‘প্রত্যেক ভারতবাসীর প্রশ্ন চাকরি কোথায়?’ নীতিন বাণীই রাহুলের হাতিয়ার

সংবাদিকদের তিনি বলেন, “সংরক্ষণ দেওয়া হলেও কাজ কোথায়? তথ্য ও প্রযুক্তির উন্নতির জেরে ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে কাজ কমেছে। সরকারি চাকরিতে নিয়োগ বন্ধ। তা হলে কীভাবে কাজ মিলবে”?

Updated By: Aug 6, 2018, 04:08 PM IST
‘প্রত্যেক ভারতবাসীর প্রশ্ন চাকরি কোথায়?’ নীতিন বাণীই রাহুলের হাতিয়ার
ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন: নীতিনের মুখের কথা ব্যুমেরাং হয়ে ফিরল তাঁর দলের কাছেই। তবে, সেই তথার সঙ্গে জুড়েছে তীব্র শ্লেষ ও কটাক্ষ। সুযোগ বুঝে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীও নীতিন বাণীকে নিয়ে কাটা ছেঁড়া করেছেন। সোমবার নীতিন গড়করির মুখের কথা ফিরিয়ে দিয়ে রাহুল টুইট করেন, ‘সত্যিই তো চাকরি কোথায়!’

আরও পড়ুন- সঙ্গে গ্রেনেড-বিপুল নগদ, দিল্লি ‌যাওয়ার পথে জম্মুতে আটক জঙ্গি

কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর প্রশংসা করার পাশাপাশি, নীতিনের মন্তব্যকে হাতিয়ার করে মোদী সরকারের সমালোচনায় কোমর বেঁধে নামলেন রাহুল গান্ধী। নীতিনের এই বেফাঁস মন্তব্যে বিড়ম্বনায় পড়েছে তাঁর সরকারও। এ দিন রাহুল টুইট করেন, “দারুণ প্রশ্ন করেছেন গড়করিজি। প্রত্যেক ভারতবাসীরও একই প্রশ্ন, কোথায় চাকরি?” চাকরি ও শিক্ষায় সংরক্ষণের দাবিতে বেশ কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন মহারাষ্ট্রের আন্দোলনকারীরা। এই আন্দোলনের জেরে বাণিজ্যনগরী কার্যত অচল হয়ে গিয়েছে। মারাঠাদের এই বিক্ষোভের সমালোচনা করেন কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রী তথা মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতা নীতিন গড়করি। সংবাদিকদের তিনি বলেন, “সংরক্ষণ দেওয়া হলেও কাজ কোথায়? তথ্য ও প্রযুক্তির উন্নতির জেরে ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে কাজ কমেছে। সরকারি চাকরিতে নিয়োগ বন্ধ। তা হলে কীভাবে কাজ মিলবে”? নীতিন এখানেই থেমে থাকেননি, পিছিয়ে পড়া জনজাতির সংরক্ষণ নিয়ে কটাক্ষও করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, “এখন পিছিয়ে পড়া শব্দ ব্যবহার করে রাজনীতি করা হচ্ছে। সবাই বলছে, আমি পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের। বিহার ও উত্তরপ্রদেশে যেখানে ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ও প্রভাবশালী, তারাও নিজেদের পিছিয়ে পড়া বলে আন্দোলন করছে।”

আরও পড়ুন- সুকমার জঙ্গলে ভয়ঙ্কর গুলির লড়াই, নিরাপত্তা বাহিনীর মোক্ষম আঘাতে হত ১৪ মাওবাদী

তবে, ক্ষমতায় থেকে খোদ মন্ত্রীর মুখে চাকরি নেই, মন্তব্য শুনে হতবাক আম জনতাও। বিরোধীদের কোর্টে বল দিয়ে দেওয়ায়, মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনায় নেমেছেন তাঁরা। নরেন্দ্র মোদী কর্মসংস্থান নিয়ে একের পর এক স্বপ্নজাল তৈরি করছেন, সেখানে নীতিনের এ হেন মন্তব্যে অস্বস্তি চরমে উঠেছে অন্যান্য বিজেপি মন্ত্রীদের। অবশেষে ড্যামেজ কন্ট্রলে নামেন বিজেপি নেতারা। নীতিনও পরে টুইটে জানিয়েছেন, পুরনো সংরক্ষণই থাকছে। আর্থিক ক্ষমতা অনুযায়ী সংরক্ষণ ব্যবস্থা আনছে না কেন্দ্র।

সংরক্ষণ দেওয়ার মাপকাঠির কথা বলতে গিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে নীতিন বলেছিলেন,   গরিব মানুষের কোনও জাত নেই। মুসলিম, হিন্দু ‌যে ধর্মেরই গরিব মানুষ হোক না কেন তার পরনের কাপড় নেই, মাথার উপরে ছাদ নেই, খাবার নেই। ফলে গরিব মানুষরাই সংরক্ষণ পাওয়ার দাবিদার।

উল্লেখ্য, ক্ষমতায় আসার আগে নরেন্দ্র মোদী তাঁর বহু জনসভায় ‌দুটি ইস্যুকে জোর গলায় তুলে ধরতেন। একটি হল, কালো টাকা এবং অন্যটি কর্মসংস্থান। এনডিএ ক্ষমতায় এলে তিনি ১ কোটি চাকরির ব্যবস্থা করবেন বলে প্রচার করেছিলেন। মোদী ক্ষমতায় আসার পর বেশকিছু সরকারি প্রকল্প ঘোষণা করা হলেও সেখানে খুব বেশি কাজের সু‌যোগ তৈরি হয়নি। বরং সমালোচকদের দাবি, নোট বাতিলের পর বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন।

.