দেবারতি ঘোষ : চারদিন পর অবশেষে পুলিসের জালে ভবানীপুর থাপ্পড়কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত। আজ নিজেই ভবানীপুর থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন তড়িত্‍ শিকদার। তবে ক্যামেরার সামনে কোনও কথা বলতে রাজি হননি তড়িৎবাবু। সেদিন ঠিক কী ঘটেছিল, তা নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি তাঁর আইনজীবীও। অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার গাড়ির জোরে হর্ন বাজানোর প্রতিবাদ করেন রমেশ বহেল। আর তখনই তাঁকে থাপ্পড় মারেন তড়িত্‍বাবু। যার জেরে ফুটপাতে পড়ে মৃত্যু হয় প্রৌঢ়ের।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

সেদিন ঘটনার পর থেকেই বেপাত্তা হয়ে যান অভিযুক্ত তড়িত্‍ শিকদার। অভিযুক্ত প্রভাবশালী! মাথায় কোনও বড় হাত থাকার কারণেই অভিযুক্তের নাগাল মিলছে না! প্রভাবশালী হওয়াতেই পুলিস তাঁকে গ্রেফতার করছে না! এমন অভিযোগ ওঠে। শেষপর্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনার চারদিন পর থানায় এসে আত্মসমপর্ণ করলেন তড়িত্‍ শিকদার। আজ সকাল ১১টা নাগাদ আলিপুর কোর্টের সতীর্থ আইনজীবীদের সঙ্গে থানায় আসেন তড়িৎ শিকদার। তবে তিনি সেদিন ঘটনাস্থলে ছিলেন কিনা? তিনি মারধর করেছিলেন কিনা? তা নিয়ে তড়িৎ শিকদারের আইনজীবীদের দাবি, মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হচ্ছে। পুলিসি তদন্তেই আসল ঘটনা সামনে আসবে।



কারওয়া চৌথের উপোস করেছিলেন স্ত্রী। স্বামীর ফেরার অপেক্ষায় বসেছিলেন তিনি। কিন্তু স্বামী আর ঘরে ফেরেননি। স্বামীর দীর্ঘায়ু কামনার দিনই আসে তাঁর মৃত্যু সংবাদ। জানা যায়, গাড়ির জোরে হর্ন বাজানো নিয়ে বচসাতেই ৬৫ বছরের রমেশ বহেলকে চড় মারেন অভিযুক্ত। তাতেই মৃত্যু হয় তাঁর। গাড়িতে উঠতে দেরি করেছিলেন রমেশ বহেল। তখন লাগাতার পিছন থেকে গাড়ির হর্ন বাজাচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। তার প্রতিবাদ করেছিলেন রমেশবাবু। আর তা থেকেই বচসা সূত্রপাত। যা চড়থাপ্পড় পর্যন্ত গড়ায়। দিনেদুপুরে দক্ষিণ কলকাতার জনবহুল এলাকায় কার্যত 'খুন' হয়ে যান এক প্রৌঢ়।


যদিও তড়িৎ শিকদারের আইনজীবীদের দাবি, সেদিন ছেলেকে স্কুল থেকে আনতে যাচ্ছিলেন তড়িৎ। সেইসময় রমেশ বহেল রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন। হর্ন দেন তড়িৎ শিকদার। এরপরই হর্ন দেওয়ার জন্য তড়িৎ শিকদারের উদ্দেশে অশ্লীল ভাষা বলেন রমেশ। সেইসময়ই ধাক্কাধাক্কিতে পড়ে গিয়ে মাথায় চোট পান রমেশ। তাতে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। মারধর করা হয়নি। অসাবধানতায় প্রাণ হারিয়েছেন রমেশ বহেল। রবিবার রাতে বাড়িতে পুলিশ যাওয়ায় তাঁরা সব ঘটনার কথা জানতে পেরেছেন। আর তারপরই থানায় এসে আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নেন তড়িৎ শিকদার।


আরও পড়ুন, মোদীর সঙ্গে অভিজিতের সাক্ষাৎ নিয়ে সতর্ক করলেন মা নির্মলাদেবী, জানালেন ছেলের জন্য কী রাঁধবেন


এদিকে এই ঘটনার পর থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিল পরিবার। কিন্তু, পুলিসের বিরুদ্ধে তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অভিযুক্তের গাড়ির নম্বর পুলিসের হাতে আসে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে সামনে আসে, দেহে আঘাতের চিহ্ন থাকার কথা। কিন্তু তারপর ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও অধরা ছিল অভিযুক্ত। কেন পুলিস অভিযুক্তকে গ্রেফতার করছে না? প্রশ্নের মুখে পড়ে ভবানীপুর থানার পুলিসের ভূমিকা। শেষমেশ আজ আত্মসমর্পণ করলেন অভিযুক্ত তড়িৎ শিকদার।


তবে আতঙ্ক কাটছে না বহেল পরিবারের। প্রশাসনের উপর আস্থা রাখলেও নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন বহেল পরিবারের সদস্যরা। নিরাপত্তার দাবি করেছেন মৃতের স্ত্রী ঋতু বহেল। তিনি বলেন, ৪ দিন গা-ঢাকা দিয়ে থেকে এখন আত্মসমর্পণ করেছেন অভিযুক্ত। পুলিস ধরতে পারেনি। পাড়া-প্রতিবেশীরা সবাই বলছেন অভিযুক্ত প্রভাবশালী। তাই সব গুছিয়ে তারপর পুলিসের কাছে গিয়েছেন।