প্রশ্নের মুখে বন্দর ব্যবসা, তাই তৃণমূল ছাড়তে বাধ্য হলেন সৃঞ্জয়?

Updated By: Feb 5, 2015, 11:02 PM IST
প্রশ্নের মুখে বন্দর ব্যবসা, তাই তৃণমূল ছাড়তে বাধ্য হলেন সৃঞ্জয়?

ব্যবসায়িক স্বার্থের দিকে তাকিয়েই কি তৃণমূল ছাড়তে বাধ্য হলেন সৃঞ্জয় বসু? বন্দর বাণিজ্য মহলে কান পাতলে এমনটাই কিন্তু শোনা যাচ্ছে। ফুলে ফেঁপে ওঠা বসু পরিবারের বন্দর ব্যবসার ভবিষ্যত্‍ কেন্দ্রের কড়া পদক্ষেপে ক্রমশ প্রশ্নের মুখে।  

আইনের বেড়াজাল আঁটোসাঁটো হতেই ব্যবসায় লেগেছে ভাটার টান। তাই কি সৃঞ্জয় বাধ্য হলেন গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে সমঝোতায় যেতে? হলদিয়া বন্দরের ১৫টি বার্থের মধ্যে ১০টি বার্থে পণ্য ওঠানো-নামানোর একচেটিয়া ব্যবসা করে রিপ্লে অ্যান্ড কোম্পানি। হলদিয়ায় সৃঞ্জয় বসুর পারিবারিক সংস্থা রিপ্লে বছরে এক কোটি মেট্রিক টন পণ্য খালাস করে। প্রতি মেট্রিক টনে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা হিসাবে সংস্থার বার্ষিক আয় বছরে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা।

ডায়মন্ড হারবার ও সাগরে দাঁড়িয়ে থাকা জাহাজ থেকে পণ্য নামিয়ে কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরে নিয়ে আসার ব্যবসা থেকেও বছরে রিপ্লের আয় প্রায় তিনশো কুড়ি কোটি টাকা।    বন্দর সূত্রে খবর, কোনওরকম টেন্ডারে অংশ না নিয়ে বছরে মাত্র পাঁচ হাজার চারশো টাকা লাইসেন্স ফি দিয়ে হলদিয়ায় একচেটিয়া কারবার চালাতো সৃঞ্জয় বসুর সংস্থা রিপ্লে অ্যান্ড কোম্পানি। পোর্ট ট্রাস্ট আইনে এ ভাবে লাইসেন্স দেওয়ার বিধি না থাকলেও বন্দরে বছরের পর বছর কী ভাবে এই অনিয়ম চলে আসছিল, তার তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। পাশাপাশি, হলদিয়া বন্দরের আয় বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে জাহাজমন্ত্রক।

জাহাজমন্ত্রকের নির্দেশে হলদিয়া বন্দরের সব বার্থে পণ্য ওঠানো-নামানোর জন্য টেন্ডার ডাকা হয়েছে।

বলা হয়েছে, প্রতি মেট্রিক টন পণ্য খালাসের জন্য একশো ১৯ টাকা ৪৮ পয়সা নেওয়া যাবে।

আর বন্দরকে প্রতি মেট্রিক টনে রয়্যালটি বাবদ দিতে হবে ১৪ টাকা ৭৭ পয়সা।

১০টির মধ্যে ৮টি সংস্থাকে টেন্ডারে যোগ দেওয়ার জন্য বাছাই করা হয়েছে।

একদিকে, বন্দরের অনিয়ম নিয়ে সিবিআই তদন্ত। অন্যদিকে, নতুন ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর লাভের পরিমাণ এক ধাক্কায় অনেকটা কমে যাওয়ার আশঙ্কা। সব মিলিয়ে সৃঞ্জয় বসুর ওপর চাপ বাড়ছিল বলে মনে করছেন বিরোধীরা। হলদিয়া বন্দরের দুই এবং আট নম্বর বার্থে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে এবিজি পণ্য খালাস করায় ক্ষতির মুখে পড়েছিল বসু পরিবারের ব্যবসা। বন্দর থেকে এবিজির বিদায় আর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সৃঞ্জয় বসুর দলত্যাগকে এক করে দেখতে চাইছেন বিরোধীরা।

কেন্দ্রে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর হলদিয়া বন্দরের অছি পরিষদ থেকে সৃঞ্জয় বসুদের ঘনিষ্ঠ ১০ জন সদস্যকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ভেঙে দেওয়া হয় বন্দরের উপদেষ্টা কমিটি যেখানেও বসু পরিবারের ঘনিষ্ঠদের ভিড় ছিল। এ সব চাপের মুখেই কি পিছু হঠতে বাধ্য হয়েছেন সৃঞ্জয়? রাহুল সিনহার বক্তব্যে তারই ইঙ্গিত মিলেছে। হলদিয়া বন্দরের ভবিষ্যত আর সৃঞ্জয় বসুর পরবর্তী পদক্ষেপ, দুদিকেই এখন তাকিয়ে কৌতূহলী রাজনৈতিক মহল।

  

.