মাতৃগর্ভেও করোনার হাত থেকে সুরক্ষিত নয় শিশু! আতঙ্ক বাড়িয়ে প্রমাণ মিলল পুনের হাসপাতালে
এই দাবি যদি সত্যি হয়, তাহলে এটাই হল দেশের প্রথম মাতৃগর্ভে করোনা সংক্রমণের ঘটনা যা এখন চিন্তা বাড়িয়েছে বিশেষজ্ঞ মহলের।
নিজস্ব প্রতিবেদন: প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। সারা বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ১ কোটি ৬৯ লক্ষ ১১ হাজার ছাড়িয়েছে। এই ভাইরাসে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৬ লক্ষ ৬৩ হাজার ৮৪০ জনের। ভারতেও করোনা পরিস্থিতি ক্রমশ উদ্বেগজনক হচ্ছে। প্রতিদিনই ৪৭-৪৮ হাজার মানুষ নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছেন করোনায়। এই পরিস্থিতিতে আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে দিল পুনের একটি হাসপাতালে দাবি। ওই হাসপাতালের তরফে দাবি করা হয়েছে, মাতৃগর্ভস্ত শিশুর শরীরেও করোনা সংক্রমিত হয়েছে! এই দাবি যদি সত্যি হয়, তাহলে এটাই হল দেশের প্রথম মাতৃগর্ভে করোনা সংক্রমণের ঘটনা।
এর আগে পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, মাতৃগর্ভে বা জঠরে থাকা ভ্রূণের বা শিশুর করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তেমন একটা নেই। এই প্রসঙ্গে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পেরিনেটাল এপিডেমিওলজিস্ট ডঃ খ্রিশ্চান চেম্বার্স বলেছিলেন, গর্ভবতী মায়ের জরায়ুর প্লাসেন্টা তাঁর শরীরে অ্যান্টিবডি হিসাবে কাজ করে এবং ভ্রূণকে সুরক্ষিত রাখে। তাই করোনা-সংক্রমণে ভ্রূণের বা শিশুর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা কমই থাকে। তবে এই ধারণাকে ভ্রান্ত প্রমাণ করে দিতে পারে পুনের ওই হাসপাতালে সাম্প্রতিক দাবি।
পুনের সাসুন জেনারেল হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডঃ আরতি কিনিকার জানিয়েছেন, গত মে মাসে এক সন্তানসম্ভবা মহিলা হাসপাতালে ভর্তি হন। ICMR-এর নির্দেশিকা মেনে ওই মহিলার করোনা পরীক্ষা করা হয়। সেই পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসে। কিন্তু পরবর্তীতে তাঁর সদ্যোজাত শিশুকন্যার নাকের থেকে শ্লেষ্মার নুমনার পরীক্ষা করে দেখা যায় ফল পজিটিভ। এর পর অন্য একটি ওয়ার্ডে ওই শিশুকন্যাকে স্থানান্তরিত করা হয়। দু’সপ্তাহ চিকিৎসার পরে শিশুটি সুস্থ হয়ে ওঠে। ডঃ কিনিকার জানান, পরীক্ষা করে দেখার পর তাঁরা নিশ্চিত যে, এ ক্ষেত্রে ভার্টিকাল ট্রান্সমিশন ঘটেছে। বলে রাখা ভাল, মায়ের নাড়ি বা প্লাসেন্টার মাধ্যমে মাতৃগর্ভে বা জঠরে থাকা ভ্রূণের বা শিশুর মধ্যে সংক্রমণের ঘটনাকে চিকিৎসাশাস্ত্রের পরিভাষায় ‘ভার্টিকাল ট্রান্সমিশন’ বলা হয়।
আরও পড়ুন: মানুষের শরীরে কতদিন পর্যন্ত সক্রিয় থাকতে পারে করোনা? পুরনো সব ধারণা বদলে দিল নতুন গবেষণা
ডঃ কিনিকার বলেন, “আমরা তিন সপ্তাহ পরে ফের একবার ওই শিশু ও তার মায়ের অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করেছি। উভয়ের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। তবে মায়ের ক্ষেত্রে বেশি এবং শিশুটির শরীরে কম অ্যান্টিবডি পাওয়া গিয়েছে।” সুরতাং, পুনের সাসুন জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকদের এই দাবি যদি সত্যি হয়, তাহলে মাতৃগর্ভেও যে করোনার হাত থেকে ভ্রূণ বা শিশু সুরক্ষিত নয়, এ ক্ষেত্রে তারই ইঙ্গিত মিলছে! আর এই দাবিই এখন চিন্তা বাড়িয়েছে বিশেষজ্ঞ মহলের।