টিকাকাণ্ডে জামিনের আবেদন খারিজ, দেবাঞ্জনকে ফের পুলিসি হেফাজতে পাঠাল আদালত
`কিসের ভিত্তিতে খুনের চেষ্টা ধারায় মামলা`?, প্রশ্ন আইনজীবীর।
নিজস্ব প্রতিবেদন: টিকাকাণ্ডের প্রতিবাদে প্রতিবাদে বিজেপির পুরসভার অভিযানকে ঘিরে যেদিন ধুন্ধুমারকাণ্ড ঘটল শহরে, সেদিন আদালতে অভিযুক্তের জামিনের দাবিতে জোরালো সওয়াল করলেন আইনজীবী। প্রশ্ন তুললেন, 'যাঁরা ভ্যাকসিন নিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কেউ কি অসুস্থ হয়েছেন? তাহলে কিসের ভিত্তিতে খুনের চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হল'? শেষপর্যন্ত অবশ্য জামিনের আবেদন খারিজ করে দিল আলিপুর আদালত। দেবাঞ্জন দেবকে ফের ৭ জুলাই পর্যন্ত পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দিলেন বিচারক।
টিকাকাণ্ডে সাত দিন পুলিসি হেফাজতে ছিল দেবাঞ্জন। গ্রেফতারির পর গত মঙ্গলবার তাকে তোলা হয়েছিল আলিপুর আদালতে। তখন অভিযুক্তের আইনজীবী বলেছিলেন, বেশ কয়েক দিন ধরেই মানসিক রোগে আক্রান্ত। তার চিকিৎসার প্রয়োজন। সে কেন এরকম কাজ করল, তা খতিয়ে দেখার জন্য মনোবিদের পরামর্শ নেওয়ার দরকার। সাতদিনের পুলিসি হেফাজতের মেয়াদ শেষে এদিন ফের আদালতে পেশ করা হয় অভিযুক্তকে। এবার আর স্রেফ মানসিক অসুস্থতাই নয়, রীতিমতো আইনি যুক্ত দেখিয়ে জামিনের পক্ষে সওয়াল করলেন আইনজীবী। কিন্তু জামিন পেল না দেবাঞ্জন। আপাতত ৭ জুলাই পর্যন্ত পুলিসি হেফাজতেই থাকতে হবে প্রতারণাকাণ্ডের নায়ককে।
আরও পড়ুন: পুরসভার ভ্যাকসিনের ভাণ্ডারে টান, মঙ্গলবার থেকে দ্বিতীয় ডোজে অগ্রাধিকার
টিকাকাণ্ডে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিসকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্রেফ জালিয়াতি নয়, অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেবের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই খুনের চেষ্টার ধারায়ও মামলা দায়ের করেছে পুলিস। এদিন আদালতে তার আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন, 'আমার দেখেছি, অনেক জায়গায় ভ্যাকসিন নেওয়ার পর মানুষ মারা গিয়েছেন। অনেকের আবার শরীরে চুম্বকের মতো ধাতব জিনিস আটকে যাচ্ছে। কিন্তু দেবাঞ্জনের কাছ থেকে যাঁরা ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে কেউ মারা যাননি। কেউ অসুস্থও হননি। কেউ কি অভিযোগ করেছেন? কীসের ভিত্তিতে ২৭৪, ২৭৫, ২৭৬, ১৮৪ ধারা যুক্ত করা হল'? আরও বলেন, 'আমি আগেও বলেছি, আমার মক্কেল মানসিক রোগী। ২০১৮ সালে সিঁথির একটি ক্নিনিকে দেখাত। কিন্তু পয়সার অভাবে সেভাবে চিকিৎসা করাতে পারেনি'।
আরও পড়ুন: একে দেবাঞ্জন কাণ্ড, সঙ্গে দোসর BJP-র কর্মসূচি, KMC-তে এসে নাজেহাল সাধারণ মানুষ
এদিকে টিকাকাণ্ডের প্রতিবাদে কলকাতায় পথে নামল বিজেপি। এদিন মুরলীধর সেন স্ট্রিট দলের পার্টি অফিস থেকে মিছিল করে পুরসভার দিকে যাচ্ছিলেন দলের কর্মী-সমর্থকরা। চাঁদনিচক মেট্রো স্টেশনের কাছে ব্যারিকেড করে মিছিল আটকাতে গেলে, পুলিসে সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। শেষপর্যন্ত অবশ্য মিছিলকে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিস। ঘটনাকে কেন্দ্র ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউ চত্বরে।