সৌমিত্র সেন


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

লতা-রফি ভারতীয় লঘুসঙ্গীত জগতের দুই মহাপ্রতিভা। মুম্বই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির দুই মহারথী। সাঙ্গীতিক জীবনে দু'জনেরই বলার মতো নানা অতুল অর্জন। দু'জনেরই ফ্যান ফলোয়িং সাঙ্ঘাতিক। তাঁদের দ্বৈতসঙ্গীতও এক অসাধারণ বস্তু। কিন্তু ঘটনাচক্র এমন দিকেই গিয়েছিল যে, এই দুই মহাপ্রতিভার মধ্যেও এসে উপস্থিত হল দারুণ বিবাদ। তাঁরা পরস্পরের সঙ্গে গাইবেন না, করলেন এমন ধনুকভাঙা পণও।


কেন এমন হল?


মোটামুটি যা জানা যায়, তা হল, একাধিক কারণে বিবাদ বেধেছিল লতা-রফির মধ্যে। মূল বিবাদটা ছিল রয়্যালটি সংক্রান্ত। ষাটের দশকের প্রথম দিকে লতা গানের পারিশ্রমিক ছাড়াও  ফিল্ম প্রযোজকেরা তাঁদের ছবির গানের বিক্রির জন্য সঙ্গীতকোম্পানি থেকে যে ৫ শতাংশ রয়্যালটি পেতেন সেটারও অর্ধেক দাবি করে বসলেন। এবং তিনি সেই সময়ের অন্যতম প্রধান পুরুষকণ্ঠ রফিকেও বললেন তাঁর মতোই ওই রয়্যালটির দাবি জানাতে। 


আরও পড়ুন: Lata Mangeshkar Passes Away: লতাকে সঙ্গে নিয়েই সেদিন উত্তমের ঠোঁট থেকে হেমন্তকে সরিয়ে দিলেন মান্না দে!


রফি অরাজি হলেন। তিনি এ বিষয়ে লতাকে একেবারেই সমর্থন করলেন না। এ ক্ষেত্রে রফির দর্শন ছিল অন্য মেরুর। তিনি মনে করতেন, একজন শিল্পী যখন পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কোনও ছবির জন্য গান করেন, তখন সেখানেই শিল্পীর সঙ্গে ছবিনির্মাতার আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি সম্পূর্ণ চুকেবুকে যায়। পরে আর এর কোনও জের থাকে না, থাকা উচিত নয়। শুধু তাই নয়, আরও কয়েকধাপ এগিয়ে গিয়ে রফি মনে করতেন, একজন প্লে-ব্যাক সিঙ্গার গানটা স্রেফ 'রি-ক্রিয়েট' করেন, গানটা আগে থেকেই তৈরি থাকে, আর সেটা তৈরি করেন গীতিকার ও সুরকার। ফলে গানের প্রকৃত ক্রেডিট যাওয়া উচিত গীতিকার ও সুরকারের কাছেই।


এদিকে, রফি লতাকে সমর্থন না করায় বেজায় চটে যান লতা। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে বচসাও বাধে বলে শোনা গিয়েছিল। আর সেখানেই রফি বলে দেন, তিনি আর কোনও দিন লতার সঙ্গে গাইবেন না! কথাটা লতার দারুণ গায়ে লেগে যায়। তিনিও সটান বলে দেন, রফি তাঁর সঙ্গে কি গাইবেন না, বরং তিনিই কখনও রফির সঙ্গে গাইবেন না!


ব্যস! ফিল্মসঙ্গীতের দুই সেরা মুখের মধ্যে তখন দুস্তর ব্যবধান রচিত হল। সেই সময়ে যে কোনও ছবিতেই নায়কের গান মানেই রফিকণ্ঠ আর নায়িকার গান মানেই লতাকণ্ঠ। এই দুই মহাপ্রতিভার মধ্যে বিচ্ছেদ মানে পর্দায় নায়ক-নায়িকার অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে যাঁদের গান এক চূড়ান্ত রসায়নের জন্ম দিত দর্শক-শ্রোতার মনে সেটা বন্ধ হয়ে যাওয়া। তার মানে, রফির সঙ্গে গাওয়ানোর জন্য উপযুক্ত ফিমেল ভয়েস চাই, উল্টোদিকে লতার সঙ্গে গাওয়ানোর জন্যও উপযুক্ত মেল ভয়েস চাই। মুম্বই (তৎকালীন বম্বে) ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তখন তৈরি হল এক দারুণ অচলাবস্থা।


বলিউড মিউজিকের ইতিহাসে লেখা আছে, লতা ও রফি টানা ৩ বছর একসঙ্গে গাননি! পরে সুরকার শঙ্কর জয়কিষেনের মধ্যস্থতায় বরফ গলে। 


Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)


আরও পড়ুন: Lata Mangeshkar Passes Away: সুদীর্ঘ কেরিয়ারে কেন একটি গানও ও. পি. নইয়ারের সুরে গাইলেন না লতা?