Moni Kishore Death: কুমার পড়ে রইলেন এদিকে, কিশোর চলে গেলেন চিরতরে, গুরুভাইকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ শানু...
Moni Kishore-Kumar Sanu: শনিবার রাতে ঢাকার রামপুরার বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় শিল্পী মনি কিশোরের মরদেহ। ময়নাতদন্তের জন্য রবিবার মরদেহটি নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। তখন থেকে মর্গেই রয়েছে নব্বই দশকের জনপ্রিয় এই শিল্পীর নিথর দেহ। এই মনি কিশোর ছিলেন কুমার শানুর ছোটবেলার বন্ধু। তাঁরা দুজনেই ছিলেন কিশোর কুমারের পাগল ফ্যান। তারপর...
![Moni Kishore Death: কুমার পড়ে রইলেন এদিকে, কিশোর চলে গেলেন চিরতরে, গুরুভাইকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ শানু... Moni Kishore Death: কুমার পড়ে রইলেন এদিকে, কিশোর চলে গেলেন চিরতরে, গুরুভাইকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ শানু...](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2024/10/22/499619-kishorekumar.png)
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: তিনদিন ধরেই মর্গে পড়ে রয়েছে নব্বই দশকের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী মনি কিশোরের মরদেহ পড়ে আছে হিমঘরে। বাবার মরদেহ গ্রহণ করতে এখনও দেশে আসেননি প্রবাসী মেয়ে নিন্তি চৌধুরী। বাবার মরদেহ মুসলমান ধর্মরীতি মেনে কবর দেওয়া হবে, সেটাই তার ইচ্ছে। অন্যদিকে মনি কিশোরের ভাই-বোনরা চান তাদের ভাইয়ের শেষকৃত্য হোক হিন্দু ধর্মের রেওয়াজ মেনে। এই মণি কিশোরের সঙ্গে যোগ রয়েছে ভারতীয় ছবির অন্যতম সেরা প্লেব্যাক সিঙ্গার কুমার শানু।
আরও পড়ুন- Lawrence Bishnoi: জেল থেকেই বিধানসভায় প্রার্থী হচ্ছেন লরেন্স বিষ্ণোই! কাঁপছে বলিউড...
গত শনিবার রাতে ঢাকার রামপুরার বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় শিল্পী মনি কিশোরের মরদেহ। ময়নাতদন্তের জন্য রবিবার মরদেহটি নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। তখন থেকে মর্গেই রয়েছে নব্বই দশকের জনপ্রিয় এই শিল্পীর নিথর দেহ। তাঁর দাদা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা অশোক কুমার মণ্ডল জানিয়েছেন, শিল্পীর মরদেহ আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের মাধ্যমে কবর দেওয়া হবে। জীবদ্দশায় মনি কিশোর তার মেয়ে নিন্তি চৌধুরীকে এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন।
১৯৬১ সালের ৯ জানুয়ারি নড়াইল জেলার লক্ষ্মীপুরে মামাবাড়িতে জন্ম নেন মনি কিশোর। পুলিশ কর্মকর্তা বাবার সাত সন্তানের মধ্যে তিনি চতুর্থ। চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সবার বড় ভাই মারা গেছেন। স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর থেকে একাই থাকতেন মনি। ‘চার্মিং বউ’ নামের একটি আধুনিক গানের অ্যালবামের ‘কী ছিলে আমার’ শিরোনামের একটি গান শিল্পীকে পরিচিতি এনে দেয়। তার গাওয়া জনপ্রিয় গানগুলোর অন্যতম ‘সেই দুটি চোখ কোথায় তোমার’, ‘তুমি শুধু আমারই জন্য’, ‘মুখে বলো ভালোবাসি’, ‘আমি মরে গেলে জানি তুমি’। তার সবচেয়ে শ্রোতাপ্রিয় গান ‘কী ছিলে আমার’ তার লেখা ও সুর করা। পরে ‘কে অপরাধী’ ছবিতে ব্যবহার করা হয় গানটি। প্রায় ত্রিশের বেশি একক অ্যালবাম প্রকাশের পর একদিন হঠাৎ করেই নিশ্চুপ হয়ে যান এই শিল্পী। এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, আবারও গান করছেন তিনি। পুরোনো গানগুলো পর্যায়ক্রমে প্রকাশ করছেন ইউটিউবে। এই মনি কিশোর ছিলেন কুমার শানুর ছোটবেলার বন্ধু। তাঁরা দুজনেই ছিলেন কিশোর কুমারের পাগল ফ্যান। কিশোর কুমার ছিল তাঁদের গুরু। সেই কিশোর কুমারের নাম ভাগ করে নেন দুই বন্ধু। সেখান থেকেই কেদারনাথ ভট্টাচার্য হন কুমার শানু ও অন্য জন হন মনি কিশোর। স্বভাবতই মনি কিশোরের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ শানুও।
সংগীতে সরব থাকা অবস্থায় শামীমা চৌধুরীকে বিয়ে করেছিলেন মনি কিশোর। জানা গেছে, মুসলমান এই নারীকে বিয়ের সময়ই ধর্মান্তরিত হন শিল্পী। যদিও বেশিদিন টেকেনি ওই সংসার। সেই সংসারের সন্তান নিন্তি চৌধুরী। এ কারণেই মনি কিশোরকে মুসলমান ধর্মের নিয়ম মেনে কবর দেওয়ার পক্ষে তাঁর দাদা অশোক কুমার। তিনি বলেন, ‘মনি বেঁচে থাকা অবস্থায় দাফনের বিষয়টি একমাত্র মেয়ে নিন্তিকে জানিয়েছিল। মেয়ে আমার বড় ভাইকে জানিয়েছে বিষয়টি। মেয়েকে যেহেতু বলে গেছে, তাই তার ইচ্ছানুসারে দাফন করাই হবে। এ নিয়ে আমরা অন্য কোনো সিদ্ধান্তে যাব না।’
মনি কিশোরের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর তার বাড়িওয়ালার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। বাড়িওয়ালা বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘আমি জানতাম মনি কিশোর হিন্দু। ধর্ম বিষয়ে আমি তেমন কিছু জানতাম না। এমনকি স্ত্রীর সঙ্গে যে তার ডিভোর্স হয়ে গেছে, সেটাও আমার জানা ছিল না। তিনি বলেছিলেন, তাঁর স্ত্রী আমেরিকা থাকেন। এখন তো শুনছি তিনি মুসলমান হয়েছিলেন, স্ত্রীর সঙ্গেও ডিভোর্স হয়ে গেছে।’
আরও পড়ুন- Oscar: কিউবায় কেলেঙ্কারি! অস্কারের আঘাতে মৃত ৬, পথে নেমে বিক্ষোভ সাধারণ মানুষের...
ময়নাতদন্ত শেষে মনি কিশোরের কবরের সিদ্ধান্ত থাকলেও পেরিয়ে গেছে দুদিন। তবু কেন কবর দেওয়া হচ্ছে না? জানা গেছে, তাঁর ধর্মান্তরিত হওয়ার প্রমাণ না পাওয়ায় এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না পুলিশ। এমনকি মেয়ে নিন্তি যুক্তরাষ্ট্র থেকে না ফিরলেও তার বাবার শেষকৃত্য বিষয়ক কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না রামপুরা থানা-পুলিশ। রামপুরা থানার উপপরিদর্শক খান আবদুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আপাতত শিল্পীর মরদেহ মর্গেই থাকবে। তার মেয়ে দেশে ফিরলেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। দূতাবাসের মাধ্যমে চিঠি পাঠিয়েও যদি কাউকে দায়িত্ব দেন, তাহলে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হতো। তিনি যে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন, এ রকম প্রমাণাদি আমাদের সরবরাহ করলেও হতো। মনি কিশোর সাহেবের মেয়ে নিন্তি চৌধুরীর সঙ্গে আমাদের ওসি স্যারের কথা হয়েছে।’
ওসি বলেন, ‘নিন্তি চৌধুরী হোয়াটস অ্যাপে আমাদের কিছু তথ্য পাঠিয়েছেন। আমরা তাকে পরামর্শ দিয়েছি, স্থানীয় দূতাবাস অথবা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যেন তিনি সেসব পাঠান। তিনি আমাদের জানিয়েছেন, তার বাবাকে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের মাধ্যমে কবর দিতে। অন্যদিকে পরিবার, ভাই-বোনেরা চেয়েছিলেন হিন্দুধর্মের রীতি মেনে শেষকৃত্য করতে। দুই পক্ষ থেকে দুই ধরনের বক্তব্যের কারণে একটা জটিলতা তৈরি হতে পারে। বিতর্ক ও জটিলতা এড়াতে আমরা শিল্পী মনি কিশোরের মেয়ে নিন্তি চৌধুরীকে দেশে উপস্থিত হয়ে মরদেহ গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়েছি। তিনি যদি দেশে আসতে না পারেন, তাহলে যথা নিয়মে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহের অনুরোধ করেছি।’
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)