রং খেলুন, এড়ান ঝক্কি

হোলি মানেই আনন্দ, উন্মাদনা আর স্বাধীনতা। বছরের ৩৬৪ দিনের ঝুটঝামেলা ঝেড়ে ফেলে একটা দিন সত্যি সত্যিই রঙিন হয়ে ওঠার সমারোহ। এই একটা দিনের মজার রেশে মিশে থাকে কিছু ঝক্কিও। হোলির পর ত্বকের, চুলের সমস্যায় ভুগতে হয় প্রায় সকলকেই। তবে খেলার আগে ও পরে কিছু সাবধানতা মেনে চললে ঝক্কি অনেকটাই এড়ানো যায়। রইল ঝক্কি এড়ানোর কিছু সহজ টিপস।

Updated By: Mar 22, 2013, 09:42 PM IST

হোলি মানেই আনন্দ, উন্মাদনা আর স্বাধীনতা। বছরের ৩৬৪ দিনের ঝুটঝামেলা ঝেড়ে ফেলে একটা দিন সত্যি সত্যিই রঙিন হয়ে ওঠার সমারোহ। এই একটা দিনের মজার রেশে মিশে থাকে কিছু ঝক্কিও। হোলির পর ত্বকের, চুলের সমস্যায় ভুগতে হয় প্রায় সকলকেই। তবে খেলার আগে ও পরে কিছু সাবধানতা মেনে চললে ঝক্কি অনেকটাই এড়ানো যায়। রইল ঝক্কি এড়ানোর কিছু সহজ টিপস।
খেলার আগে-
১. দোল খেলতে বেরনোর অন্তত ১০ মিনিট আগে মুখে, গলায়, ঘাড়ে, হাতে ওয়াটার প্রুফ সানস্ক্রিন বা ভারী ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।
২. সারা শরীরে ভাল করে অলিভ অয়েল, নারকেল তেল, আমন্ড তেল বা সর্ষের তেল পুরু করে মেখে নিন। চোখের পিছনে ও নখে তেল লাগাবেন। সাধরণত এইসব জায়গায় রং তাড়াতাড়ি বসে যায়।
৩. ঠোঁটে পুরু করে ভেজলিন বা লিপ বাম লাগিয়ে নেবেন। শুকনো ফাঁটা ঠোঁটের খাঁজে রং ঢুকে পেটের অসুখও হতে পারে। লিপ বাম লাগানো থাকলে রং ধরবে না।
৪. মুখে ভাল কোনও টোনার লাগিয়ে নিতে পারেন। এতে রোমকূপ বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে রং ত্বকের বেশি গভীরে যেতে পারবে না।
৫. চুল ও মাথার তালুতে ভাল করে নারকেল তেল বা ক্যাস্টার অয়েল ম্যাসাজ করুন। মাথায় তেল থাকলে ক্ষতিকারক কেমিক্যাল, ধুলো ও নোংরা কম জমবে। খেলার পর রং তাড়াতাড়ি চুল থেকে বেরিয়েও যাবে।

৬. রং খেলতে বেরনোর সময় মুখে হালকা মেকআপ লাগিয়ে নিতে পারেন। মুখে মেক হালকা আপ বেস, চোখে কাজল ও ঠোঁটে গ্লস থাকলে রং সরাসরি ত্বকে প্রভাব ফেলবে না। তবে যদি গোলা রঙে জলে ভিজে হোলি খেলেন তাহলে কখনই মেকআপ করবেন না।
৭. হাত ও পায়ের নখে নেল এনামেল বা মোটা কোটের নেল পলিশ লাগিয়ে হোলি খেলুন। লাল বা গোলাপি নেল পলিশ সবথেকে ভাল। এগুলো সহজে তুলে ফেলা যায়। সবুজ, হলুদ, কমলা বা বেগুলি নেলপলিশ তুলতে সাধারণত বেশি কসরত করতে হয়।
৮. রঙের হাত থেকে ত্বক বাঁচানোর সবথেকে ভাল উপায় শরীর যতটা সম্ভব ঢেকে রাখা। ফুলহাতা, পা ঢাকা, কলার দেওয়া পোষাক পরে রং খেলুন।
৯. স্কার্ফ বা ব্যান্ডানা দিয়ে মাখা ঢেকে খেলতে পারলে সবথেকে ভাল। এতে চুল রঙের হাত থেকে অনেকটাই রেহাই পায়।
১০. পরে ঝামেলা এড়াতে খেলার সময়ই হার্বাল রং দিয়ে খেলার চেষ্টা করুন। হেনা গুঁড়ো(সবুজ), গাঁদা ফুলের পাঁপড়ির আবির(হলুদ), টমেটো বা বিটরুট থেকে তৈরি রং(লাল) বা চা পাতার রং(খয়েরি) দিয়ে দোল খেললে খেলার পর ত্বকের সমস্যায় ভুগতে হবে না।
১১. খেলার সময় কন্টাক্ট পরবেন না। লেন্স তাড়াতাড়ি রং শুষে নেয়। এর ফলে অস্বস্তি তৈরি হবে। চোখের ক্ষতিও হতে পারে। চশমা পরেই খেলুন তবে মাঝে মাঝে চশমা মুছে নিতে ভুলবেন না।

খেলার পর-
১. খেলার পর বেশিক্ষণ রোদে ঘোরাঘুরি করবেন না। পরে রং তুলতে অসুবিধা হবে। রোদে ত্বকের ক্ষতিও বেশি হবে। পারলে চেষ্টা করুন ছায়ায় দোল খেলতে।
২. চুল থেকে রং তোলার জন্য প্রথমে শুধু জল দিয়ে ভাল করে চুল ধুয়ে ফেলুন। এতে গুঁড়ো রং, অভ্র ঝড়ে যাবে। আলগা রঙও বেরিয়ে যাবে। এরপর অন্তত তিন বার হালকা শ্যাম্পু দিয়ে ভাল করে স্ক্যাল্প ম্যাসাজ করে চুল ধোবেন। শ্যাম্পুর পর এক মগ জলে একটা লেবুর রস মিশিয়ে সেই জল ভাল করে চুল ধুয়ে নিলে চুলের রুক্ষভাব অনেকটা কেটে যাবে। কন্ডিশনার হিসেবে বিয়ারও ব্যবহার করতে পারেন।
৩. কখনই রং তুলতে খুব বেশি ক্ষারজাতীয় সাবান দিয়ে স্নান করবেন না। স্নানের সময় ত্বক বেশি ঘষাঘষিও করবেন না। স্নানের পর অবশ্যই মুখ ও সারা শরীরে ভাল কোনও ময়শ্চারাইজার লাগাবেন।
৪. রং তোলার জন্য প্রথমেই মুখে সাবান লাগাবেন না। সাবান ত্বক আরও শুষ্ক করে দেবে। তার বদলে কোনও ক্লিনজিং ক্রিম বা ক্লিনজিং লোশন দিয়ে মুখ হালকা ম্যাসাজ করে তুলো দিয়ে মুছে ফেলুন।
৫. রং তোলার জন্য তিলের তেল খুব ভাল। এই তেল মুখে ও শরীরে ভাল করে ম্যাসাজ করে স্নান করুন।
৬. চুলের রুক্ষভাব কমাতে আমলা পাউডার, শিকাকাই পাউডার জলে গুলে প্যাক বানিয়ে মাথায় লাগিয়ে নিন। হেনা, চার চামচ লেবুর রস ও দই দিয়ে প্যাক বানিয়েও লাগাতে পারেন। এক ঘণ্টা পর জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৭. এই সময় যে কোনও ফেশিয়াল বা স্কিন ট্রিটমেন্ট এড়িয়ে চলুন। যদি আপনার অ্যালার্জি বা র‌্যাশের সমস্যা থাকে তাকে ত্বকের চিকিতসকের পরামর্শ নিন। অ্যালার্জিক স্কিনে ফেশিয়াল করলে সমস্যা বাড়বে বই কমবে না।

.