তদন্তের নাগাল পাচ্ছে না সিআইডি, দারস্থ কলকাতা পুলিসের

গার্ডেনরিচে এসআই হত্যার তদন্তভার কলকাতা পুলিসের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে সিআইডিকে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সরকারের সেই সিদ্ধান্তে তখনই বিপাকে পড়ে গিয়েছিল রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা। গার্ডেনরিচ কাণ্ডের তদন্তে এখনও অন্ধকারে থাকা সিআইডি শেষ পর্যন্ত সেই কলকাতা পুলিসের কাছেই সাহায্য চাইতে বাধ্য হল।

Updated By: Feb 17, 2013, 07:56 PM IST

গার্ডেনরিচে এসআই হত্যার তদন্তভার কলকাতা পুলিসের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে সিআইডিকে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সরকারের সেই সিদ্ধান্তে তখনই বিপাকে পড়ে গিয়েছিল রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা। গার্ডেনরিচ কাণ্ডের তদন্তে এখনও অন্ধকারে থাকা সিআইডি শেষ পর্যন্ত সেই কলকাতা পুলিসের কাছেই সাহায্য চাইতে বাধ্য হল।
১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩। দিঘা থেকে কলকাতা ফিরলেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই দিনই তাঁর নির্দেশে পুলিস কমিশনারের পদ থেকে সরলেন রঞ্জিত্ কুমার পচনন্দা। সেই সঙ্গে গার্ডেনরিচকাণ্ডের তদন্তভার কলকাতা পুলিসের হাত থেকে নিয়ে সিআইডিকে দেওয়া হয়।
 
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, গার্ডেনরিচকাণ্ডে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেরি হওয়ায় তাঁকে এই কড়া ব্যবস্থা নিতে হয়। কিন্তু সরকারের এই সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়ে যায় রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা। কারণ, শুরু থেকেই গার্ডেনরিচের ঘটনার সঙ্গে পুরোদস্তুর ওয়াকিবহাল ছিল কলকাতা পুলিস। গার্ডেনরিচকাণ্ডে মুন্না, অনিল, শানুদের মতো যাঁরা এখনও অধরা, তাঁদের সম্পর্কে যাবতীয় খুঁটিনাটি তথ্য কলকাতা পুলিসের হাতেই রয়েছে। বন্দর এলাকার হালহকিকত এবং অপরাধীদের নেটওয়ার্ক কলকাতা পুলিসের নখদর্পণে। সেই নেটওয়ার্কের জোরেই প্রবল রাজনৈতিক চাপের মধ্যেও এসআই হত্যার দু`দিনের মধ্যে ১১জন অভিযুক্তকে ধরে ফেলে কলকাতা পুলিস।
অন্যদিকে, ১৪ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে তদন্তে সিআইডির অগ্রগতি বলতে, বর্ধমান থেকে শুধু ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিসি তদন্তের প্রক্রিয়াগত পরিকাঠামো অনুযায়ী, ব্যতিক্রমী কোনও ঘটনা ছাড়া, সিআইডিকে দিয়ে কলকাতা পুলিসের এলাকায় তদন্ত করানো হয় না। কারণ কলকাতা পুলিসের নিজস্ব গোয়েন্দা বিভাগ রয়েছে। কলকাতা পুলিসের এলাকায় কোনও অপরাধ হলে তার তদন্ত করে হয় স্থানীয় থানা, নইলে কলকাতা পুলিসেরই গোয়েন্দা বিভাগ।
 
আবার, রাজ্যের কোনও জেলায় গুরুত্বের বিচারে বড় অপরাধ হলে, সিআইডিকে দিয়ে তার তদন্ত করানো হয়। কলকাতা পুলিস এলাকায় এখনও পর্যন্ত দুটি ঘটনার তদন্ত করেছে সিআইডি।১. লোহাচুর দুর্নীতি মামলা; ২. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জাল ছবি মামলা।
 
কিন্তু গার্ডেনরিচের মতো ট্র্যাডিশনাল ক্রাইমের তদন্তভার তাদের কাঁধে বর্তানোয়, বিপাকে পড়ে সিআইডি। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনায় বেশিদূর এগোতে পারেনি রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা। এই পরিস্থিতিতে ফেরার অভিযুক্তদের নাগাল পেতে কলকাতা পুলিসের সাহায্য চাইল সিআইডি, সেই কলকাতা পুলিস, যাদের হাত থেকে তদন্তভার সরিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
  
রবিবার ভবানীভবনে সিআইডি এবং কলকাতা পুলিসের কর্তাদের মধ্যে একটি বৈঠক হয়। যুগ্ম কমিশনার অপরাধ দমন পল্লবকান্তি ঘোষ, ডিসি বন্দর সলোমন নিশাকুমার, এসি গুণ্ডাদমন শাখা, ওসি হোমিসাইড বৈঠকে অংশ নেন। ঘটনার দিন কোথা থেকে সুভান এবং ইবনেকে ধরা হয়েছিল? অপরাধীদের নেটওয়ার্ক। মুন্না, অনিল ও শানুর সম্ভাব্য অবস্থান। এসব বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য নিয়েছে সিআইডি। এমনকি গার্ডেনরিচ কাণ্ডে কলকাতা পুলিস এবং সিআইডি যৌথ তল্লাসির সিদ্ধান্তও নিয়েছে।

.