সুতপা সেন: ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে উত্তর সিকিম। বুধবার ভোরে মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে লোনক হ্রদ ফেটে হুড়মুড়িয়ে জল নেমে আসে তিস্তায়। আচমকাই হড়পা বান আসায় তিস্তার জলস্তর বেড়ে যায়। আর তাতেই ভেসে নিখোঁজ হয়ে যান সেনার ২৩ জওয়ান। সিকিম ও বাংলার দার্জিলিং পেরিয়ে তিস্তা জলপাইগুড়ি জেলায় সমতলে প্রবেশ করছে। ফলে চরম আতঙ্কে দিন কাটছে উত্তরবঙ্গবাসীর। উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন, Rujira Banerjee: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রথমবার তলব ইডির


সূত্রের খবর, লাচেন উপত্যকায় তিস্তা নদীতে আকস্মিক বন্যা এসে যাওয়ায় বেশ কয়েকটি সেনা ছাউনি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চুংথাং বাঁধ থেকে জল বেরিয়ে আসায় আচমকা জলের স্তর ১৫ থেকে ২০ ফুট পর্যন্ত উঁচু হয়ে গেছে। ঘটনার খবর পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবিলম্বে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে জরুরি নির্দেশ দিয়েছেন। তড়িঘড়ি উত্তরবঙ্গের পথে রওনা হয়ে গিয়েছেন মন্ত্রিসভার উচ্চপদস্থ সদস্য এবং আইএএস আধিকারিকেরা।


এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'রাত ৩টের সময় খবর পাই সিকিমে একটা ক্লাউড ব্রাস্ট হয়েছে। সেই জলটা তিস্তা নদীতে এসে পড়ে এবং ভয়াবহ অবস্থা। কালিম্পং প্রায় ডিসকানেক্টেড। সিকিমের মুখ্য সচিবের সঙ্গে কথা হয়েছে আমাদের মুখ্য সচিবের। মানুষকে রেসকিউ করা শুরু হয়েছে। এর ফলে কালিম্পং, দার্জিলিং বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। তিস্তা ব্যারেজ মেরামতির কাজ শুরু হবে জল কমার পর। দার্জিলিং, কোচবিহার, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি ক্ষতিগ্রস্থ। আমরা আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তিস্তা বাঁধ ভেঙ্গে পড়েছে। সিকিমের জলটা এসে পড়েছে তিস্তাতে।'


উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি দক্ষিণ বঙ্গের ক্ষেত্রে ডিভিসির জল ছাড়া হয়েছে। ডিভিসি বলেছে জল না ছাড়লে ব্রাস্ট হয়ে যাবে। ১ লক্ষ ৭০ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছে।  উদয়নারায়নপুর, খানাকুল-সহ বেশ কিছু অঞ্চল প্লাবিত। পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ বেশ কিছু অঞ্চল কিন্তু যথেষ্ট পরিমাণে জলমগ্ন অবস্থায়। ন্যাশনাল ডিজিস্টারকে অ্যালার্ট করা হয়েছে। জনপ্রতিনিধিরা এলাকায় থাকবেন মানুষের পাশে। সব জেলা মিলিয়ে প্রায় দশ হাজার মানুষকে আমরা নিরাপদ জায়গায় সরিয়েছি। মুকুটমণিপুরে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার অবস্থা।


উচ্চ স্তরের একটা একটা টিম পাঠানো হচ্ছে যেখানে বিভিন্ন উচ্চপদস্থ অফিসাররা থাকবেন। ডিজাস্টার সেক্রেটারি, পি ডব্লিউ ডি সেক্রেটারি, পাওয়ার ডিপার্টমেন্ট সমস্ত ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ঝাড়খণ্ডের জল বেশি হলে আমাদের বিভিন্ন অঞ্চল ডুবে যায়। বৃষ্টি বাড়লে সমস্যা বাড়ে। আমরা তিনটে বডি পেয়েছি। বিভিন্ন দপ্তরের যারা সেক্রেটারি রয়েছেন উচ্চ পদস্থ অফিসারদের  অ্যালার্ট করেছি। অনেক ক্ষেত্রে এই বৃষ্টির সময় লাইটের পোস্ট পড়ে যায় বিদ্যুৎপৃষ্ট হতে পারে এদিকে একটু খেয়াল রাখবেন। একশো দিনের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে তা সত্ত্বেও আমরা চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। একটা ২৪ ঘন্টার কন্ট্রোল রুম খোলা হবে, যে কোন মানুষ সেখানে তাদের অভাব অভিযোগ জানাতে পারেন সাহায্য চাইতে পারেন।


মমতা মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় রক্ষার জন্য। যাতে উদ্ধারকাজে রাজ্যের তরফে সমস্ত রকম সহায়তা করা যায়। তিস্তা সিকিম থেকে নেমে এসেছে উত্তরবঙ্গে। সেখানে যাতে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে না যায় সে জন্যও প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কালিম্পং, দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ির নীচু এলাকা থেকে মানুষকে সরানোর জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশও দেওয়া হয়েছে নবান্নের তরফ থেকে।



আরও পড়ুন, Abhishek Banerjee: নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডি-র নিশানায় পুরো পরিবারই, সোমবার ডাক অভিষেককে


(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)