রণিতা গোস্বামী


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

'চোরাবালি', 'কাটমুণ্ড', 'মিস্টার ভাদুরি', 'সাদা ক্যানভাস', টোপ  সহ বহু বাংলা ছবিতে জমিয়ে অভিনয় করেছেন। তবে আপাতত অভিনেত্রী তথা গায়িকা মালবিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন মুম্বই নিবাসী। বাংলার পাশাপাশি অভিনয় করে ফেলেছেন হিন্দি, ওড়িয়া এমনকী দক্ষিণী ছবিতেও। তবে শুধু অভিনয় কেন, মালবিকা গায়িকা হিসাবেও বেশ সুনাম অর্জুন করেছেন। সম্প্রতি, মুক্তি পেয়েছে মালবিকার নতুন হিন্দি মিউজিক অ্যালবাম 'পাগলপন'। আর সে প্রসঙ্গেই Zee ২৪ ঘণ্টার সঙ্গে আড্ডা দিলেন মালবিকা।


তোমার এই মিউজিক অ্যালবামের গানটা তোমার নিজের গলায় গাওয়ার পাশাপাশি নাকি লেখাটাও তোমার, এটা সত্যি?


মালবিকা- হ্যাঁ, এক্কেবারই। (হাসি) 'পাগলপন' অ্যালবামের জন্য আমি প্রথমবার গান লিখলাম, আর এই অ্যালবামের জন্য আমার দ্বিতীয়বার গান গাওয়া। আর এখানে আমি অভিনয়ও করেছি। 


'পাগলপন' অ্যালবামটির শ্যুটিংয়ের অভিজ্ঞতার কথা যদি একটু বলতে?


মালবিকা- 'পাগলপন' অ্যালবামের ভিডিয়োটি দেখলেই বুঝতে পারবে, এটাতে কতরকম এক্সপিরিমেন্ট করা হয়েছে। অ্যালবামে আমার লুক নিয়েও বিভিন্ন রকম কিছু করার চেষ্টা হয়েছে। এই অ্যালবামের প্রথমেই ইজিপ্সিয়ান মহারানির মতো সেজে শ্যুট করেছি। বালির মধ্যে নৌকা চালাতে হয়েছে। পুরোটাই বেশ মজার। কমেডির মোড়কে বিভিন্ন কিছু দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে। আবার এই মিউজিক ভিডিয়োর মাধ্যমে বেশকিছু বার্তা দেওয়ারও চেষ্টা করা হয়েছে। যেমন ধরো সাধারণত পশুদের আমরা বেঁধে রাখি, সেখানে এই গানে আমায় চিতাবাঘের চেন ছিঁড়ে দিতে দেখা যায়। 


এটাই শুধু নয়, গানটার একটা লাইন রয়েছে, 'ইয়ে তেরা জো আজকা দিন হ্যায়, ইসে ভুলকার জিতা কালমে কিঁউ হো?' এই লাইনটা রেখেছি, কারণ, আজকাল আমরা বর্তমানে ভালোভাবে না বেঁচে আগামীদিনের কথাই বেশি ভাবি। আরও একটা লাইন রয়েছে, 'ইয়ে তেরা জো সেলফি স্টিক হ্যায়, মুঝকো কহি না ঘায়েল কর দে।' আজকাল প্রায়ই শোনা যায়, সেলফি তুলতে গিয়ে অনেকেই বিপদজনক পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন। অনেকসময় সেলফি তুলতে এতই মগ্ন থাকি হয়ত দেখলামই না সেলফি স্টিক দিয়ে কারোর লেগেই গেল। আর এগুলো 'পাগলপন' ছাড়া আর কী! সেটাই এখানে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। এভাবেই ছোট্ট এই গানটার মধ্যে দিয়ে নানান বার্তা দেওয়া রয়েছে। 



এই যে 'পাগলপন' মিউজিক ভিডিয়োর কনসেপ্টটা তোমার মাথায় কীভাবে এলো?


মালবিকা-একবার আমার এক বন্ধু আমার সঙ্গে আড্ডা দিতে এসে মোবাইলেই মগ্ন হয়ে যায়। সেদিন ওকে দেখে আমি মজা করেই বলেছিলাম, ''ইয়ে তেরা জো পাগলপন হ্যায়, মুঝকো কহি পাগল না কর দে''। ওই কথা থেকেই গানের প্রথম লাইনটা মাথায় এসেছিল। ওই পরিস্থিতি থেকেই গানটার জন্ম। আজকাল মোবাইলে হোয়াটসঅ্যাপে আমরা যতটা স্বচ্ছন্দ্য ততটা হয়ত কথা বলেও নই, এই বিষয়গুলোই গানের মধ্যে দিয়ে মজা করে তুলে ধরেছি। 



আর নতুন কী এক্সপিরিমেন্ট করেছো?


মালবিকা- এই গানটা আমি নাকের সুরে গেয়েছি, যাতে আরও বেশি করে মজাদার হয়ে ওঠে ভিডিয়োটা। শ্যুটিয়ের আগে ১ মাস ধরে প্রি প্রোডাকশনের কাজ হয়েছে। গানের প্রত্যেকটা কস্টিউম স্কেচ করা হয়েছে, তারপর সেটা তৈরি হয়েছে। চাঁদের জন্য মহাকাশচারীদের মত পোশাক, আবার মিলিটারিদের মত পোশাক, সমস্ত কিছুই। একটা সিনেমা যেভাবে শ্যুট হয়, সেভাবেই করা হয়েছে এই অ্যালবামের শ্যুটিংয়ে। 


গানটার শ্যুটিং কোথায় হয়েছে?


মালবিকা- এটার শ্যুটিং হয়েছে মুম্বইয়ের একটি স্টুডিয়োতে। কোনও লোকেশনে গিয়ে শ্যুটিং হয়নি। তাই বাকি সমস্ত কাজই ভিএফএক্সে করা হয়েছে। 


মিউজিক ভিডিয়োর কোরিওগ্রাফার ও ডিরেক্টর কে ছিলেন?


মালবিকা- 'পাগলপন'-এর কোরিওগ্রাফি করেছেন ললিপপ, যিনি কিনা 'আতি কা খান্ডালা', 'ঝঙ্কার বিটস', 'ডাল মে কুছ কালা হ্যায়' সহ বহু হিন্দি ছবির গানের কোরিওগ্রাফি করেছেন। আর মিউজিক ভিডিয়োটির পরিচালক ছিলেন রাহুল জনার্দন।



এর আগেও তো তুমি বেশকিছু মিউজিক অ্যালবামে কাজ করেছো?


মালবিকা- হ্যাঁ, 'দিলবর' আমার প্রথম মিউজিক ভিডিয়ো যেটা Zee Musicর সঙ্গে করেছিলাম। তারপর 'প্রিটি গার্ল' করি, ওটাতে কণিকা কাপুর গান গেয়েছিলেন। তারপর একটা তেলেগু মিউডিক অ্যালবামে কাজ করি বিজয় দেবারাকোন্ডার সঙ্গে। ওটাতে চিন্ময় শ্রীপদা গান গেয়েছিলেন। তারপর গণেশ আচারিয়ার কোরিওগ্রাফিতে 'কিল কারদা' মিউজিক অ্যালবামে কাজ করি, ওই গানটাও আমার গাওয়া ছিল। 


আচ্ছা, একটা কথা জিজ্ঞেস না করে পারছি না, তোমায় আমারা চিনতাম অভিনেত্রী হিসাবে, তুমি গায়িকা হলে কবে থেকে?


মালবিকা- এটাও একটা মজার ঘটনা।  কিল করদা গানটা গাওয়ার কথা ছিল নেহা কক্করের। তো আমরা অ্যালবামের জন্য অনুশীলন করা শুরু করে দিয়েছিলাম। গানটা আমার বেশ পছন্দ হয়েছিল। তখন মিউজিক ডিরেক্টর বললেন আপনি তো একবার গেয়ে দেখতে পারেন। তো সেসময়ই গানটা আমি স্টুডিওতে রেকর্ড করি। সকলের বেশ পছন্দ হয়ে যায়। আর আমার গাওয়া গানটাই রেখে দেওয়া হয় ওই অ্যালবামের জন্য। এভাবেই আমার গানের জগতে আসা।  


সম্প্রতি 'ফিল্ম ফেয়ার'-এর মঞ্চেও তোমায় 'কিল করদা' গানটি গাইতে শোনা গিয়েছে? সেই অভিজ্ঞতার কথা যদি বলো?


মালবিকা- হ্য়াঁ, এবারই ৬৩ তম ফিল্ম ফেয়ারের মঞ্চে গানটা আমি গেয়েছি। এটা আমার কাছে সত্যিই একটা বড় সুযোগ। মঞ্চে করণ জোহর যখন আমার সঙ্গে সকলের পরিচয় করালেন, সেটা একটা অন্য অনুভূতি। সেখানে ক্যাটরিনা, রণবীর, আলিয়া, হেমা মালিনী সবাই ছিলেন, সকলে আমার গান গাওয়ার পর যখন হাততালি দেন, সেটা ভীষণই আনন্দের ছিল আমার কাছে। 



তুমি তো বেলুড়ের মেয়ে, সেখান থেকে কীভাবে তোমায় অভিনয় জগতে আসা, তারপর গানের জগতে?


মালবিকা- আসলে আমি আগে গান, অভিনয়, এসব নিয়ে কখনও ভাবিই নি। বোনের ইচ্ছাতেই 'কলকাতা সুন্দরী' বলে একটা কনটেস্টে নাম দিয়েছিলাম। কনটেস্ট টা আমি জিতেও যাই। তারপর থেকেই অভিনয় জগতে আসা, তারপর গান।


তুমি কি বাংলা ছবিতে আর কাজ করতে চাইবে না?


মালবিকা- হ্যাঁ, কেন করবো না, নিশ্চয় করবো। ভালো চিত্রনাট্যে কাজ করার প্রস্তাব পেলে অবশ্যই করব। 


গান ও অভিনয় দুটোকেই কি একসঙ্গে চালিয়ে নিয়ে যেতে চাইছো?


মালবিকা- হ্যাঁ, অবশ্যই! এখন গান করছি, ভালো লাগছে। হঠাৎ কোনও ছবির প্রস্তাব এলেই যে গানটা ছেড়ে দেব, এমনটা কখনওই হবে না।