কাল শুরু মাধ্যমিক, চক্রান্তের আশঙ্কা খোদ শিক্ষামন্ত্রীর

মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে চক্রান্ত আশঙ্কার কথা বললেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। আগামিকাল, সোমবার থেকে শুরু হতে চলেছে মাধ্যমিক। এত বড় পরীক্ষার আগে ব্রাত্য বসুর বিতর্কিত মন্তব্য, যা চলছে তাতে যা কিছু হতে পারে। সাংবাদিকদরা তখন তাঁকে প্রশ্ন করেন আপনি কি প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার আশঙ্কা করছেন। ব্রাত্য বসু বলেন, বেকার ছেলেমেয়েদের চাকরির জন্য পরীক্ষা আটকাতে যদি আদালতে যাওয়া হয়, তাহলে মাধ্যমিকেও এমন হতেই পারে। তবে তিনি বলেন, সব রকম চক্রান্ত ঠেকাতে প্রশাসন তৈরি।

Updated By: Feb 24, 2013, 06:19 PM IST

মাধ্যমিক শুরুর কয়েকঘন্টা আগে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য ঘিরে এবার বিভ্রান্তি ছড়াল। শিক্ষামন্ত্রী বললেন, পরীক্ষার সময় নাশকতামূলক বা চোরাগোপ্তা কিছু হতে পারে। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, পরীক্ষা শুরুর কয়েকঘন্টা আগে যখন রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী নিজেই আশ্বস্ত নন তখন কিভাবে প্রায় দশ লক্ষ সাইত্রিশ হাজার পরীক্ষার্থী সোমবার শান্তমনে পরীক্ষা দিতে যাবে ?
সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে এবছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা। প্রায় দশ লক্ষ সাঁইত্রিশ হাজার পরীক্ষার্থী এবছর জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় বসছেন। নির্বিঘ্নে পরীক্ষার জন্য প্রশাসনের সব স্তরেই বৈঠকও সেরে ফেলেছে মধ্য শিক্ষা পর্ষদ। কিন্তু পরীক্ষা শুরুর কয়েকঘন্টা আগে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী আশঙ্কা প্রকাশ করলেন অন্যরকম।
 
শিক্ষামন্ত্রীর দাবি ইতিমধ্যেই এইসব বিষয়ে প্রশাসনকে সতর্ক থাকতেও তিনি বলেছেন। এমনকি মুখ্যসচিবের সঙ্গেও কথা বলেছেন। কিন্তু  প্রশ্ন উঠেছে--কিসের ভিত্তিতে শিক্ষামন্ত্রী নাশকতার অভিযোগ তুলছেন ? তবে কি সরকারের কাছে নির্দিষ্ট কোনও তথ্য আছে?  যদি তথ্য থাকে তাহলে সরকার কেন সেক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিল না ? কেন পরীক্ষার কয়েক ঘন্টা আগেও আশ্বস্ত নন শিক্ষামন্ত্রী ?
 
অনেকে অবশ্য  মনে করছেন গতবারের মাধ্যমিকের প্রথম দিনে ভুল প্রশ্ন বিলি করে রীতিমত প্রশ্নের মুখে পড়েছিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।  স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষাতেও রীতিমত সমস্যা হয়েছিল। তাই এধরেনর অভিযোগ তুলে সরকার আসলে এবার আগেভাগেই নিজেদের পিঠ বাঁচানোর চেষ্টা করছে। যদি তাই হয়, তাহলে রাজনীতির এই দাবার চালে কেন পরীক্ষার্থীদের বলি করে  এভাবে তাদের উদ্বেগ বাড়ালেন শিক্ষামন্ত্রী সে বিষয়ে রীতিমত সরব শিক্ষাবিদরা।
 ইদানিং যেকোন ঘটনা ঘটলেই চক্রান্তের তত্ত্ব তুলে ধরেন রাজ্যের মন্ত্রীরা। যে চক্রান্ত তত্ত্বের জন্ম দিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ধর্ষণকাণ্ড থেকে দলীয় অন্তর্কলহ কিংবা অগ্নিখাণ্ডের ঘটনা সবতেই চক্রান্ত তত্ত্ব খাঁড়া করে রাজ্যের শাসক দল। এবার সেই চক্রান্ত তত্ত্ব থাবা বসালও মাধ্যিমক পরীক্ষাতেও। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষার আগে ছাত্র ছাত্রী থেকে অভিভাবকরা যখন কিছুটা টেনশন, তখন শিক্ষামন্ত্রীর এ হেন বিভ্রান্তমূলক মন্তব্য সেই টেনশনকে বাড়িয়ে দেবে।
তথ্য প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করেই এবছরের মাধ্যমিকের গন্ডি পেরোতে চাইছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। আগামীকাল শুরু হচ্ছে  এবছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা। পরীক্ষার্থী প্রায় দশ লক্ষ সাঁইত্রিশ হাজার।
ভুল প্রশ্নপত্র বিলিকে কেন্দ্র করে গতবার মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথমদিনেই রীতিমত বিভ্রান্তি দেখা দেয়। একাধিক বিষয়ের প্রশ্নপত্রে ভুল ছিল। এধরনের সমস্যা এড়াতে এবছর শুধু প্রশাসন বা নিজেদের কর্মীদের ওপর ভরসা রাখছে না মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।  তথ্য প্রযুক্তিকে পর্ষদ নিজেদের মূল হাতিয়ার করেছে।
প্রায় আড়াই হাজার মূল পরীক্ষা কেন্দ্রের মধ্যে ১৬০০টি কেন্দ্রের সঙ্গে সরাসরি এস এম এস-এর মাধ্যমে যোগাযোগ রাখা হবে পর্ষদের মূল ভবন থেকে। মোট তিনবার এস এম এসের মাধ্যমে তথ্য নেওয়া হবে এইসব কেন্দ্র থেকে। প্রথমবার জানা হবে কেন্দ্রগুলিতে সঠিক সময়ে প্রশ্ন পৌঁছেছে কিনা। দ্বিতীয়বার জানা হবে সঠিক সময়ে পরীক্ষা শুরু করা গেছে কিনা। আর তৃতীয়বার জানা যাবে সঠিক সময়ে শান্তিপুর্ণভাবে পরীক্ষা শেষ করা গেছে কিনা। পরীক্ষা সুষ্ঠভাবে চালানোর ক্ষেত্রে সব জায়গায় মানুষের ওপর ভরসা করে বিশেষ ফল পায়নি পর্ষদ। তাই তথ্য প্রযুক্তিকেই মূল ভরসা করে এবার মাধ্যমিকে পাশ করতে চাইছে পর্ষদ।      

.