কয়েক লক্ষ টাকা দিলেই দত্তক নিতে পারবেন শিশু! টাকার বিনিময়ে শিশু বিকিকিনির বেআইনি ব্যবসার প্রমাণ ২৪ ঘণ্টার হাতে
সন্তান চাই? দত্তক নিতে চান? তাও আবার খুব তাড়াতাড়ি!...সব হয়ে যাবে। লাগবে কয়েক লক্ষ টাকা। ব্যস! সাত দিনের মধ্যে শিশু আপনার কোলে। কোন পথে চলছে এই বেআইনি শিশু ব্যবসা? কারা জড়িয়ে? কতদূরই বা ছড়িয়ে এর জাল? তারই অন্তর্তদন্তে ২৪ ঘণ্টা।
ঘর আলো করে সন্তান, কে না চায়? কিন্তু শত চেষ্টাতেও যাদের এই স্বপ্ন পূরণ হয় না! কী করবেন তাঁরা? একটি পথ, দত্তক নেওয়া। কিন্তু তা কি এতই সহজ? দুর্নীতির জাল ছড়িয়ে রন্ধ্রে রন্ধ্রে। স্টিং অপারেশনে নেমে ২৪ ঘণ্টার হাতে এসেছে এমনই অজস্র প্রমাণ।
নিয়ম বলে, শিশু দত্তক নিতে হলে সবার আগে যেতে হবে সরকারি লাইসেন্সপ্রাপ্ত কোনও স্টেট অ্যাডপশন এজেন্সির কাছে। এমনই এক সংস্থা স্কট লেন পভার্টি এরাডিকেশন এজেন্সির ওয়েবসাইট দেখে তাঁদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে ২৪ ঘণ্টা। সরকারি সংস্থাই জানিয়ে দেয়, তাদের হাতে এখন দীর্ঘ তালিকা। ফলে দত্তক পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতেই হবে। কিন্তু না করতে চাইলে? বিকল্প পথ বাতলে দিলেন এই সরকারি অফিসারই।
মলয় চক্রবর্তীর দেওয়া ফোন নম্বরে যোগাযোগ করে ২৪ ঘণ্টা। কথামতো নির্দিষ্ট দিনে সোদপুরে পৌছে গিয়েছিল ২৪ ঘণ্টা। কথা হল। আশ্বাসও মিলল, যেমন বাচ্চা চান- যত তাড়াতাড়ি চান-পেয়ে যাবেন। টাকা দেবেন। শিশু নেবেন। বেআইনি পথের এটাই সহজ হিসেব। টাকা দিতে হবে ডোনেশন হিসেবে। এবং পুরোটাই ক্যাশ। চেক হলে চলবে না।
চব্বিশ ঘণ্টার স্টিং অপারেশনে তোলপাড় গোটা রাজ্য। খবর সম্প্রচারের পরই তড়িঘড়ি গড়া হয়েছে তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটি, কৈফিয়ত তলব-এসব তো হল। কিন্তু গোড়াতেই যে গলদ, যে দুর্নীতির বাসা তা কীভাবে দূর হবে? সাধের শিশুকে তাড়াতাড়ি কোলে পেতে বহুক্ষেত্রে বাবা-মায়েরাও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। টাকার বিনিময়ে শিশু কিনতে চান তাঁরাও। এ মনোভাবেও কি বদল জরুরি নয়!