নিজস্ব প্রতিবেদন : অতি বাস্তববাদী মানুষও মায়ার বাঁধনের সামনে তুচ্ছ। ভালবাসা ও স্নেহ মানে না কোনও যুক্তি-তর্ক। আর তাই ইঞ্জিনে ডিম-সহ পাখির বাসা দেখে আর ট্রাক চালু করতে পারেননি তুরস্কের ট্রাকচালক বাহাতিন গুরসি। ডিম ফুটে বাচ্চাগুলি উড়ে যাওয়া পর্যন্ত ট্রাক নড়বে না, নিয়ে নেন সিদ্ধান্ত। হোক না তা এক মাত্র আয়ের উত্স। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারার কাছেই একটি ছোট্ট শহরে বাড়ি বাহাতিন গুরসির।বাহাতিনের সংসার চলে ট্রাক চালিয়ে। আশেপাশের বড় বড় শহরগুলিতে মাল পরিবহনের কাজ করেন তিনি। এ বছর ইদের ছুটিতে বাড়ি ফেরেন বাহাতিন। বাড়ির সামনে খোলা জায়গায় রেখে দেন তাঁর ট্রাক। তখনই ট্রাকের ইঞ্জিনে বাসা বাঁধে একটি ছোট্ট মা পাখি। সেই বাসায় পাড়ে ডিমও। অবশ্য পুরো বিষয়টাই অজানা ছিল ট্রাকচালকের। ছুটি শেষে ট্রাক নিয়ে বের হতে গিয়েই প্রথম তিনি বিষয়টি লক্ষ্য করেন। ট্রাকের ইঞ্জিনে দেখেন আস্ত একটি পাখির বাসা। আর তাতে বেশ কয়েকটি ডিম। আশে পাশে মা পাখিটিকেও দেখতে পাননি তিনি। ট্রাক চালু করলেই ইঞ্জিনের ঝাঁকুনিতে ভেঙে যাবে বাসা। নষ্ট হবে ডিম। তখনই মনস্থির করে ফেলেন বাহাতিন। যত দিন না ডিম ফুটে বাচ্চাগুলি বড় হয়ে উড়ে যাবে না, তিনিও ট্রাক চালাবেন না। তার এই সিদ্ধান্তে সহমত হল তার পরিবারও।


আরও পড়ুন-  ‘কীসের জন্য পুরস্কার পেয়েছিলেন যেন!’, নোবেল বিজেতা সমাজকর্মীকে প্রশ্ন করে বসলেন ট্রাম্প



যেমন ভাবা তেমন কাজ। শুরু হল অপেক্ষা। এলাকার বাচ্চারা যাতে বাসাটির কাছে না যায়, সেই দিকে ছিল তাঁর কড়া নজর। একসময়ে ডিম ফুটে বাচ্চা হয়। ৪৫ দিন বাদে বাচ্চাগুলি উড়তে শিখলে তাদের নিয়ে বাসা ছেড়ে উড়ে যায় মা পাখি। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন বাহাতিন। এত দিন ট্রাক না চলায় আয় বন্ধ ছিল তাঁর। ফিরিয়ে দিয়েছেন মোটা টাকার ভাড়ার বায়নাও। তাই এবার ট্রাক নিয়ে আবার বের হতে উত্সাহী তিনি। পাশাপাশি ছোট্ট পাখিগুলিকে বড় হওয়ার সুযোগ দিতে পেরেও খুশি তিনি। 


আরও পড়ুন-  পড়ে যেতে পারে গবাদি পশুর দাম, আশঙ্কায় কোরবানির ইদের আগে ভারত থেকে গরুপাচার নিষিদ্ধ করল বাংলাদেশ সরকার


তুরস্কের সংবাদমাধ্যমে বাহাতিনের এই মানবিকতার কাহিনী প্রকাশ্যে আসে। তার পরেই প্রশংসার জোয়ারে ভাসছেন বাহতিন। অবশ্য এই নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ তিনি। অনেকদিন পর আবার কাজে ফিরতে পেরে খুশি তিনি। "সোমবার (১৫ জুলাই) বাচ্চাদের নিয়ে উড়ে গেছে পাখিটা। এবার আমি আবার আয় করতে পারব। আমি খুব খুশি।"  খুশি তাঁর ছোট মেয়ে আয়সিমাও। পাখিগুলিকে ধন্যবাদ জানিয়ে সে বলল, ''ওরা বাসা বানাল বলেই একসঙ্গে এত দিন বাবাকে কাছে পেলাম। আমি খুব খুশি। বাবাকে আমি ভালবাসি।"