অনুপ্রবেশ ইস্যু নিয়ে মমতার বতর্মান অবস্থানের সঙ্গে মিলছে না ইতিহাস

অনুপ্রবেশ নিয়ে এখন নরেন্দ্র মোদীর বিরোধিতায় সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ এই ইস্যুতেই একসময় বিজেপির সুরে সুর মিলিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। ২০০৩ সালে তৃণমূল যখন এনডিএতে ছিল তখনই লোকসভায় অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে নয়া বিল সংসদে আনা হয়েছিল। ইউপিএ জমানাতেও সংসদে অনুপ্রবেশকে রাজ্যের পক্ষে বিপর্যয় বলেছিলেন তৃণমূল নেত্রী।

Updated By: May 6, 2014, 07:40 PM IST

অনুপ্রবেশ নিয়ে এখন নরেন্দ্র মোদীর বিরোধিতায় সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ এই ইস্যুতেই একসময় বিজেপির সুরে সুর মিলিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। ২০০৩ সালে তৃণমূল যখন এনডিএতে ছিল তখনই লোকসভায় অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে নয়া বিল সংসদে আনা হয়েছিল। ইউপিএ জমানাতেও সংসদে অনুপ্রবেশকে রাজ্যের পক্ষে বিপর্যয় বলেছিলেন তৃণমূল নেত্রী।

মোদী বলেছেন, ১৬ মে-এর পর বাংলাদেশিদের বের করে দেব। মমতা বলেছেন, একজনের গায়ে হাত দিয়ে দেখুক।

অনুপ্রবেশকারীদের ফিরিয়ে দেওয়া নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর মন্তব্যে অগ্নিশর্মা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এক দশক আগে এই ইস্যুতেই বিজেপি আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থানের কিন্তু কোনও ফারাক ছিল না।
২০০৩ সালে ছয়ই মে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে সংশোধনী বিল আনার উদ্যোগ নিয়েছিল এনডিএ মন্ত্রিসভা। যার অন্যতম শরিক ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নয়ই মে বিলটি সংসদে পেশ হওয়ার পর সিলেক্ট কমিটিতে চলে যায়।

এরপর দুহাজার পাঁচে সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য এই বিষয়ে ১৯৮৩ সালের মূল আইনটিকেই অসাংবিধানিক ঘোষণা করে।

শুধু এনডিএ জমানাই নয়, প্রথম ইউপিএ-সরকারের সময়ও অনুপ্রবেশ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগের অবস্থানেই অনড় ছিলেন। ২০০৫ সালের ৪ অগাস্ট পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশ সমস্যা নিয়ে লোকসভায় মুলতুবি প্রস্তাব আনতে চায় তৃণমূল। লোকসভার সেই সময়কার কার্যবিবরণীতে দেখা যাচ্ছে

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ``রাজ্যে অনুপ্রবেশ সমস্যা বিপর্যয়ের আকার নিয়েছে। ভোটার তালিকায় ভারতীয়দের সঙ্গেই বাংলাদেশিদেরও নাম রয়েছে। আমার কাছে ভারতীয় ও বাংলাদেশি দুটি তালিকায় রয়েছে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।`` বিষয়টি নিয়ে লোকসভায় আলোচনার জন্যও জোরালো দাবি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

অধ্যক্ষ সেই মূলতুবি প্রস্তাব খারিজ করে দেওয়ায় অগ্নিশর্মা তৃণমূল নেত্রী অধ্যক্ষের দিকে কাগজপত্র ছুঁড়ে কক্ষ থেকে ওয়াক আউট করেন।

পরে সংসদের বাইরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ""আমি বেরিয়ে এসেছি কারণ, পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু তুলতে না দিয়ে আমার মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে।``

সেদিন শেষ পর্যন্ত তত্কালীন অধ্যক্ষ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা হওয়ার পর লোকসভায় ফিরেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।পরের নবছরে রাজনৈতিক পরিস্থিতির অনেক পরিবর্তন হয়েছে। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়ে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। এবারের লোকসভায় কংগ্রেস ও বিজেপি দু`দলের বিরুদ্ধে সরাসরি লড়াইয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। সেই একই অনুপ্রবেশ ইস্যুতে এখন সম্পূর্ণ উল্টো অবস্থানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

.