Sandhya Mukhopadhyay: সন্ধ্যা উত্তমকুমারকে সেদিন দারুণ রোম্যান্টিক এই প্রশ্নটি করেছিলেন! কী উত্তর দিয়েছিলেন মহানায়ক?
উত্তম এই প্রশ্নের উত্তর দেননি; পরিস্থিতিই সেদিন তাঁকে সেই উত্তর দিতে দেয়নি!
সৌমিত্র সেন
এই পথ যদি না শেষ হয়! গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের লেখা, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সুর। তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাহিনি-নির্ভর 'সপ্তপদী' ছবির গান এটি।
বাংলা ছবির নিরিখে এ আক্ষরিক অর্থেই এক মাইলস্টোন। নানা দিক থেকে। প্রথমত, এই ছবিতেই উত্তম-সুচিত্রা জুটি পর্দায় তাঁদের যৌথ রসায়নের চূড়ান্তে পৌঁছল; দ্বিতীয়ত, এই ছবিতেই বাঙালি হেমন্ত-সন্ধ্যাকে পুরোমাত্রায় পেল; তৃতীয়ত, এই ছবিতেই তৈরি হয়ে গেল বাংলাছবির সেই সোনালি চতুর্ভুজ-- উত্তম-সুচিত্রা/হেমন্ত-সন্ধ্যা; চতুর্থত, এই ছবির গানের দৃশ্যায়নই প্রথম বাংলাছবির মিউজিক সিনের স্ট্য়াটিক ব্যাপারটাকে ভাঙল-- পঞ্চাশের দশক সবে শেষ হয়ে ষাটের দশকের ঊষালগ্ন; সেই সময়েই এক বাঙালি নায়ক তাঁর প্রেমিকা তথা নায়িকাকে ব্যাকসিটে বসিয়ে বাইকে চেপে কোনও গানে লিপ দিচ্ছেন-- সেই সময়ের সামাজিক-সাংস্কৃতিক রক্ষণশীলতার পরিসরে এ একেবারে অভাবনীয় বিষয় দৃশ্যকল্প! কল্পদৃশ্যও বলা চলে!
ফলে, পর্দায় নায়ক-নায়িকার অবস্থান আর পর্দার পিছনে তাঁদের ঠোঁটে কণ্ঠ দেওয়া গায়ক-গায়িকার স্টাইলের এই স্বর্ণালীসংযোগ পুরনো সমস্ত ধাঁচ সরবে ভেঙে দিল, বাংলা ছবির গানের প্রথাগত দৃশ্যায়নকে গান এক ধাক্কায় অনেকটা এগিয়ে দিল, করে দিল অনেক অনেক সাবালক। আর এই মহার্ঘ ইতিহাসের অংশ হয়ে থেকে গেলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়।
'এই পথ যদি না শেষ হয়' গানে সুচিত্রার ঠোঁটের মাধ্যমে গায়িকা সন্ধ্যা সেদিন যেন মহানায়ককেই প্রশ্ন করলেন--'এই পথ যদি না শেষ হয়/তবে কেমন হত, তুমি বলো তো?' শ্রোতারা জানেন, কৃষ্ণেন্দু-রূপী উত্তমও এই প্রশ্নের উত্তর দেননি, গানের লিরিকই তাঁকে সেই উত্তর দিতে দেয়নি; বরং উল্টে তিনি উপরোধ করে যেন গানে গানে বলেছেন তাঁর নায়িকা/গায়িকাকে যে,-- 'তুমিই বলো'!
আরও পড়ুন: Sandhya Mukhopadhyay: ছবিতে সেদিন ভুল এবং বেসুরো গাইলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়! কেন?