অফিসে বসে কাজ? তাহলে আপনিও এই ভয়ঙ্কর সমস্যার দিকে এগোচ্ছেন

অফিসে অনেকক্ষণ বসে একজায়গায় কাজ করতে হয়? কিম্বা কম্পিউটারের সামনে ঠায় বসে থাকা? তাহলে সাবধান। আপনার কিন্তু অ্যাকিউট স্লিপ ডিস্কের সম্ভাবনা সবথেকে বেশি। তবে ভয়ের কিছু নেই। কয়েকটি সাবধানতা মেনে চললেই এড়ানো যায় এই রোগ।

Updated By: Aug 26, 2016, 02:41 PM IST
অফিসে বসে কাজ? তাহলে আপনিও এই ভয়ঙ্কর সমস্যার দিকে এগোচ্ছেন
ছবিটি প্রতীকী

ওয়েব ডেস্ক : অফিসে অনেকক্ষণ বসে একজায়গায় কাজ করতে হয়? কিম্বা কম্পিউটারের সামনে ঠায় বসে থাকা? তাহলে সাবধান। আপনার কিন্তু অ্যাকিউট স্লিপ ডিস্কের সম্ভাবনা সবথেকে বেশি। তবে ভয়ের কিছু নেই। কয়েকটি সাবধানতা মেনে চললেই এড়ানো যায় এই রোগ।

কোমরের উপর ক্রমাগত ভুলভাবে অতিরিক্ত চাপ পড়তে পড়তে এক সময় কোমরের কাছে মেরদণ্ডের দুই হাড়ের মাঝে বসে থাকা নরম কুশন বা ডিস্ক, স্লিপ করে তার পেছনে থাকা নার্ভের ওপর চাপ দিতেই শুরু হয়। কারেন্ট লাগার মতো ব্যথা। দেখা দেয় অ্যাকিউট ডিক্স প্রোল্যাপস। অনেক সময় নীচু হয়ে হ্যাঁচকা টানে কিছু সরাতে গিয়ে বা না জেনে বুঝে কোনও ব্যায়াম করতে গিয়ে সমস্যা হতে পারে

কেন হয় স্লিপ ডিস্ক?

সমস্যা হয় ব্যায়াম না করার অভ্যেস ও ওবেসিটি থাকলে। ১৫-৪০ বছর বয়সেই অ্যাকিউট প্রোল্যাপস হয় বেশি। ৫০-৮০ বছর বয়সে বেশি হয় ক্রনিক ডিস্ক প্রোল্যাপস। ক্রনিক ডিস্ক প্রোল্যাপসের ব্যথা খুব বেশি হয় না। পায়ে ঝিনঝিন অবশভাব থাকতে পারে। ডিস্ক প্রোল্যাপসের সঙ্গে মেরুদণ্ডের হাড় ক্ষয়ে কিছুটা এবড়ো খেবড়ো হয়ে সমস্যা বাড়ায়। কখনও নড়বড়ে হয়ে যায় মেরুদণ্ড। হাঁটতে গেলে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে

অ্যাকিউট প্রোল্যাপসের চিকিত্‍সা

অ্যাকিউট ডিস্ক প্রোল্যাপসে প্রথম কাজ, ২-৪ সপ্তাহ বিছানায় শুয়ে থাকা। সঙ্গে গরম সেঁক, ডাক্তারের পরামর্শ মতো অল্প কিছুদিনের জন্য ব্যথার ওষুধ, গাবা পেন্টিন জাতীয় ওষুধ দেড় থেকে তিন মাস খেতে হবে। ব্যথা কমার পর ফিজিও থেরাপি করাতে হবে। এক্সরে করে দেখতে হয় সমস্যা কতখানি। ৬ থেকে ৩ মাস লাম্বার বেল্ট পরতে হতে পারে। দিনে ঘণ্টা আটেক মতো বেল্ট পরার দরকার হয়। নিয়মিত পেশি সবল করার মতো ব্যায়াম করতে হয়। এতেই ৯০ শতাংশ সমস্যা কমে যায়। যদি তীব্র ব্যথার সঙ্গে পাও কমজোরি লাগে, আঙুল নাড়ানো যাচ্ছে না বা পায়ের উপরে তোলা যাচ্ছে না, এমন হয়, এমআরআই স্ক্যান করে অবস্থার পর্যালোচনা করা দরকার। সামান্য দু-এক ক্ষেত্রে ইউরিন বন্ধ হয়ে গেলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে যায়। এসব ক্ষেত্রে তড়িঘড়ি অপারেশনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়।

অপারেশন

অ্যাকিউট ডিস্ক প্রোল্যাপসের অপারেশনে খুব একটা কাটাছেঁড়া হয় না। কখনও মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে, কখনও ফুটো করে এন্ডোস্কোপের সাহায্যে অপারেশন করা হয়। পরের দিনই রোগীকে হাঁটানো হয়। তিন দিনে ছুটি দেওয়া হয়। যেটুকু ডিস্ক বা কুশন হাড়ের খাঁচার বাইরে বেরিয়ে এসে নার্ভে চাপ দিচ্ছে তাকে কেটে চাপমুক্ত করা। ছুটি দেওয়ার সময় বিশেষভাবে তৈরি লাম্বার বেল্ট পরিয়ে দেওয়া হয়। দেড় মাস বেল্ট পরে থাকতে হয়, যাতে অপারেশনের জায়গায় বেশি চাপ না পড়ে

রোগ ঠেকাতে কী করবেন?

বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো ডায়েটিং ও ব্যায়াম করে ওজন ও বিশেষ করে পেট ও কোমরের মাপ ঠিক রাখুন। কোমরের ব্যায়াম করুন। কোমর ঝুঁকিয়ে কাজ করবেন না। দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করতে হলে কোমরের কাছে সাপোর্ট দেওয়া চেয়ারে সোজা হয়ে বসুন। কোমরের কাছে কুশনের সাপোর্ট। রেখে সাধারণ চেয়ারেও বসতে পারেন। মাঝে মাঝে দাঁড়িয়ে একটু হাঁটাচলা করে বা ব্যাক স্ট্রেচিং করে তারপর আবার বসলে সমস্যা  কম হবে। হাঁটুন কোমর সোজা রেখে। আধশোয়া হয়ে বা শুয়ে বইপড়া,টিভি দেখা যত কমানো যায় তত ভালো। অতিরিক্ত ধূমপান আর মদ্যপানেও হাড় পাতলা হয়। মধ্য বয়সে যা বিপদের কারণ হতে পারে। এই কয়েকটি বিষয়ে একটু সাবধান থাকলেই স্লিপ ডিস্কের সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়

.