করোনা আবহে চোখ রাঙাচ্ছে 'ব্ল্যাক ফাঙ্গাস', কীভাবে বাঁচবেন?
ডাক্তারি পরিভাষায় 'মিউকোরমাইকোসিস'-ই হল 'ব্ল্যাক ফাঙ্গাস'।
নিজস্ব প্রতিবেদন: একদিকে চোখ রাঙাচ্ছে করোনা। প্রতিদিনই ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ গ্রাফ। এরই মধ্য়ে মানুষের শরীরে বাসা বাঁধছে আরও এক মারণ ছত্রাক। ডাক্তারদের ভাষায় যাকে বলে 'মিউকোরমাইকোসিস'। যা এক ধরনের 'ব্ল্যাক ফাঙ্গাস'। মূলত মিউকোরমাইসেটেস নামক ছত্রাক থেকেই এই রোগ হয়।
কীভাবে ছড়ায় এই রোগ?
বেলেঘাটা আডি হাসপাতালের করোনা আইসিইউ ইউনিটের ইনচার্জ চিকিৎসক যোগীরাজ রায় জানান, মূলত পরিবেশেই রয়েছে এই ছত্রাক। করোনা পরিস্থিতিতে মাত্রাতিরিক্ত স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ ব্য়বহারের ফলে মানুষের শরীরে এই ধরনের ছত্রাকের সংক্রমণ ঘটতে পারে। শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্য়মেই ছত্রাকের বীজ বাতাস থেকে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। এই ছত্রাক সবচেয়ে বেশি ফুসফুস এবং মাথায় প্রভাব ফেলে। বিশেষজ্ঞদের মতে এক্ষেত্রে স্বস্তির বিষয় একটাই, মানুষ থেকে মানুষের শরীরে এই রোগ সংক্রমিত হয় না। এমনকি, কোনও প্রাণীর মধ্যেও ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ ছড়ায় না।
এই রোগের উপসর্গ কী?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হঠাৎ করে অক্সিজেনের চাহিদা বেড়ে যাওয়া এই ছত্রাকত সংক্রমণের অন্য়তম লক্ষণ। এছাড়া মুখ অসাড় হয়ে যাওয়া, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, কাশি, জ্বর, মাথা যন্ত্রণার মতো উপসর্গ তো রয়েছেই। এমনকী, শরীরের কোথাও আঘাত লাগলে সেখানেও সংক্রমণ হতে পারে। সেখান থেকে দ্রুত শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে সংক্রমণ।
রোগ প্রতিরোধের উপায়?
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রোগের চিকিৎসার জন্য় অ্যাম্ফোটেরসিন-বি ইঞ্জেকশন প্রয়োজন। তবে তা জোগার করা বেশ কষ্টদায়ক এবং ব্যয়বহুলও। ইঞ্জেকশন প্রতি দাম পড়তে পারে প্রায় ৯ হাজার টাকা। মূলত ২১ দিন ধরে রোগীকে এই ধরনের ইঞ্জেকশন দিতে হবে। জানা গিয়েছে, গুজরাত, দিল্লি এবং মহারাষ্ট্রে 'মিউকোরমাইকোসিস'-এর সংক্রমণের হার বর্তমানে সবচেয়ে বেশি। মহারাষ্ট্রে এখনও পর্যন্ত মিউকোরমাইকোসিসে আক্রান্ত হয়ে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুজরাত সরকারের তরফে ইতিমধ্য়ে ৫ হাজার অ্যাম্ফোটেরসিন-বি (Amphotericin-B) ইঞ্জেকশনেরও অর্ডার দেওয়া হয়েছে।