যেখানে সূর্যালোক দীর্ঘস্থায়ী, সেখানে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিও বেশি! দাবি বিজ্ঞানীদের
গবেষকরা জানান, ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং SARS-এর ক্ষেত্রে যেমন তাপমাত্রা এবং বাতাসের আর্দ্রতার একটা প্রভাব পড়ে, COVID-19-এর ক্ষেত্রে তেমনটা দেখা যায়নি।
নিজস্ব প্রতিবেদন: মাস খানেক আগে একটা ধারণা নেট দুনিয়ায় বেশ ‘ভাইরাল’ হয়েছিল। ধারণাটা হল, সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মী নাকি করোনাভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম। পরে অবশ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO-সহ একাধিক বিজ্ঞানী জানিয়ে দেন, এ ধারণা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত। করোনাভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করা তো দূরের কথা, সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মী মানুষের ত্বকের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর!
গরম এবং বাতাসের আর্দ্রতা বাড়তে কমবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের গতি, এমন ধারণাও মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছিল একটা সময়। পরবর্তীকালে সে ধারণাও ভুল বলে প্রমাণিত হয়েছে। সূর্যের করোনা-রোধী ক্ষমতা নয়, সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘক্ষণ সূর্যের আলোয় থাকলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে!
সম্প্রতি জিওগ্রাফিক্যাল অ্যানালিসিস (Geographical Analysis) নামের একটি পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন কানাডার বিজ্ঞানীরা। কানাডার ম্যাক মাস্টার ইউনিভার্সিটির (McMaster University) গবেষকদের দাবি, দীর্ঘক্ষণ সূর্যের আলোয় থাকার ইচ্ছায় মানুষ বেশি করে বাইরে বেরবেন। ফলে ভাইরাসের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যাবে। কানাডার ম্যাক মাস্টার ইউনিভার্সিটিতে সম্প্রতি এই গবেষণা হয়েছে। তাঁদের দাবি, গবেষণায় দেখা গিয়েছে যেখানে তাপমাত্রা বা আর্দ্রতা অত্যন্ত বেশি, সেখানে ভাইরাসের সংক্রমণ ক্ষমতা অন্তত ৩ শতাংশ কম। তবে সূর্যের আলোয় বেশিক্ষণ থাকলে সংক্রমণের ঝুঁকিও বেড়ে যায়।
আরও পড়ুন: ভারতেই শুরু হচ্ছে অক্সফোর্ডের করোনার টিকা উৎপাদনের কাজ! বরাদ্দ ৭৫০ কোটি টাকা
ম্যাক মাস্টার ইউনিভার্সিটির গবেষকরা জানান, ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং SARS-এর ক্ষেত্রে যেমন তাপমাত্রা এবং বাতাসের আর্দ্রতার একটা প্রভাব পড়ে, COVID-19-এর ক্ষেত্রে তেমনটা দেখা যায়নি। এই গবেষক দলের অন্যতম সদস্য অ্যান্তোনিয় পায়েজ (Antonio Paez) জানান, স্পেনের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন তাপমাত্রা ও আর্দ্রতায় প্রায় ২ লক্ষ ৭০ হাজার করোনা আক্রান্তকে পর্যবেক্ষণ করার পর তাঁরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন। অ্যান্তোনিয় পায়েজের ব্যাখ্যা হল, যেখানে সূর্যালোক দীর্ঘস্থায়ী, সেখানে মানুষের দিবালোকে বাইরে বেরনোর প্রয়োজন ও প্রবনতাও বেশি। তাই তাঁদের অনুমান, শুধু সূর্যালোক নয়, ভাইরাসের সংক্রমণের গতি বৃদ্ধি মানুষের আচরণের সঙ্গেও সম্পর্কিত হতে পারে।