মেয়াদ বাড়ল কলকাতা পুরসভার কেয়ারটেকার বোর্ডের, হাইকোর্টের নির্দেশে আপাতত স্বস্তি সরকারের
তবে ডিভিশন বেঞ্চের সুস্পষ্ট মত, অর্ডিন্যান্স করে এই সিদ্ধান্ত নিলে ভালো হত।
নিজস্ব প্রতিবেদন : কলকাতা পুরনিগমের প্রশাসক বোর্ড নিয়ে আপাতত স্বস্তি রাজ্য সরকারের। 'কেয়ারটেকার' প্রশাসক মণ্ডলিকে আপাতত সায় দিল ডিভিশন বেঞ্চও। ২০ জুলাই পর্যন্ত এই মণ্ডলির মেয়াদ বাড়ানো হল। এদিন বিচারপতি পি মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দেয়।
তবে ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণও সুস্পষ্ট। কেয়ারটেকার বোর্ডের মেয়াদ বাড়ানোর পাশাপাশি ডিভিশন বেঞ্চ নিজেদের অবস্থান সুস্পষ্ট করে আরও জানিয়েছে, অর্ডিন্যান্স করে এই সিদ্ধান্ত নিলে ভালো হত। উল্লেখ্য, এর আগে সিঙ্গল বেঞ্চ রাজ্য সরকারের ঘোষিত প্রশাসক বোর্ডকে এক মাসের কেয়ারটেকার হিসেবে অন্তর্বর্তী নির্দেশ দেয়। বিশ্বমারী করোনার কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের ঘোষিত প্রশাসক বোর্ডকে এক মাস কাজ করার অনুমতি দেয়। এক মাস পর মামলার ফের শুনানি হবে বলে জানায় সিঙ্গল বেঞ্চ।
সিঙ্গল বেঞ্চের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেই ডিভিশন বেঞ্চে যান মামলাকারী শরৎ কুমার সিং। তাঁর আইনজীবী বিকাশ সিং আজকের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে জানান, "কলকাতা পুরসভার ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত বেআইনি। বিচারপতির এই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ।" তবে আইনজীবীদের মতে এই রায় আপাতত স্বস্তি দিল রাজ্য সরকারকে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার, ৭ মে, সন্ধ্যায় জরুরি ভিত্তিতে বসে আদালত। নজিরবিহীনভাবে সন্ধের পর মামলা শোনা হয়। সন্ধ্যা ৭টার পর শুনানি শুরু হয় বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের এজলাসে। ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে শুনানিতে যোগ দেন আইনজীবীরা। কিন্তু শুনানিতে রাজ্য সরকারের তরফে কেউ যোগ দেননি। শেষে অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়ে বিচারপতি সুব্রত তালুকদার জানান আপাতত এক মাসের জন্য 'কেয়ারটেকার বোর্ড' হিসেবে কাজ করবে প্রশাসক বোর্ড।
করোনার জেরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কলকাতা পুরসভার ইতিহাসে এই প্রথমবার প্রশাসক মণ্ডলি বসেছে। এখন কলকাতা পুরসভার আইন অনুযায়ী, প্রশাসক বসানো যায় না। প্রশাসক বসাতে গেলে অর্ডিন্যান্স এনে আইন সংশোধন করে তারপর বসাতে হত। কিন্তু করোনায় লকডাউনের জেরে এখন বিধানসভার অধিবেশন বসার প্রশ্ন নেই। এই অবস্থায় সংবিধানের ৬৩৪ ধারা উল্লেখ করে রিমুভ্যাল অফ ডিফিকাল্টিস অ্যাক্ট-এ প্রশাসক বসানোর কথা ঘোষণা করে রাজ্য।
বুধবার, ৬ মে, এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে ১৪ সদস্যের প্রশাসক বোর্ড ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। ফিরহাদ হাকিমকে মাথায় রেখেই সেই প্রশাসক বোর্ড গঠন করা হয়। কলকাতা পুরসভার এলাকার অন্তর্গত অরবিন্দ সরণির বাসিন্দা শরৎ কুমার সিং নামে এক ব্যক্তি রাজ্য সরকারের কলকাতা পুরসভায় প্রশাসক বসানোর এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতেই হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় সিঙ্গল বেঞ্চের অন্তর্বর্তী নির্দেশের পর ৮ তারিখে কলকাতা পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম।
আরও পড়ুন, কলকাতার রাস্তায় নামছে সরকারি বাস-অ্যাপ ক্যাব, রয়েছে কিছু বিধিনিষেধও