


রানির মৃত্যু এবং 


ব্রিটেনের রাজপরিবারে, রাজতন্ত্রে একটা যুগের অবসান হল। প্রয়াত হলেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। বালমোরাল ক্যাসেলে মৃত্যু হল তাঁর। তাঁর বড় ছেলে এবার চার্লস এবার রাজা। তাঁর পরিচয় এখন থেকে-- কিং চার্লস III। ৯৬ বছর বয়সে মৃত্যু হল রানির। ৭০টি বছর তিনি সিংহাসনে ছিলেন! রেকর্ড! পৃথিবীর নানা রাজনৈতিক সংকটে ও রাজপরিবারের নানা দুর্দিনেও অবিচল ভাবে রাজকার্য চালিয়ে যাওয়ার জন্য বিপুল ভাবে প্রশংসিত রানি।



ডাউনিং স্ট্রিটে 'ভারতীয়' ঋষি


এ বছরেই প্রথম অ-শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তি হিসবে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হয়ে ইতিহাস রচনা করেছেন ঋষি সুনাক। তাঁকে নিয়ে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা ভারতীয়দের গর্বের শেষ নেই। ঋষিই পরবর্তী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন এটা স্পষ্ট হওয়ার সময় থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারত ও পাকিস্তানি নেটিজেনরা তাঁকে নিয়ে গর্ব করতে শুরু করেছে। ঋষির জন্ম ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটনে হিন্দু-পঞ্জাবি পরিবারে। তাঁর ঠাকুর্দা-ঠাকুমা জন্মেছিলেন অবিভক্ত ভারতের পঞ্জাব প্রদেশের গুজরানওয়ালা শহরে। যে শহর এখন পাকিস্তানে। তাই পাকিস্তানি নেটিজেনরা ঋষি সুনাককে 'তাদের লোক’ বলে দাবি করতে শুরু করেছিল। যাই হোক, ১৯৩৫ সালে ঋষির ঠাকুর্দা রামদাস সুনাক নাইরোবিতে পাড়ি দিলেন। সেখানে কর্মজীবনও শুরু করলেন। তাঁর স্ত্রী সুহাগরানি প্রথমে দিল্লিতে এসেছিলেন, পরে ১৯৩৭ সাল নাগাদ তিনিও পাড়ি দিলেন কেনিয়ায়। সেখানেই দুজনের দেখা, বিয়ে। রামদাস ও সুহাগরানির ছয় সন্তান-- তিন ছেলে, তিন মেয়ে। ঋষি সুনাকের বাবা যশবীরের জন্ম হয়েছিল ১৯৪৯ সালে। ইংল্যান্ডের লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিসিন নিয়ে পড়াশোনা করার জন্য  ১৯৬৬ সালে যশবীর লিভারপুলে এসেছিলেন। ১৯৭৭ সালে যশবীরের সঙ্গে (ঋষির মা) উষার বিয়ে। এর তিন বছর পরে, ১৯৮০ সালে সাউদাম্পটনে জন্ম আজকের ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের।


অশান্ত ইরান 


মাশা আমিনি। সাম্প্রতিক ইরানে প্রতিবাদের মুখ হয়ে গেলেন তিনি। হিজাব না পরার অপরাধে ইরানে নীতিপুলিসের খপ্পরে পড়েছিলেন তিনি, হয়েছিলেন আটকও। পরে গ্রেফতার হয়ে পুলিসি হেফাজতে। এই পুলিসি হেফাজতেই তাঁর মৃত্যু। সরকার জানায়, আগে থেকে থাকা অসুস্থতার জেরেই মৃত্যু মাশার। এদিকে তাঁর মৃত্যুতে দেশে আগুন জ্বলে যায়। মানুষ বলেন, পুলিসি অত্যাচারেই মাশা আমিনির মৃত্যু ঘটেছে। তারপর থেকে ইরানে হিজাব-বিরোধী আন্দোলন ক্রমশ বড় আকার ধারণ করতে থাকে। বহু মানুষ, বিশেষত বহু মহিলা আন্দোলনে অংশ নেন; কেউ চুল কেটে দেন নিজের, প্রায় সকলেই হিজাব পরিত্যাগ করেন, প্রতিবাদস্বরূপ পরতে শুরু করেন খোলামেলা পোশাকও।  আন্দোলন থামাতে পারে না সরকার। পুলিসের সঙ্গে আন্দোলনকারীর তাই সংঘাত বাধে। মারা যান বহু সাধারণ মানুষ। ইরানের আগুন কিছুটা স্তিমিত হলেও এখনও তা পুরোপুরি নেভেনি। সরকার বরং কিছুটা পিছু হটেছে। ঘোষণা করেছে মরাল পুলিসিং বন্ধ করে দেওয়ার কথা। 



বিদ্রোহ আজ, বিদ্রোহ চারিদিকে...


২০২২ জুড়ে অশান্ত থাকল শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল। নেপালে অনেক টালমাটালের পরে অবশেষে নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছে। 'প্রচণ্ড' পুষ্পকুমার দাহাল এখন নেপালের প্রশাসনিক প্রধান। ভারতের নিকটতম প্রতিবেশী বাংলাদেশও গোটা ২০২২ জুড়েই সংকটে থাকল। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে। যার জেরে অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছিল বাংলাদেশও। ক্রমে সেই সংকট কাটিয়ে উঠছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানেও তীব্র রাজনৈতিক সংকট। ইমরানকে ঘিরে সেখানে ভয়ানক অস্থিরতা দেখা গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রিত্ব থেকে সরে যাওয়ার পরেও ইমরানকে নিয়ে বিতর্ক এতটুকু কমেনি। নানা সংকটে জর্জরিত ছিল শ্রীলঙ্কাও। উত্তপ্ত শ্রীলঙ্কার নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে। দেশটির অষ্টম রাষ্ট্রপতি রনিল। আগের রাষ্ট্রপতি গোটাবায়া রাজাপক্ষে সঙ্কট-বিধ্বস্ত দেশ থেকে পালিয়ে যান, পদত্যাগও করেন। শ্রীলঙ্কার আর্থিক পরিস্থিতি চরমে উঠেছিল। দেশের দুরবস্থার জন্য বিক্ষোভ দেখিয়েছেন রাজাপক্ষেরই দলের লোকজন। খুন হয়েছেন শাসকদলের সাংসদ। কলম্বোয় সরকারবিরোধী বিক্ষোভে পুলিসের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হন বহু মানুষ। অনেক প্রতিবাদ প্রতিরোধের পথ ধরে শ্রীলঙ্কায় স্থিতি এসেছে। 



মাস্ক ও ট্যুইটারের ট্যুইস্ট 


এলন মাস্ক আর ট্যুইটার এবছর প্রায় গোটা সময়টা জুড়ে খবরে থেকেছে। ট্যুইটার কিনে নেওয়ার পর থেকেই একের পর এক বিতর্ক তৈরি হয়েছে এর মালিক এলন মাস্ককে ঘিরে। কখনও কর্মীছাঁটাই, কখনও ট্যুইটের ব্লুটিকের জন্য চার্জের দাবি করে খবরে থেকেছেন মাস্ক। এবার তাঁর করা একটি ট্যুইট ঘিরে তৈরি হল জল্পনা। ট্যুইটারে একটি ভোট করেছেন মাস্ক। সেখানে তিনি প্রশ্ন করেছেন, আমার কি ট্যুইটার প্রধানের পদ থেকে সরে যাওয়া উচিত? পরের একটি ট্যুইটেই আরও চমক মাস্কের। লিখছেন-- খুব ভেবেচিন্তে ভোট দেবেন। কারণ আপনি যা চাইছেন তা হতেও পারে। অর্থাৎ, ট্যুইটার ও এলন নিজে এখনও ভীষণ ভাবে খবরে, হয়তো আসন্ন নতুন বছরেও থাকবেন। 


মন্দা-আক্রান্ত বিশ্ব-কোষ


রিশেসন, ইনফ্লেশন, মন্দা-- ২০২২ জুড়ে শব্দগুলি বারবার শোনা গিয়েছে। মূল্যবৃদ্ধি ঘিরে বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অবশ্য ছিলই। বলা হয়েছিল, চলতি অর্থবর্ষে খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার ৭.১ শতাংশে পৌঁছতে পারে। গোটা ২০২২ সালে বিশ্ব জুড়েই মন্দার আবহ। বড় বড় কর্পোরেটগুলি দৃষ্টান্তমূলক ছাঁটাই সেরেছে। লে-অফ নিয়ে বহু বিতর্ক, বহু ক্ষোভ। কিন্তু কিছুই শুনতে চাইছে না তারা। এমনকী তাদের কেউ কেউ আগাম মন্দার কথাও বলছে। যেমন, জেফ বেজোস মন্দার কথা শুনিয়েছেন। কেন এ পরিস্থিতি? করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রভাব আছেই। সঙ্গে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং চিন-তাইওয়ান সংঘাতের আবহ। বহু দেশে রাজনৈতিক সংকট। সবটা মিলিয়েই মূল্যবৃদ্ধি। তবে ভারতের জন্য আশার কথাই শুনিয়েছে বিশ্বব্যাংক। তারা বলছে, আর্থিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ভারতের সম্ভাবনা ‘ইতিবাচক’। প্রকাশিত হয়েছে ‘ইন্ডিয়া ডেভেলপমেন্ট আপডেট’। সেখানে পূর্বাভাস, চলতি অর্থবর্ষে (২০২২-২৩) ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার ৬.৯ শতাংশ হতে পারে। 


অশোভন শোভরাজ


তাঁর পরিচয় 'নটোরিয়াস সিরিয়াল কিলার'। নাম-বিশেষণের শেষ নেই-- 'স্প্লিটিং কিলার', 'দ্য সার্পেন্ট'। সত্তর-আশির দশকে এলিট সমাজের ক্রিম স্তরের সুন্দরীদের কাছে ভয়ংকর এক ত্রাস ছিলেন। হঠাৎই, এই ২০২২ সালের শেষ লগ্নে তাঁর নাম ফের সামনে উঠে এল। একাধিকবার পুলিসের খপ্পরে পড়েছেন, একাধিকবার জেল ভেঙে পালিয়েছেন। কাঠমান্ডুর জেলে বন্দি ছিলেন। সম্প্রতি ছাড়া পেয়েছেন। এখন প্যারিসে। কে তিনি? তিনি কুখ্যাত বিকিনি কিলার চার্লস শোভরাজ! হয়তো আজও তাঁর নাম শুনলে সুন্দরীদের শিরদাঁড়া দিয়ে বয়ে যায় ঠান্ডা স্রোত। অসুস্থতার কারণে মানবিকতার খাতিরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বহু দেশেই তাঁর প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।  
 
নীলসাদার বিশ্ব-জয়


এ বছরের একেবারে শেষের দিকে সব চেয়ে মনে রাখার মতো ঘটনা সম্ভবত বিশ্বকাপ, কাতারের ফুটবল বিশ্বকাপ। কাতারের মতো ছোট্ট একটি দেশ, যাদের ফুটবল ঐতিহ্যও তেমন নেই তারা বিশ্বকাপ ফুটবলের মতো এত বড় একটা ইভেন্ট ঠিক ভাবে আয়োজন করতে পারবে কি না, এ নিয়ে বহু সংশয় ছিল। সেই পরীক্ষায় তারা লেটার মার্কস নিয়ে পাশ করেছে। এ তো গেল আয়োজনের ক্যাটেগরি। খেলা? হ্যাঁ, খেলার মাঠে, খেলার আসরে চেয়ে মনে রাখার মতো ঘটনা ৩৬ বছর পরে আর্জেন্টিনার কাপ জয়। আর্জেন্টিনার ফুটবলজগতে মারাদোনা-যুগের অবসান ঘটেছে আগেই। প্রয়াত হয়েছেন ফুটবল ঈশ্বর। কিন্তু ১৯৯৪ সালেই তো তিনি শেষ বারের মতো বিশ্বকাপের আসরে বলে পা ঠেকিয়েছিলেন। তারপর? তারপর থেকে কাপের খরা। লিও মেসির মতো মহাপ্রতিভাও এতদিন তাঁর দেশকে কাপ দিতে পারেননি, কাপের একেবারে সামনে থেকে ফিরে যেতে হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু এই ২০২২ সালেই সব প্রতীক্ষা, সব আকাঙ্ক্ষার অবসান-- বলা ভালো স্বপ্ন সত্যি হল! সত্যি করলেন মেসিই। জীবনের শেষ বিশ্বকাপে ফুটবলের সব চেয়ে বড় আসরে নিজের অতুলনীয় সৃষ্টিশীল ও সুন্দর ফুটবলের নিদর্শন রেখে নিজে গোল্ডেন বল তো জিতলেনই, পাশাপাশি দেশবাসীকে উন্মাদনা ও উচ্ছ্বাসের সাগরে ছুঁড়ে দেশের জন্য বিশ্বকাপটিও জিতে নিলেন। দেশের জন্য নতুন রেকর্ডও গড়লেন-- আর্জেন্টিনা এবার থেকে তিন বার বিশ্বকাপজয়ী একটি দেশের মর্যাদা পাবে। মেসি-প্রতিভার ছোঁয়ায় নীলসাদা জার্সির দেশ এখন এলিট ক্লাবে। 


 (Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)