ওয়েব ডেস্ক:২০১৩-র ৭ জুন থেকে ২০১৬-র ২৮ জানুয়ারি। ২ বছর ৭ মাস ২১ দিনের মাথায় বিচার পেতে চলেছে কামদুনি। মাঝের এই সময়টায় ঘাত-প্রতিঘাত এসেছে বারবার। শাস্তি চাই। বারবার গর্জে উঠেছে কামদুনি।  সেই প্রথম দিন থেকে। তাড়াতাড়ি বিচারের আশ্বাস দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছিলেন, 'পনেরো দিনে চার্জশিট। এক মাসে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে বিচার।'


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

তবু বিচারের বাণী ঘোষণা হতে লেগে গেল প্রায় ২ বছর ৮ মাস। মাঝের এই সময়টা নানা ভাবে দীর্ঘায়িত হয়েছে বিচার প্রক্রিয়া।
১. কামদুনি গণধর্ষণ ও খুনের মামলায় মোট ৩৩ জন সাক্ষী। তাঁদের বয়ান নিতে গিয়ে পেরিয়েছে দীর্ঘ সময়।
২. বারাসত কোর্টে মামলা শুরু হলেও, অভিযুক্তদের নিরাপত্তার স্বার্থে পরে তা নগর দায়রা আদালতে সরানো হয়। অভিযোগ, তারপর থেকেই সাক্ষীদের হাজিরায় ভাঁটা পড়তে শুরু করে। কাজকম্ম ফেলে বারবার কামদুনি থেকে উজিয়ে নগর দায়রা আদালতে আসা, অনেক সাক্ষীর পক্ষেই সম্ভব হোত না। দীর্ঘ পথে নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কাও ছিল গরহাজিরার বড় কারণ।
৩. কামদুনির ঘটনার দুই প্রত্যক্ষদর্শী নিহত নির্যাতিতার কাকা আর ভাই। মামলা চলাকালীন কাকার আকস্মিক মৃত্যুতে বিচারপ্রক্রিয়া ধাক্কা খায়। দুহাজার তেরোর সাতই জুন বাসস্ট্যান্ডে নামার পর শেষবারের মতো ছাত্রীকে দেখেছিলেন তাঁর কাকা। পরে নগর দায়রা আদালতের সামনে বিক্ষোভ দেখানোর সময় পুলিসের লাঠিতে জখম হন তিনি। কয়েকদিনের মধ্যেই ছাত্রীর কাকার মৃত্যু হয়।


এরপর ভরসা বলতে ছিল নিহত ছাত্রীর ভাই। ঘটনার দিন রাত সাড়ে আটটা নাগাদ সে-ই প্রথম দিদির রক্তাক্ত দেহ আবিষ্কার করে। কামদুনির ঘটনার পর সরকারি চাকরি পেয়েছে ছাত্রীর ভাই। জেলা পরিষদে চাকরি পেয়েছেন ছাত্রীর বাবা। কামদুনির বাড়ি ছেড়ে অন্য গ্রামে চলে গেছে গোটা পরিবার। একটি মেয়ের মৃত্যুকে ঘিরে যে একতা রচনা হয়েছিল, অনেকদিনই তাতে চওড়া ফাটল। কামদুনিবাসীর একাংশের অভিযোগ, সরকারি চাকরি পাওয়ার পর থেকেই শাসকের চাপে বিচারের লড়াই থেকে অনেকটাই নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছে পরিবার।


প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ টাকা রোজগার। এমন বাড়িতে এত বড় ঘটনা। নিখরচায় মামলা লড়তে এগিয়ে এসেছিলেন জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়, শীর্ষেন্দু সিংহ রায়ের মতো আইনজীবীরা। কিন্তু একটা সময় তাঁরাও হতাশ হয়ে পড়েন। অভিযোগ, কামদুনি মামলার পরের দিকের শুনানিগুলোয় অনেক সময়ই হাজির হতেন না ছাত্রীর ভাই। এভাবেই একের পর এক গোঁত্তা। অনেক বাধা পেরিয়ে এবার বহু প্রতীক্ষার রায় ঘোষণা।