ওয়েব ডেস্ক: সূর্য উঠলেই শরীর জ্বলে। জলে জুড়ায় জ্বলন। তাই ভোর থাকতেই পুকুরে ডুব দেন কাটোয়ার পাতুরানী ঘোষ। বুক জলে দিন কাটিয়ে রাতে ঘরে ফেরেন। ডাক্তাররা বলছেন মনোরোগ। গ্রামবাসীরা এই অদ্ভুতুড়ে কাণ্ডে ভুতের সন্ধান করছেন। পাতুরানী ঘোষ হেসে বলছেন রোগ কোথায়--জলেই তো তাঁর রোগ সারছে।সূর্য যখন জবা কুসুমের রং ধারণ করে। ফের যখন পশ্চিম আকাশে দিগন্ত বিস্তৃত লালিমায় বিদায় জানায়। সেই বিস্তীর্ণ সময়টা বড় খারাপ কাটে পাতুরাণী ঘোষের। সে এক জ্বালা। গোটা শরীর জুড়ে লাল পিপড়ের মারণ কামড়। জ্বলনে টেকা দায়। মন বলে মরণ হয়না কেন। আবার সেই মনই ভরা সংসারের আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধন মনে করায়। কলমির গন্ধ মাখা পুকুরে, গুগলি খোঁজা হাঁসের মত বেঁচে থাকার আনন্দ খুঁজে পান পাতুরানী। এখন বয়েস হয়েছে ঢের। পশ্চিম দিগন্তের মরা আকাশ থেকে ডাক আসে  মাঝে মধ্যেই, তবু পুকুরের তরঙ্গহীন গহন শীতলতায় বিশল্যকরণীর সন্ধান পান পাতুরানী ঘোষ।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন জল মানে জীবন হলে সলিলের আবার মৃত্যু হয় নাকি!


কাটোয়ার গোয়াই গ্রামে মেয়ের বাড়িতে থাকেন। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই এই অসূর্যংস্পর্শা রোগ।  তাও কুড়ি বছর হয়ে গেছে। রোগ সারেনা। সূর্য উঠলেই জলে আস্তানা। জলই ভালো রাখে। শুধু কী তাই? পাতুরানী ঘোষ ভাল আছেন কম খেয়ে। বলা ভাল না খেয়েই। বলেন, খেতে ইচ্ছে করে না, খিদে পায় না। কখনও সামান্য মুড়ি, মাস দুয়েক পরে হয়তো বা একটু ভাত।  মেয়ের সংসারে থাকা বিধবা পাতুরানী কি অবাঞ্ছিত জীবন থেকে  মুক্তি পেতে চেয়েছিলেন মৃত্যু। বাঁচার ছলনায়, না খেয়ে, পুকুরে শীতলতায় আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন। আর অদ্ভুত ভাবে সেটাই হয়ে দাঁড়িয়েছে  তাঁর অদ্ভুত জীবন। চিকিত্‍সকরা বলছেন মনরোগ।চিকিত্‍সক বলুন বিজ্ঞানের কথা, যুক্তিবাদি খুঁজুক জীবন রহস্য। পাতুরানী কিন্তু জীবনের স্বাদ খুঁজে পেয়েছেন সূর্য এড়ানো পুকুরের জলভেজা মগ্নতায়। পাঁতুরানী বেঁচে আছেন।


আরও পড়ুন  কূলের ভূষণ কতটা রাখছেন শ্রুতি!