জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: চাইল্ড ম্যারেজ বিশ্ব জুড়ে এক সামাজিক অভিশাপ। এ নিয়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচি চলছেই দেশে দেশে। কিন্তু তা সত্ত্বেও এই বিষয়টিকে নির্মূল করা যাচ্ছে না সমাজ থেকে। নির্মূল করা তো দূরের কথা, দেখা যাচ্ছে এটি বিশ্বের অনেক দেশেই বেশ ভালো রকম শিকড় ছড়িয়েছে। যেমন বাংলাদেশে। সেখানে বাল্য বিবাহ সাংঘাতিক আকার ধারণ করেছে। সাধারণত ১৮ বছরের কম বয়সি মেয়েদের বিয়ে দেওয়া আইনত অপরাধ। কিন্তু, আইনকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বাংলাদেশে ৫১ শতাংশ মেয়েরই বিয়ে হয় শৈশবেই! বাল্যবিবাহ নিয়ে UNICEF-এর সম্প্রতি প্রকাশিত এক সমীক্ষা থেকে এমনই তথ্য উঠে এসেছে। জানা গিয়েছে, বাল্যবিবাহে (Child Marriage) দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে বাংলাদেশ (Bangladesh), বিশ্বে অষ্টম। 

 


 

ইউনিসেফ-এর তথ্য বলছে, বাংলাদেশে ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগেই ৩ কোটি ৪৫ লক্ষ মেয়ের বিয়ে হয়ে যায়! আর বয়স ১৫ বছর হওয়ার আগে বিয়ে হয় ১ কোটি ৩ লক্ষ কিশোরীর। বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট এই বিষয়ে বলেন, শিশুদের বিয়ে দেওয়া উচিত নয়। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সত্ত্বেও সেখানে শিশুবধূর সংখ্যা বিস্ময়কর। আর এ। মধ্যে দিয়ে লক্ষ লক্ষ মেয়ের শৈশব কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।

 


 

ইউনিসেফ-এর তথ্যে প্রকাশিত, বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে সবচেয়ে 'এগিয়ে' সাহারা আফ্রিকার দেশগুলি। এই মুহূর্তে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৬৪ কোটি মেয়ের বিয়ে হয়েছে তাদের ছোটবেলায়। তবে ২০৩০ সালের মধ্যে তারা বিশ্ব জুড়ে বাল্যবিবাহ অবসানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে বলে উল্লেখ করেছে।

 

কেন এরকম ঘটছে

 

মূলত অর্থনৈতিক সংকটের জন্যই সংশ্লিষ্ট দেশগুলিতে এরকম হচ্ছে। অর্থনৈতিক কারণেই পরিবারগুলি তাড়াতাড়ি মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দিতে চায়। 

এদিকে সাবালিকা হওয়ার আগেই মেয়েদের বিয়ে হলে গর্ভধারণের ক্ষেত্রেও অতিরিক্ত ঝুঁকি থেকে যায় বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন শেলডন ইয়েট। তাঁর মতে, অল্প বয়সে বিয়ে হলে এবং অন্তঃসত্ত্বা হলে শিশু ও পাশাপাশি মায়েরও মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ে। এছাড়া কম বয়সে বিয়ে হওয়ার এই ব্যাপারটি ওই মেয়েদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপরেও প্রভাব ফেলতে পারে। তাই মেয়েরা যাতে স্কুলে যেতে পারে এবং নিজের মধ্যে থাকা সম্ভাবনা অনুযায়ী স্বাধীন ভাবে বেড়ে উঠতে পারে সেদিকে নজর দেওয়া জরুরি।