সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম নয়, বাম নেতাদের প্রতি অসন্তোষই ২০১১ সালে `পরিবর্তন`-এর মূল কারণ, বলছে সমীক্ষা

২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক পালাবদলের কারণটা কী? বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ প্রণব বর্ধনের নেতৃত্বে এক বৈজ্ঞানিক সমীক্ষায় তারই সন্ধান করেছেন ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউটের গবেষকরা। তাতে দেখা যাচ্ছে, বহু কথিত সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম নয়, স্থানীয় বাম নেতৃত্বের সম্পর্কে ভোটারদের অসন্তোষই রাজনৈতিক পরিবর্তনের বড় কারণ। স্থানীয় নন এমন রাজনৈতিক নেতৃত্বের ক্ষেত্রেও তৃণমূলের তুলনায় বামেদের সম্পর্কে মানুষের অসন্তোষ ছিল অনেক তীব্র। ভোটারদের বয়স, পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতি বা টেলিভিশনের মতো মিডিয়ার প্রভাব, খুব একটা উল্লেখযোগ্য নয় বলে ওই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে।

Updated By: Dec 27, 2013, 09:26 PM IST

২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক পালাবদলের কারণটা কী? বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ প্রণব বর্ধনের নেতৃত্বে এক বৈজ্ঞানিক সমীক্ষায় তারই সন্ধান করেছেন ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউটের গবেষকরা। তাতে দেখা যাচ্ছে, বহু কথিত সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম নয়, স্থানীয় বাম নেতৃত্বের সম্পর্কে ভোটারদের অসন্তোষই রাজনৈতিক পরিবর্তনের বড় কারণ। স্থানীয় নন এমন রাজনৈতিক নেতৃত্বের ক্ষেত্রেও তৃণমূলের তুলনায় বামেদের সম্পর্কে মানুষের অসন্তোষ ছিল অনেক তীব্র। ভোটারদের বয়স, পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতি বা টেলিভিশনের মতো মিডিয়ার প্রভাব, খুব একটা উল্লেখযোগ্য নয় বলে ওই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে।

অর্থনীতিবিদ প্রণব বর্ধনের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক পরিবর্তনের গবেষণায় শরিক ছিলেন আইএসআইয়ের সন্দীপ মিত্র এবং বোস্টন ইউনিভার্সিটির দিলীপ মুখার্জি ও অনুষা নাথ। দুহাজার এগারো সালের মে`তে পালা বদলের মাস চারেক পর উননব্বইটি গ্রামে মোট দুহাজার চারশো ভোটারের ওপর এই সমীক্ষা চালানো হয়। এই ভোটারদের ওপরই দুহাজার তিন -চারেও একই ধরণের সমীক্ষা করা হয়েছিল। বর্তমান সমীক্ষা এর তুলনামূলক ফল।

সমীক্ষায় দেখা হচ্ছিল, ভোটার মানসে প্রশাসনের ব্যর্থতা নাকি ভোটারদের চরিত্রগত পরিবর্তন, কোনটা রাজনৈতিক পালাবদলের জন্য দায়ী।

সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, তরুণ ভোটারদের অনুপাত বাড়ার কোনও প্রভাব ভোটের ফলে নেই। টেলিভিশন দেখা বাড়লেও তার ফল ভোটের ওপর পড়েছে এমন প্রমাণও নেই।
পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতিতে বামেদের তুলনায় বেশি সুফল পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।

স্থানীয় এবং দূরবর্তী রাজনৈতিক নেতাদের সম্পর্কে ভোটারদের মনোভাবের কথা সমীক্ষায় জানতে চাওয়া হয়েছিল। তাতে দেখা যাচ্ছে,

স্থানীয় স্তরে তৃণমূলের তুলনায় বামপন্থী নেতাদের প্রতি মানুষের ক্ষোভ অনেক বেশি ছিল। ক্ষোভের কারণ, এলাকার উন্নয়নে মানুষের অংশগ্রহণের অভাব। দুর্নীতি।
রাজনৈতিক সংগঠন।তুলনায় দুদলের মধ্যে যে বিষয়গুলিতে মানুষ বিশেষ ভেদাভেদ দেখেননি তা হল, নেতাদের যোগ্যতা। কাজের উদ্যম। মানুষের সঙ্গে সহমর্মিতা।

বড় নেতাদের ক্ষেত্রেও তৃণমূল কংগ্রেসের তুলনায় বাম নেতাদের উপর মানুষের ক্ষোভ অনেকটাই বেশি ছিল বলে সমীক্ষায় ধরা পড়েছে। এর কারণ হিসেবে উঠে এসেছে,
দলীয় সংগঠন, কার্যকলাপ ও নীতি। মহিলাদের সম্পর্কে মনোভাব। রাজনৈতিক নেতাদের জনসংযোগ।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই সিঙ্গুর নন্দীগ্রামকে ২০১১ সালে বামফ্রন্টের বিপর্যয়ের বড় কারণ বলে মনে করেন। এই সমীক্ষায় কিন্তু দেখা গিয়েছে এগুলি স্থানীয় ইস্যু। দেড়শো কিলোমিটারের বেশি দূরে এগুলোর কোনও প্রভাবই ভোটারদের ওপর পড়েনি।

.