মোবাইল-ফেসবুকে বুঁদ স্ত্রী, ডেকে আনল দম্পতির মর্মান্তিক পরিণতি

১২ বছর আগে মিঠুন মণ্ডলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল সাধনার।

Updated By: Aug 29, 2018, 02:54 PM IST
মোবাইল-ফেসবুকে বুঁদ স্ত্রী, ডেকে আনল দম্পতির মর্মান্তিক পরিণতি

নিজস্ব প্রতিবেদন : সারাদিন মোবাইলে বুঁদ হয়ে থাকত স্ত্রী। ডেকে ডেকেও সাড়া পেতেন না স্বামী। কখনও ফোন কানে একমনে কথা বলে চলেছেন। নয়তো কখনও ফেসবুকে মুখ গুঁজে বসে আছে। এই নিয়ে অশান্তির জেরে আত্মঘাতী হল দম্পতি। ঘটনাটি ঘটেছে নদীয়ায়।

নদীয়ার আমঘাটা খ্রিস্টান পাড়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন মিঠুন মণ্ডল (৩৫) ও সাধনা মণ্ডল (৩১)। পেশায় মাংস বিক্রেতা মিঠুন মণ্ডলের সঙ্গে আজ থেকে ১২ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল সাধনার। দম্পতির এক পুত্র সন্তানও রয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি মোবাইলে ব্যস্ত থাকা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নিত্য অশান্তি লেগেছিল। রোজই ঝগড়া হত দুজনের। স্ত্রীর এত ফোনে ব্যস্ত থাকা ভালো মনে মেনে নিতে পারেননি মিঠুন। মনের কোণে সন্দেহ দানা বাঁধতে থাকে মিঠুনের।

আরও পড়ুন, 'মারধর', চলন্ত ট্রেন থেকে মহিলাকে ছুড়ে ফেলে দেওয়ার হুমকি বৃহন্নলাদের

এরমধ্যেই তিনি জানতে পারেন, এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে জমি কিনে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। প্রায় ১২ লাখ টাকা দিয়ে ওই ব্যক্তি সাধনাকে জমি কিনে দেবেন বলেছিলেন। একথা জানতে পারার পরই মঙ্গলবার রাতে অশান্তি চরমে ওঠে। ওই ব্যক্তি কেন, কী স্বার্থে এত লাখ টাকা খরচ করে সাধনাকে জমি কিনে দিতে চান, তা জানার জন্য স্ত্রীকে প্রশ্ন করেন মিঠুন। ওই ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর কীসের সম্পর্ক? তা নিয়েও সাধনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন মিঠুন। কথায় কথায় পারদ চড়ে। তুমুল বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন স্বামী-স্ত্রী।

ঝগড়া, অশান্তি শুনে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। তখনকার মতো সামাল দেন পরিস্থিতি। কিন্তু এরপরই গভীর রাতে সিলিং ফ্যান থেকে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন মিঠুন। ঘুম ভেঙে এদৃশ্য দেখতে পেয়ে চিত্কার করে ওঠেন সাধনা। তাঁর চিত্কার শুনে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। তড়িঘড়ি মিঠুনকে উদ্ধার করে শক্তিনগর জেলা হাসাপাতালে নিয়ে যান তাঁরা। কিন্তু সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিত্সকরা মিঠুনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

আরও পড়ুন, প্রেমে হাবুডুবু! বিয়ে করতে ইউক্রেন থেকে আরামবাগ ছুটে এলেন রুশ তরুণী

স্বামীর মৃত্যুর খবর জানার পরই কান্নায় ভেঙে পড়েন সাধনা। ছেলেকে হাসপাতালে যেতে বলে, ফাঁকা বাড়িতে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন তিনিও। প্রতিবেশীরা ফিরে সাধনাকে এ অবস্থায় দেখে দিশেহারা হয়ে পড়েন। সাধনাকে উদ্ধার করে ফের শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁরা। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিত্সকরা সাধনাকেও মৃত বলে ঘোষণা করেন।

দেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিস। প্রাথমিকভাবে অনুমান, স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ার পর মদ্যপান করেন মিঠুন। তারপরই আত্মঘাতী হন তিনি। দম্পতির এভাবে আত্মহত্যার ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মা-বাবাকে একসঙ্গে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে দম্পতির ১২ বছরের ছেলে।

.