বুড়ো-আঙুল! জীবনের দিশা দেখাচ্ছেন প্রবীণ নাগরিকরাই

Updated By: Nov 5, 2017, 07:10 PM IST
বুড়ো-আঙুল! জীবনের দিশা দেখাচ্ছেন প্রবীণ নাগরিকরাই

সোমনাথ মিত্র:  হাত মুষ্টিবদ্ধ করতে তর্জনী, মধ্যমা, অনামিকা, কনিষ্ঠার সঙ্গে বুড়ো আঙুলেরও ভীষণ রকম দরকার। অবজ্ঞা করার উপায় নেই। তেমনই সমাজে বুড়ো আঙুলের মতো বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা একেবারেই ‘ফালতু’ নন। বরং তাঁদের ছত্রছায়ায় সুস্থ সমাজ গড়ে উঠতে পারে, এমন বার্তা দিতে এগিয়ে এল টালিগঞ্জের প্রবীণ সাথীরা।

আরও পড়ুন- 'ভাগ মুকুল ভাগ' আজ অতীত, সকালে দিলীপকে ফোন মুকুলের

ফুত্কারে সব কিছু উড়িয়ে দেওয়ার বয়স আর নেই। রক্তের স্রোত মন্থর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেক পুরনো অভ্যাস ছাড়তে হয়েছে শঙ্করমোহন বাবুকে। জিলেপি, সন্দেশ দেখলেও মুখ ফিরিয়ে নেন। রাত বাড়লেই কাশি জাপটে ধরে। এর পরেও তিনি কিন্তু বাঁচতে ভালবাসেন। হাল ছাড়তে রাজি তো ননই, বরং তাঁর দীপ্ত কণ্ঠে “ক্লান্তি আমায় ক্ষমা করো প্রভু”- রবি ঠাকুরের এই গানে টালিগঞ্জ প্রবীণ সাথীর বন্ধুদের মনের ভিতর আগুনের পরশমণি জ্বালান তিনি।

শঙ্করমোহন বাবুর মতো টালিগঞ্জের প্রবীণ সাথীর সদস্যরাও বয়সের ধার ধারেন না। একসময়ে ব্যস্ত জীবন কাটালেও আজও কম ব্যস্ত নন তাঁরা । এনারা কেউ অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, কেউ চিকিত্সক, কেউ বা শিক্ষক-শিক্ষিকা। আবার অনেকে আছেন, যাঁরা সারা জীবনই ঘর-সংসার সামলে এসেছেন। তাঁদের সন্তানরা কেউ বিদেশ বিভুঁইয়ে। কারওর বা থেকেও একলা ঘর, একলা জীবন। শঙ্করবাবু বলেন, “কাজের মধ্যেই বাঁচতে চাই আমরা। আমাদের প্রবীণ সাথীর নানা কর্মকাণ্ডের মধ্যে ব্যস্ত রাখি নিজেদেরকে। প্রতি মঙ্গলবার সবাই একত্র হয়ে মনের নানা কথা শেয়ার করি। গান, কবিতা, বিজ্ঞান আলোচনা, রাজনীতি কত কথাই যে উঠে আসে। এক বুক জীবন খুঁজে পাই।” বিভিন্ন সমাজ সেবামূলক কাজে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে প্রবীণ সাথী। শঙ্করবাবুর কথায়, “ক্যানসার প্রতিরোধ সচেতনতা, গরীবদের বস্ত্র বিতরণের মতো নানা কাজ করে চলেছি আমরা।”

আরও পড়ুন- মুকুলের হাত ধরে বাম ছেড়ে রামে ঋতব্রত?

রবিবার বিড়লা একাডেমি অব আর্টস অ্যান্ড কালচার হলে সন্ধে ৫.৩০টায় বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে টালিগঞ্জ প্রবীণ সাথী। এই সংগঠনের সদস্যরাই গান, নাটক, রবীন্দ্র সংগীত, নজরুল গীতি, আবৃত্তি পরিবেশন করবেন। তবে, তাঁদের এই অনুষ্ঠান নিছকই যে বিনোদন তা কিন্তু নয়, অশীতিপরের দিকে যেতে যেতেও যে অনেক কিছু করার বাকি, প্রবীণ সাথীর সদস্যেরা এই বার্তাই দেবেন বলে দাবি শঙ্করবাবুর।

.