"শ্রীদেবীকে মেরে ফেলার জন্য আমি ভগবানকে ঘৃণা করি
এভাবে চলে যাওয়ার জন্য আমি শ্রীদেবীকে ঘৃণা করি
তিনিও শেষপর্যন্ত একজন সাধারণ মানুষ মাত্র, আমাকে এটা বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য আমি তাঁকে ঘৃণা করি"


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

প্রিয় 'শ্রী'-র মৃত্যুতে শোকবিহ্বল রাম গোপাল ভার্মা এভাবেই ব্যক্ত করলেন নিজের মনের যন্ত্রণাকে। স্বপ্নের নায়িকার স্মৃতিচারণায় ধরলেন কলম। রাম গোপাল ভার্মা লিখছেন, "মনে হচ্ছে এখনও বিছানায় শুয়ে কোনও দুঃস্বপ্ন দেখছি। কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না যে শ্রীদেবী আর নেই।"


তিনি লিখেছেন, ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখা তাঁর অভ্যাস। মাঝে মাঝেই ঘুম ভেঙে যায় তাঁর। আর ঘুম ভাঙলেই মোবাইলে মেসেজ চেক করাটা তাঁর অভ্যাস। শনিবার রাতেও একইরকমভাবে রাতে ঘুম ভাঙার পর ফোন হাতে নিয়ে চেক করতে গিয়েই চমকে ওঠেন তিনি। হঠাত্ একটা মেসেজে শ্রীদেবীর মৃত্যু সংবাদ পান তিনি। ঘুমের ঘোরে প্রথমে ভেবেছিলেন এটা হয়তো কোনও দুঃস্বপ্ন বা গুজব। এমনকি তারপর আবার ঘুমিয়েও পড়েন তিনি। প্রায় একঘণ্টা বাদে ঘুম থেকে উঠে তিনি দেখেন, গুজব নয়, সত্যিই আর নেই বলিউডের 'দেবী'।


আরও পড়ুন, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অকালে প্রয়াত শ্রীদেবী


বলিউডের অন্যতম দুঁদে পরিচালকের স্মৃতিচারণায় উঠে এসেছে শ্রীদেবীর প্রতি তাঁর অনুরাগের একের পর এক অধ্যায়। রাম গোপাল ভার্মা জানিয়েছেন, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সময় শ্রীদেবীর প্রথম তেলেগু ছবি 'পদহরেল্লা বায়াসু' দেখেন তিনি। শ্রীদেবীকে দেখে তাঁর মনে হয়েছিল, "এ কোনওভাবেই সত্যিকারের কোনও মানুষ হতে পারে না। এ মানুষের চেহারায় কোনও কল্পসুন্দরী।" তিনি লিখেছেন, এরপর যতদিন যায়, ততই তাঁর শ্রীদেবীকে ভিন জগতের বাসিন্দা বলেই মনে হতে থাকে।


রামু লিখেছেন, নিজের প্রথম ছবি 'শিবা' ছবি তৈরির সময় চেন্নাইয়ের নার্গাজুনের অফিস থেকে হেঁটে গিয়ে শ্রীদেবীর বাড়ির পাশে একটা রাস্তায় ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতেন তিনি। গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে হাঁ করে তাকিয়ে দেখতেন শ্রীদেবীর বাড়ি। তাঁর কিছুতেই বিশ্বাস হত ইহ জগতের 'দেবী' কোনও ইট-কাঠ-পাথরের তৈরি সাধারণ বাড়িতে থাকতে পারেন। শ্রীদেবীকে একপলক দেখার জন্য হাপিত্যেশ করে থাকতেন তিনি। যদিও বাস্তবে তেমন কিছুই ঘটত না।


প্রথম ছবি 'শিবা' মুক্তির পরই হিট করে। আর তারপরই যেন রামুর অন্তরের আর্জি শুনতে পান উপরওয়ালা। পরিচালক জানিয়েছেন, সেইসময়ই এক প্রযোজক তাঁর সঙ্গে দেখা করে শ্রীদেবীর সঙ্গে ছবি করার প্রস্তাব দেন। তিনিই রাম গোপাল ভার্মাকে নিয়ে যান শ্রীদেবীর বাড়িতে। রামু লিখছেন, "আমরা যখন শ্রীদেবীর বাড়িতে পৌঁছই, তখন লোডশেডিং ছিল। ঘরের মধ্যে মোমবাতি জ্বলছিল। এদিকে তার একটু পরই মুম্বইয়ের উড়ান ধরতে যাওয়ার তাড়া ছিল শ্রীদেবীর। শেষমুহূর্তের প্যাকিং সম্পূর্ণ করার জন্য এঘর-ওঘর ছোটাছুটি করছিলেন শ্রীদেবী। আর মাঝে মাঝে আমাদের তাকিয়ে মুচকি হেসে সময় চেয়ে নিচ্ছিলেন। অন্ধকারের মধ্যে মোমবাতির আলোয় যেন আরও মায়াবিনী লাগছিল শ্রীদেবীকে।"


আরও পড়ুন, 'শ্রী'হীন! 'চাঁদনি' হারিয়ে 'সদমা'য় বলিউড


রাম গোপাল ভার্মা লিখেছেন, তখনই মনে মনে 'ক্ষণা ক্ষণম'-এর চিত্রনাট্য লিখতে শুরু করে দিয়েছিলেন তিনি। তবে 'ক্ষণা ক্ষণম' যে আসলে শ্রীদেবীর উদ্দেশে তাঁর প্রেমপত্র ছিল, স্মৃতিচারণায় তাও স্বীকার করেছেন পরিচালক। একইসঙ্গে রামুর প্রতিশ্রুতি, এই মৃত্যু তাঁর 'শ্রী'-এর প্রতি তাঁর ভালোবাসাকে কোনওভাবেই নষ্ট করতে পারবে না। শোকস্তব্ধ পরিচালক লিখছেন, "আমি তোমাকে ভালোবাসি শ্রী। তুমি যেখানেই থাক, আমি চিরকাল তোমায় ভালোবাসব।"