কেরিয়ারের শুরু থেকে 'শ্যামবর্ণা' সুন্দরী-র তকমা লেগেছিল গায়ে, মুখ খুললেন বিপাশা

 সোশ্যাল মিডিয়ায় লম্বা পোস্টে 'শ্যামবর্ণা' হওয়া নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন 'বিপস'।

Edited By: রণিতা গোস্বামী | Updated By: Jun 27, 2020, 02:51 PM IST
কেরিয়ারের শুরু থেকে 'শ্যামবর্ণা' সুন্দরী-র তকমা লেগেছিল গায়ে, মুখ খুললেন বিপাশা

নিজস্ব প্রতিবেদন : বলিউডের 'শ্যামবর্ণা সুন্দরী', বরাবরই এভাবেই পরিচিত হয়ে এসেছেন তিনি। ছোট থেকেই গায়ের রং নিয়ে নানান কথা শুনতে হয়েছিল বিপাশা বসুকে। সম্প্রতি প্রসাধনী 'ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি' থেকে ফেয়ার শব্দটি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তে বেশ খুশি বঙ্গ তনয়া। সোশ্যাল মিডিয়ায় লম্বা পোস্টে 'শ্যামবর্ণা' হওয়া নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন 'বিপস'।

প্রসাধনী 'ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি' ছবি শেয়ার করে বিপাশা লিখেছেন, ''ছোট থেকেই আমি শুনে এসেছি, সোনির থেকে বনি কালো। ওর গায়ের রং একটু চাপা না? যদিও আমার মা-ও শ্যামবর্ণা, এবং আমি তাঁর মতোই দেখতে। কিন্তু আমি ছোট থেকেই শুনতাম, বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনরা আমার গায়ের রং নিয়ে আলোচনায় ব্যস্ত হয়ে উঠতেন। বুঝতাম না কেন? মাত্র ১৬ বছর বয়স থেকে আমি মডেলিং দিয়ে কেরিয়ার শুরু করি। আমি সুপার মডেল প্রতিযোগিতা জিতেছিলাম, সংবাদ মাধ্যমে হেডলাইন হল  শ্যামবর্ণা কলকাতার তরুণী সুপারমডের প্রতিযোগিতার বিজেতা। আমি বিস্মিত হতাম, সেই আমার বর্ণনায় শ্যামবর্ণা!''

আরও পড়ুন-কোটি টাকার 'ফেয়ারনেস ক্রিম'-এর বিজ্ঞাপন ফিরিয়েছিলেন সুশান্ত, তালিকায় আছেন আরও অনেকেই

বিপাশা আরও লিখেছেন, ''পরবর্তীকালে যখন আমি নিউইয়র্ক প্যারিসে গেলাম মডেলিংয়ের জন্য। সেখানে দেখলাম, গায়ের রং-এর জন্যই আমি গুরুত্ব পাচ্ছি। পরবর্তীকালে দেশে ফিরে প্রথম ছবির প্রস্তাব পেলাম, তখন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আমি একেবারেই অজ্ঞাত পরিচয়। সিনেমায় কাজ করে ভালোবাসাও পেলাম। তবে আমার নামের সঙ্গে শ্যামবর্ণা শব্দটি থেকেই গেল। পরবর্তীকালে এই শব্দটির প্রতিই ভালোবাসা জন্ম গেল। দেখলাম দর্শকরা এই শ্যামবর্ণা মেয়েটিকেই পছন্দ করছে।''

আরও পড়ুন-'নেপোটিজম' নাকি 'কাউন্টার নেপোটিজম' অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে কোনটা সত্যি?

বিপাশা আরও লিখেছে পরবর্তীকালে তাঁর গায়ের রং এর সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিল সেক্সি শব্দটিও। তাঁর কথায়,  ''সেসময় বহু প্রতিবেদনে আমার গায়ের রং-ই আমার আলোচনার মূল বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে। তারপর যৌন আবেদন। সেসময় সেক্সি শব্দটি বলিউডে বেশ গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছিল। বিষয়গুলি আমার ঠিক বোধগম্য হত না। সেক্সি শব্দটি ব্যক্তিত্বের সঙ্গে যায়, গায়ের রং-এর সঙ্গে নয়। সেসময় প্রচলিত নায়িকাদের থেকে আমি আলাদা হয়ে পড়ি। যদিও আমি এর বিশেষ পার্থক্য বুঝতাম না, তবে আমার সঙ্গে এটাই ঘটতো। তখন নায়িকারা ঠিক কেমন হবেন, তাঁর একটা সংজ্ঞা ছিল। আমি সেগুলির থেকে আলাদা। তবে ভালোবাসা পেয়েছি।''

বিপাশার কথায়, ''ছোট থেকেই আমি গায়ের রং নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ও গর্বিত ছিলাম। আমি কখনও আলাদা হতেও চাই নি। আর গায়ের রং এর কারণেই প্রচুর প্রসাধনীর বিজ্ঞাপনের প্রস্তাব আমার কাছে এসেছে, যে দেখাতে হবে এটি লাগালেউ কেল্লাফতে। কিন্তু আমি আমার নৈতিকতায় দৃঢ় ছিলাম। আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষের গায়ের রং-ই তো বাদামী। এই বিষয়টি আমাদের শিকরে রয়েছে, তখন এই মিথ্যা স্বপ্ন কীভাবে দেখানো হয়? তবে এই প্রসাধনী ব্র্যান্ডটি যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তা অন্যদেরও অনুসরণ করা উচিত।''

.